
ফাইল ছবি
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীদের অনুকূলে আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স ও রিটেইনার (সশস্ত্র রক্ষী) নিয়োগ নীতিমালা-২০২৫ প্রকাশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অধিশাখা-৪ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনে সই করেন সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা এবং নির্বাচনকালীন সহিংসতা প্রতিরোধে রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীদের অনুকূলে আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স এবং রিটেইনার নিয়োগের লক্ষ্যে নিম্নরূপ নীতিমালা প্রণয়ন ও জারি করা হলো।
নীতিমালায় রিটেইনার বলতে রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা পদপ্রার্থীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত ও অনুমোদিত সশস্ত্র ব্যক্তিকে বোঝানো হয়েছে। একজন রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা পদপ্রার্থীর জন্য সর্বোচ্চ একজন রিটেইনার নিয়োগ করা যাবে এবং নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে রিটেইনারের দায়িত্বও শেষ হবে।
নীতিমালার মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য: সরকার এ নীতিমালা প্রণয়নের প্রধান কারণ হিসেবে প্রকৃত নিরাপত্তা ঝুঁকির ভিত্তিতে আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স দেওয়া ও রিটেইনার নিয়োগের অনুমোদনকে চিহ্নিত করেছে। এর মূল লক্ষ্য হলো- নির্বাচনকালীন সময়ে পেশিশক্তি ও সহিংসতা প্রদর্শন রোধ করা এবং জবাবদিহি ও আইনের শাসন নিশ্চিত করা।
লাইসেন্স-প্রাপ্তির যোগ্যতা:
ক. সরকার কর্তৃক স্বীকৃত রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হতে হবে।
খ. ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে।
গ. উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে গোয়েন্দা সংস্থা) কর্তৃক যাচাই করা নিরাপত্তাঝুঁকি বিদ্যমান থাকতে হবে।
ঘ. শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা থাকতে হবে।
ঙ. অস্ত্র সংরক্ষণের নিরাপদ ব্যবস্থা থাকতে হবে।
চ. এই নীতিমালার অধীনে লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে এ-সংক্রান্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারি করা অন্যান্য নীতিমালা ও বিধান প্রযোজ্য হবে। তবে ব্যক্তিগত আয়কর প্রদান সংক্রান্ত অংশ শিথিলযোগ্য হবে।
লাইসেন্সের মেয়াদ:
ক. এই নীতিমালার আওতায় অনুমোদন করা লাইসেন্সের মেয়াদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার তারিখ হতে পরবর্তী ১৫ দিন হবে। ওই সময়ের পর এরূপ লাইসেন্স স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল বলে গণ্য হবে। তবে শর্ত হচ্ছে, লাইসেন্সপ্রাপ্তির জন্য জারি করা নীতিমালার অন্যান্য শর্ত পূরণ হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই সাময়িক লাইসেন্সকে সাধারণ লাইসেন্সে রূপান্তর করতে পারবে।
খ. লাইসেন্সের মেয়াদ অতিক্রান্ত হলে বা লাইসেন্স বাতিল হওয়ার পরও কোনো লাইসেন্সধারী ওই লাইসেন্সের বিপরীতে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র নিজ দখলে রাখলে তার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন মোতাবেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গৃহীত হবে।
রিটেইনার নিয়োগের শর্ত:
ক. কেবল প্রকৃত নিরাপত্তাঝুঁকি থাকলে রিটেইনার নিয়োগ অনুমোদনযোগ্য হবে।
খ. রাজনৈতিক কার্যক্রমে প্রভাব বিস্তারের উদ্দেশ্যে কিংবা ভয়ভীতি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে রিটেইনার নিয়োগ করা বা অনুমোদন করা যাবে না।
গ. কোনো রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা পদপ্রার্থী লাইসেন্সপ্রাপ্তির যোগ্য হলে এবং তিনি আগ্নেয়াস্ত্র ক্রয়ে অসমর্থ হলে বা অনিচ্ছুক হলে বৈধ লাইসেন্সসহ আগ্নেয়াস্ত্র আছে, তা পরিচালনায় সক্ষম এবং কোনো রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা পদপ্রার্থীর রিটেইনার হতে ইচ্ছুক, এমন কোনো ব্যক্তিকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ রিটেইনার নিয়োগ করতে পারবেন। এরূপ নিয়োগ লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে।
রিটেইনারের যোগ্যতা:
ক) বাংলাদেশি নাগরিক ও ন্যূনতম বয়স ২৫ বছর;
খ) অপরাধমুক্ত ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রাপ্ত;
গ) আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত (সশস্ত্র বাহিনী বা বাংলাদেশ পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত সদস্যরা অগ্রাধিকার পাবেন);
ঘ) সরকারি হাসপাতাল হতে প্রাপ্ত মেডিকেল ফিটনেস সনদপ্রাপ্ত।



































