Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

প্রবাসী পাঠকের চিঠিঃ ঈদ আমাকে শুধুই কাঁদায়

ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই খুশি। পরম করুনাময় আল্লাহ তার প্রিয় হাবীব নবীকরিম(সাঃ) এর উম্মতের আনন্দের জন্য নেয়ামত স্বরূপ বছরে দুই ঈদের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন তার জন্য আল্লাহর কছে শুকরিয়া আদায় করার মত ভাষা আমাদের নেই। তারপরেও অন্তরের গভীর থেকে শুকরিয়া করছি আলহামদুলিল্লাহ। ঈদ সবার জন্য খুশির হলেও কেন জানি আজও আমাকে কাঁদায়। প্রত্যেকবার ঈদ আসলেই আমার বুক ফাঁটা কান্নায় শ্বাস, প্রশ্বাস সবই বন্ধ হয়ে আসে। সেই ছোটবেলায়  প্রত্যেক ঈদের আগে আশেপাশের বন্ধুদের সকলেরই বাবা ঢাকা থেকে বাড়ী আসতো আর বন্ধুরা বাবাকে এগিয়ে নিয়ে আনার জন্য যখন বাবা আসছে বাবা আসছে বলে চিৎকার করে ছুটে যেত সেই দৃশ্য দেখে আমি দূরের গাছের আড়াল থেকে উকি মেরে দেখতাম আর নিরবে শুধুই কাঁদতাম। যখন দেখতাম বন্ধুর বাবা বন্ধুকে জড়িয়ে ধরে আদর করছে তখন চোখ দিয়ে শুধুই অশ্রু ঝরতো। তারপর বন্ধুদের গায়ে শহর থেকে সদ্য বাবার কিনে আনা নতুন জামা দেখতাম তখনও শুধুই নিরবে কাঁদতাম। ঈদের দিন ভোরে যখন দেখতাম বন্ধুরা বাবার হাত ধরে ঈদগাহের দিকে ছুটছে তখনও নিজের চোখের জলকে আটকে রাখতে পরতাম না। আমার বাবা চলে গেছেন না ফেরার দেশে। কখনোই আর আসবেন না। সমগ্র বাংগালী জাতিকে খুশি করতে নিজের স্ত্রী পুত্রের খুশি ও আনন্দ বিসর্জন দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে শরিক হয়ে জীবনকে দেশ ও জাতির জন্য উৎসর্গ করে দিয়ে গেছেন। উৎসর্গ করে দিয়ে গেছেন আমার মায়ের চিরদিনের সুখ। উৎসর্গ করে দিয়ে গেছেন আমাদের জীবনের অনেক আশা, আকাংখা, অনেক আনন্দ। ছোট বেলা প্র‍ায় রাতে দেখেছি মাকে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে কপালে চুমু খেতে আর চোখ দিয়ে শুধু অশ্রু ঝরতে। অনেক সময় ঘুম ভেংগে গেলেও ঘুমের ভান করে চোখ বুজে মায়ের সেই আদর পরখ করতাম আর মায়ের সাথে আমি চাপা কান্নায় নিজের নিশ্বাস বন্ধ করে রাখতাম। ছোট বেলা কখনো মায়ের কাছে কিছুই দাবী করিনি। বাবা নেই তার উপর নানার সংসারে মা আমাদের দুইভাই কে নিয়ে বড় বোঝা হয়ে আছে তাই মায়ের কাছে কোন কিছুর আবদার করাই মানে মায়ের কষ্ঠকে আরো বাড়িয়ে দেওয়া। অনেক সময় আইসক্রিম খাওয়ার ইচ্ছেকে পানি খেয়ে মিটিয়ে নিতাম। তারপরও মায়ের কাছে কখনো আইসক্রিম খাওয়ার বায়না করিনি । একবার ঈদের দিন দুপুরে আইসক্রিম ওয়ালা বাড়ীর উঠানে আসলে বন্ধুরা সকলেই কিনে আইসক্রিম খাচ্ছে দেখে মা আমাকে আর আমার ছোট ভাইকে ২৫ পয়সা দামের দুইটা আইসক্রিম কিনে দিয়েছেন কিন্ত আমার ছোট ভাইয়ের বয়স মাত্র তখন তিন কি চার হবে ওর দাবি ওকে ৫০ পয়সা দামের আইসক্রিম কিনে দিতে হবে। মায়ের বোধ হয় ওকে ৫০পয়সা দামে আইসক্রিম কিনে দেওয়ার সাধ্য ছিলনা কিন্তু ও বায়না ধরল ওকে ঐ আইসক্রিম কিনে দিতেই হবে পরে মা ওকে একটা লাঠি দিয়ে অনেক মেরেছিল যার জন্য আমি এখনো পর্যন্ত আইসক্রিম খাইনা। হয়তো মা সেদিনে আমার ছোট ভাইকে মেরে যে দুঃখ পেয়েছিলেন তা হয়তো ছিল আমার আজীবন আইসক্রিম না খাওয়ার দুঃখের চেয়ে হাজার গুন বেশি ছিল। আজও ঈদ আমাকে কাঁদায় বাবার জীবন, মায়ের হাসি আর আমাদের ছোটবেলার সেই আনন্দ সব কিছু বিসর্জনের বিনিময়ে ও যখন দেখি ঈদের দিন সকালবেলা সেই ছোট্ট শিশুটি মায়ের আচল ধরে এ দুয়ার ও দুয়ার ঘুরে বেড়ায় শুধু এক মুটু ভাতের জন্য। রমজান মাসে দানশীলতার ভান করে সারা শহর মাইকিং করে যাকাত দেওয়ার নাম করে আর সেই যাকাতের কাপড় আনতে গিয়ে পদপিষ্ঠ হয়ে আসহায় মা তার সন্তান নিয়ে লাশ হয়ে ফিরছেন। বেহায়া নির্লজ্জ দুর্নীতিবাজদের দুবাই থেকে আনা দামী আতরের গন্ধে পুরো ঈদগাহের ময়দান যখন কুলষিত হচ্ছে তখন নিজের চোখের জল আর আটকে রাখতে পারিনা। যখন দেখি ঈদের আগে ওমরা হজ্বের নাম করে আমাদের রক্ত চোষা রাজনীতিবিদেরা পবিত্র মক্কা মদীনার মাটি কুলষিত করে তখনো কাঁদি আমি। যখন দেখেছি জাতীয় ঈ

chardike-ad