সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গিদের ওপর প্রথমবারের মতো বিমান হামলা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার আরব মিত্ররা। মঙ্গলবার মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল জন কারবি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী ও সহযোগী দেশগুলোর বাহিনী সিরিয়ায় আইএস’র বিরুদ্ধে হামলা শুরু করেছে। হামলায় জঙ্গি ও বোমারু বিমান এবং টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে।
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে আইএসকে নির্র্মূলে তার পরিকল্পনার রূপরেখা তুলে ধরেন। ওই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই সিরিয়ায় আইএস’র লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালানো হচ্ছে বলে ধারণা করা যায়।
গত আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত ইরাকে আইএস’র লক্ষ্যবস্তুতে ১৯০ দফা বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফ্রান্সও সম্প্রতি ইরাকে আইএস’র বিরুদ্ধে বিমান হামলা শুরু করেছে।
আইএস জঙ্গিরা গত কয়েক মাসে সিরিয়া ও ইরাকের বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে ইসলামি খেলাফত ঘোষণা করেছে। জঙ্গিগোষ্ঠিটিকে থামাতে দেশ দুটির সরকার কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। গণহত্যা, শিরñেদ, ধর্ষণ, অপহরণের মতো সন্ত্রাসী তৎপরতা চালিয়ে বিশ্ববাসীকে হতবাক করে দিয়েছে সংগঠনটি।
ইরাকে আইএস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আমেরিকার বিমান হামলার প্রতিবাদে ইতোমধ্যে দুই মার্কিন সাংবাদিক জেমস ফলি ও স্টিভেন স্টলফের শিরñেদ করে সংগঠনটির জঙ্গিরা। এরপর ডেভিড হেইন্স (৪৪) নামের এক ব্রিটিশ ত্রাণকর্মীরও শিরñেদ করে আইএস।
পেন্টাগনের মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল জন কারবি সিরিয়ায় হামলার কথা নিশ্চিত করলেও এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
তিনি বলেন, ‘শুধু বলতে পারি, অভিযান চলছে। এ মুহূর্তে এর বেশি তথ্য জানানো সম্ভব হচ্ছে না।’
সিরীয় সরকার তাদের ভূখন্ডে বিমান হামলার ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মতি জানায়নি। তবে হামলার আগে তাদের অবহিত করা হয়েছিল বলে সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি’র খবরে বলা হয়েছে, সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে আইএস’র শক্ত ঘাঁটি রাকায় বেশি হামলা চালানো হয়েছে।
সিরিয়ায় আইএস বিরোধী যুদ্ধে কোন কোন দেশ অংশ নিয়েছে, এ ব্যাপারে পেন্টাগনের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি। মার্কিন গণমাধ্যমের খবর বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি যেসব দেশ হামলায় অংশ নিচ্ছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে বাহরাইন, জর্ডান, কাতার, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
জর্ডান হামলায় অংশ নেয়ার কথা স্বীকার করেছে। তবে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সৌদি আরবসহ সুন্নী সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলো আইএস বিরোধী যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।