
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আবারও ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে বাঙালিদের নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এবার এর শিকার হয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে তাঁদের বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (১৪ আগস্ট) রাতে কলকাতার শিয়ালদা এলাকায়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কারমাইকেল হোস্টেলে থাকা এক ছাত্র মোবাইল কভার ও কিছু জিনিস কিনতে শিয়ালদা ব্রিজের নিচে একটি দোকানে যান। দাম নিয়ে কথা কাটাকাটির সময় দোকানদার হিন্দিতে গালাগাল করতে শুরু করেন। ওই ছাত্র বাংলায় উত্তর দিলে বিক্রেতা তাঁকে ‘বাংলাদেশি’ বলে অপমান করেন এবং হুমকি দেন।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ছাত্রটি হোস্টেলে ফিরে গিয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে আবার দোকানে যান। তখন আশপাশের আরও কয়েকজন ব্যবসায়ী তাঁদের ওপর চড়াও হয়। ধারালো অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চারজন ছাত্রকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। আহতদের দ্রুত কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরে ভুক্তভোগীরা মুচিপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এবং থানার বাইরে বসে বিক্ষোভ করেন। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
এক শিক্ষার্থী জানান, “শুধু বাংলায় কথা বলার কারণে আমাকে বাংলাদেশি বলে গালাগাল করা হয়েছে, পরে মারধর করা হয় এবং মোবাইলও নিয়ে নেয়।” আরেকজন বলেন, “আমরা প্রতিবাদ করতেই ছুরি ও বন্দুক দিয়ে ভয় দেখিয়ে আমাদের মারধর করা হয়।”
ঘটনার খবর পেয়ে মুচিপাড়া থানায় পৌঁছে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানান বাংলা পক্ষ দলের নেতা গর্গ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “ভিন রাজ্যে গেলে হামলার শিকার হচ্ছেন বাঙালিরা। এখন কলকাতাতেও একইভাবে বাংলাদেশি বলে হেনস্থা করা হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।”
এ ঘটনায় রাজনৈতিক মহলেও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেন, “শিয়ালদা কলকাতার অন্যতম প্রবেশদ্বার। যদি সেখানেই এমন ঘটনা ঘটে, তবে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা জরুরি।” সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “আগে দেখা যেত ভিনরাজ্যে বাঙালিদের টার্গেট করা হচ্ছে, এখন কলকাতাতেও একই পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। এই ঘটনা ধিক্কার জানানোরও ঊর্ধ্বে।”
এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পুলিশ কাউকে আটক করেছে কিনা তা স্পষ্ট নয়। তবে শিক্ষার্থীরা অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন। আহতরা বর্তমানে চিকিৎসাধীন।







































