Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

সেরা দশের ছয়টিই ইউরোপের

অর্থনীতির প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচকে সেরা অবস্থান ধরে রেখেছে ইউরোপ। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচকে সেরা দশের মধ্যে ছয়টিই ইউরোপের দেশ। টানা ষষ্ঠ বছরের মতো বিশ্বে এক নম্বর স্থান ধরে রেখেছে সুইজারল্যান্ড। ১৪৪টি দেশের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে অনড় আছে সিঙ্গাপুর। টানা দ্বিতীয় বছরের মতো এগিয়ে তিন নম্বরে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর এএফপি, বিবিসি ও ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।

বুধবার ডব্লিউইএফ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, বরাবরের মতোই প্রতিযোগিতা সক্ষমতায় এগিয়ে আছে পশ্চিমা অর্থনীতিগুলো, বিশেষ করে ইউরোপ। তবে ১৮ জাতির মুদ্রাব্লক ইউরো অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা সক্ষমতার একটি অসম চিত্র দেখা যাচ্ছে।

chardike-ad

downloadপ্রতিবেদনে ডব্লিউইএফ বলে, প্রতিযোগিতা সক্ষমতায় অনেক এগিয়ে থাকা ইউরো অঞ্চলের পশ্চিম ও উত্তরের দেশগুলোর সঙ্গে পিছিয়ে থাকা দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলীয় দেশগুলোর ব্যবধানটি স্পষ্ট। প্রতিবেদনে পিছিয়ে থাকা অর্থনীতিগুলোর কাঠামোগত সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

ডব্লিউইএফের চোখে, প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হলো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, নীতি ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য উপাদানের একটি মিশ্রণ, যা নির্দিষ্ট দেশের উৎপাদনশীলতার স্তর নির্ধারণ করে। উচ্চশিক্ষা, উদ্ভাবন, প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তিগত উত্কর্ষ, অবকাঠামো, শ্রমবাজারের দক্ষতা, সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিবেশ, বাজারের আকার, আর্থিক বাজারের অবস্থা— এমন ১২টি বিষয় বিবেচনা করে দেশগুলোর প্রতিযোগিতা সক্ষমতার র্যাংকিং করা হয়।

সাত বছর আগে প্রতিযোগিতা সক্ষমতায় বিশ্বে এক নম্বরে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু আর্থিক বিপর্যয়ের পর সাত নম্বরে নেমে আসে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশটি। মন্দা উত্তরণের পর থেকে আবার উপসূচকগুলোয় উন্নতি করতে থাকে তারা। গত দুই বছর ধরে টানা উন্নতি দেখা যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিযোগিতা সক্ষমতায়। ডব্লিউইএফ বলে, প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো ও উদ্ভাবনে স্কোর বাড়ায় এবার দুই ধাপ এগিয়ে ৩ নম্বরে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র।

গত এক বছরে সবচেয়ে বেশি এগিয়েছে জাপান। তালিকার নয় নম্বর থেকে তিন ধাপ এগিয়ে এ বছর ছয় নম্বরে উঠে এসেছে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটি। এক ধাপ এগিয়ে নয় নম্বরে উঠে এসেছে ব্রিটেন।

অন্যদিকে দুই নম্বর অবস্থান ধরে রেখেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নগররাষ্ট্র সিঙ্গাপুর। সাত ও আট নম্বরে রয়েছে হংকং ও নেদারল্যান্ডস।

সেরা দশে থাকা দেশগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা সক্ষমতায় সবচেয়ে পিছিয়েছে সুইডেন। গত বছর ষষ্ঠ অবস্থানে থাকলেও এবার তাদের জায়গা হয়েছে ১০-এ। ফিনল্যান্ড ও জার্মানি উভয়ই এক ধাপ পিছিয়ে যথাক্রমে চার ও পাঁচ নম্বরে অবস্থান করছে।

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম বলছে, সূচকে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা দেশগুলো মেধা শনাক্ত, উন্নয়ন ও কাজে লাগানোয় সফল। পাশাপাশি উদ্ভাবনে তাদের সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগও বেশি।

সেরাদের তালিকার বাইরেও দেখা যাচ্ছে, মন্দায় ক্ষতিগ্রস্ত অনেক দেশ তাদের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কর্মসূচি বাস্তবায়নের পর প্রতিযোগিতা সক্ষমতায় ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। ইতালি ছাড়া ঋণ সংকটের শিকার দক্ষিণ ইউরোপের প্রতিটি দেশ তালিকায় অনেকটা এগিয়ে এসেছে। পর্তুগাল ৫১ থেকে ৩৬ নম্বরে উঠে এসেছে। গ্রিস ১০ ধাপ এগিয়ে ৮১তে। টানা দ্বিতীয়বারের মতো ৩৫ নম্বর স্থান ধরে রেখেছে স্পেন।

এগোয়নি ফ্রান্স ও ইতালি। দ্বিতীয় প্রান্তিকে আবারো মন্দাক্রান্ত ইতালি এবারের তালিকায় কেবল নিজেদের ৪৯ নম্বর স্থানটি ধরে রাখতে পেরেছে। ফ্রান্সের অবস্থান ২৩ নম্বরে অপরিবর্তিত আছে।

চীন ছাড়া প্রায় সব বিকাশমান অর্থনীতিই প্রতিযোগিতা সক্ষমতায় পিছিয়েছে। র্যাংকিংয়ে সবচেয়ে বেশি পিছিয়েছে ভারত। ৬০ থেকে ৭১-এ নেমে গেছে এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটি। তিন ধাপ নেমে ৫৬তে অবস্থান করছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তুরস্ক এক ধাপ নেমে ৪৩-এ, সৌদি আরব চার ধাপ নেমে ২৪-এ, নাইজেরিয়া সাত ধাপ নেমে ১২৭-এ অবস্থান করছে।

ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা অনেক বাড়লেও অর্থনীতির সার্বিক সক্ষমতায় ছয় ধাপ পিছিয়ে ৬১তে নেমে গেছে মেক্সিকো। এক ধাপ এগিয়ে ২৮-এ উঠে এসেছে দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন। ২০০৪ সাল থেকে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচক প্রকাশ করে আসছে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম। সূত্রঃ বণিকবার্তা।