যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের পর এবার ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কানাডা। সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে এই স্বীকৃতি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি।
বুধবার (৩০ জুলাই) রাজধানী অটোয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন কার্নি। এ নিয়ে গত কয়েক দিনে উন্নত সাত দেশের জোট জি-৭-এর তিন সদস্য ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানালো।
তবে এই স্বীকৃতি নির্ভর করছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাঙ্ক্ষিত সংস্কারের প্রতিশ্রুতির ওপর, উল্লেখ করে কার্নি জানান, ‘কানাডা ফিলিস্তিনে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা গড়ে তুলতে সহায়তা বাড়াবে এবং সেখানকার জনগণের একটি শান্তিপূর্ণ ও আশাব্যঞ্জক ভবিষ্যতের জন্য অবদান রাখবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েলের জন্যও একটি টেকসই শান্তির পথ গড়ে তুলতে হলে সেখানে একটি স্থিতিশীল ও কার্যকর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র থাকা অপরিহার্য।’
গাজায় চলমান সংকটের কথা উল্লেখ করে কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গাজার জনগণের দুর্ভোগ এখন অসহনীয় মাত্রায় পৌঁছেছে এবং প্রতিনিয়ত অবনতির দিকে যাচ্ছে।’ তিনি ইসরায়েলি সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘গাজায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় কানাডা এর নিন্দা জানাচ্ছে। ইসরায়েল সরকার এই সংকটকে অব্যাহতভাবে অবহেলা করেছে।’
তিনি অভিযোগ করেন, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে বেআইনি বসতি নির্মাণের গতি বাড়ানোর কারণে এবং সাম্প্রতিক আইন প্রণয়ন (যেমন—কনেসেটের পশ্চিম তীর দখল সংক্রান্ত ভোট) দুই-রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনাকে ‘গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ করেছে।
কার্নি জানান, কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনিতা আনন্দ এবং মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরা ফিলিস্তিনে প্রশাসনিক সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ফিলিস্তিনের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না।’ তার মতে, ‘একটি নিরস্ত্রীকৃত, শান্তিপূর্ণ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রই ভবিষ্যতের পথ।’
প্রধানমন্ত্রী জানান, কানাডা আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে মিলে একটি বাস্তবসম্মত শান্তি পরিকল্পনা তৈরি করছে, যাতে ফিলিস্তিনে সুশাসন ও নিরাপত্তা কাঠামো গড়ে তোলা যায় এবং গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া নিশ্চিত হয়। এই পরিকল্পনার লক্ষ্য হলো ‘ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি—দুই জনগোষ্ঠীর মর্যাদা, নিরাপত্তা এবং আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান জানিয়ে এক যৌথ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা।’
তিনি বলেন, “প্রতিটি মানুষের জন্য মৌলিক নিরাপত্তা একটি অবিচ্ছেদ্য অধিকার। কানাডা যে দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানকে সমর্থন করে তা দাঁড়িয়ে আছে, ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিরা যেন পারস্পরিক শান্তি ও নিরাপত্তার সঙ্গে পাশাপাশি বসবাস করতে পারে—এই প্রতিশ্রুতির ওপর।’



































