Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ব্যর্থতার মধ্যে দিয়ে শেষ হলো বাংলাদেশের ইনছন মিশন

কারাতে ও তায়কোয়ানদো ইভেন্ট দিয়ে শেষ হলো বাংলাদেশের এশিয়ান গেমস মিশন। দক্ষিণ কোরিয়ার ইনছনের আসরে ছেলে ও মেয়েদের ক্রিকেট এবং মহিলা কাবাডি ছাড়া কোনো সুখস্মৃতি নেই বাংলাদেশের। ব্যর্থতার মিছিলে যোগ দিলেন গতকাল লড়াইয়ে নামা কারাতে ও তায়কোয়ানদোর দুই অ্যাথলিটও।

তায়কোয়ানদো মেয়েদের ৭৩ কেজি ওজন বিভাগে শ্রাবণী বিশ্বাস নকআউট পর্বে জর্ডানের রিনা আনানবেহর কাছে ০-১৫ পয়েন্টে হেরেছেন। ছেলেদের ৫৮ কেজি ওজন বিভাগে একই রাউন্ডের লড়াইয়ে বাংলাদেশী জলন্ত চাকমা ২-২০ পয়েন্টে হেরেছেন চাইনিজ তাইপের ইয়াং ওয়েই চেনের কাছে। কারাতে ছেলেদের ৬০ কেজি ওজন বিভাগের কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশী শামীম ওসমান চায়নার ঝিওয়েই ওয়াংয়ের কাছে হেরেছেন ০-৮ পয়েন্টে।

chardike-ad

17th_asiad ১৩ ডিসিপ্লিনে খেলোয়াড় ও টেকনিক্যাল অফিসিয়াল মিলিয়ে বহরটা ১৬৬ জনের। তার বাইরে বড় একটা অংশ গেমসের অতিথি হয়ে ইনছন ভ্রমণ করেছেন। গেমস শুরুর আগে ১৩ ডিসিপ্লিনের মধ্যে স্বর্ণপদকসহ একাধিক পদকের সম্ভাবনার কাথা জানানো হয়েছিল বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) তরফ থেকে। শেষ পর্যন্ত এক রৌপ্য ও দুই ব্রোঞ্জ নিয়ে ফিরতে হচ্ছে গেমস থেকে।

মহিলা ক্রিকেট স্বর্ণ পদকের সম্ভাবনা জাগিয়ে রৌপ্য জিতেছে। ২০১০ সালে গুয়াংজু এশিয়ান গেমসেও একই পদক জয় করে সালমা খাতুনরা। মহিলা কাবাডি থেকে গত আসরের মতোই ব্রোঞ্জ এসেছে। ছেলেদের ক্রিকেটে গুয়াংঝু থেকে স্বর্ণ পদক আসে, এবারো একই প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে ভাগ্যের (টসে ফলাফল নির্ধারণ) খেলায় হেরে সেমিফাইনাল থেকে বিদায়, ফলে ব্রোঞ্জ পদকেই সান্ত্বনা খুঁজতে হয়েছে।

গত আসরে ছেলেদের ক্রিকেট থেকে এসেছিল একমাত্র স্বর্ণ পদকটি। এবার টেস্ট খেলুড়ে দলগুলোর মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশই পাঠায় পূর্ণ শক্তির দল। শুধু মুশফিকুর রহিম ছাড়া সেরা দল নিয়েই স্বর্ণ মিশনে অংশ নেয় বাংলাদেশ। বৃষ্টির কারণে এশিয়ান ক্রিকেটের দুই পরাশক্তি ভারত ও পাকিস্তান ক্রিকেটে কোনো দল পাঠায়নি। আর স্বর্ণ পদক জেতা লংকান দলটি খুবই অনভিজ্ঞ। হাতেগোনা ৩-৪ জন বাদে লংকান এই দলটিতে জাতীয় দলে খেলার সুযোগ হয়নি বেশির ভাগ ক্রিকেটারেরই। যদিও সেমিফাইনালে লংকানদের বিপক্ষে বৃষ্টির কারণে হারার আগেই হেরে যেতে হয় মাশরাফিদের। তবে বৃষ্টির আগে যেটুকু খেলা হয়েছে তাতে করে ম্যাচের কতৃত্ব ছিল লঙ্কানদের হাতেই। আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ১১ ওভারে ৩ উইকেটে ৫৯। ক্রিকেটে মেয়েদের পারফরম্যান্স ২০১০ সালের গেমসের মতোই। তবে ফাইনালে সালমাবাহিনী যেভাবে হেরেছে তা খুবই দৃষ্টিকটু। জয়ের জন্য ৭ ওভারে ৪৩ রানের টার্গেটে একটা পর্যায়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৩০/২। স্বর্ণ জিততে শেষ ১৪ বল থেকে প্রয়োজন পড়ে ১৩ রানের। হাতে ৮ উইকেট। এখান থেকে ৭ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৮/৯। ৪ রানে হারে সালমারা। বাংলাদেশের শেষ ৭ উইকেটের পতন ঘটে মাত্র ৮ রানে।

বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় ইভেন্টগুলোর মধ্যে অন্যতম শুটিং, আরচারি, গলফ। এ ইভেন্টগুলোয় বলা যায় ভরাডুবি হয়েছে। হকির পারফরম্যান্সও নিম্নমুখী। ১০ দলের মধ্যে অবস্থান ৮ নম্বরে। স্থান নির্ধারণী ম্যাচে হকি দল হেরেছে ওমানের কাছে। গত এশিয়ান গেমসের পর মুখোমুখি লড়াইয়ে ওমানকে তিনবারই হারিয়েছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানি কোচ নাভিদ আলমের তত্ত্বাবধানে দীর্ঘমেয়াদে প্রস্তুতি নেয়া দলের এমন অনুজ্জ্বল পারফরম্যান্স নতুন করে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে বাংলাদেশ হকিকে।

জাতীয় দলের ব্যর্থতার কারণে কমনওয়েলথ গেমসের পর এশিয়ান গেমস ডিসিপ্লিনে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়। ইনছন ব্যর্থতা-পরবর্তী সময়ে বিওএ কর্মকর্তারা কী উদ্যোগ নেন— এটাই এখন দেখার বিষয়।