Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

দক্ষিণ কোরিয়ায় আইটিইউ সম্মেলন শুরু

itu busanদক্ষিণ কোরিয়ার বন্দরনগর বুসানে গতকাল শুরু হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশনস ইউনিয়নের (আইটিইউ) তিন সপ্তাহব্যাপী সম্মেলন। আইটিইউর ১৯তম সম্মেলনটিতে মূলত তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন, রেডিও স্পেকট্রাম ও স্যাটেলাইট অরবিটস, সাইবার নিরাপত্তা ও তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে অর্থনীতির উন্নয়ন বিষয়ে আলোচনা হবে। পাশাপাশি স্বাগতিক দেশ দক্ষিণ কোরিয়া ইন্টারনেট-সংশ্লিষ্ট পণ্য খাতকেও আলোচনায় শামিল করতে যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানানো হয়। খবর ইয়নহাপনিউজ।

প্রতি চার বছর পর পর সম্মেলনের আয়োজন করে আইটিইউ। দক্ষিণ কোরিয়া এবারই প্রথম সম্মেলনটি আয়োজনের সুযোগ পেয়েছে। জাতিসংঘের সদস্য ১৯৩টি দেশই আইটিইউর সদস্য। আইটিইউ মূলত বিশ্বব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন ও প্রযুক্তির প্রসার নিয়ে কাজ করে।

chardike-ad

বুসান এক্সিবিশন অ্যান্ড কনভেনশন সেন্টারে (বেক্সকো) আয়োজিত এ সম্মেলনে ইবোলায় আক্রান্ত তিনটি দেশ সিয়েরা লিওন, গিনি ও লাইবেরিয়া ছাড়া প্রায় সবাই অংশগ্রহণ করেছে। অন্যদের পাশাপাশি সম্মেলনটিতে উপস্থিত ছিলেন স্বাগতিক দেশের প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন-হি , তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী চোই ইয়াং-হি ও আইটিইউর মহাসচিব হামাদন তোরে। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন সম্মেলন উপলক্ষে একটি ভিডিও বার্তা প্রদান করেন।

ভিডিও বার্তায় জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ভবিষ্যত্ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পাশাপাশি বৈশ্বিক অর্থনীতির উন্নয়নে এ গুরুত্বপূর্ণ খাতটির ভূমিকাও নির্দিষ্ট করতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘সেলফোনের জনপ্রিয়তা ও ব্যবহার অনেক বেড়েছে, যা আগে কখনো হয়নি। ফলে যোগাযোগ এখন আগের তুলনায় অনেক সহজ। প্রযুক্তি খাত দিন দিন বড় হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তির এ খাতকে ব্যবহার করে আমাদের উচিত ভবিষ্যেক আরো সুন্দর করা।’

উল্লেখ্য, এ সম্মেলনে আইটিইউর পরবর্তী নেতা নির্ধারণ করা হবে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানানো হয়। সংস্থাটি পরিচালনা করেন মহাসচিবসহ ৬৫ জন সদস্য। এবারের সম্মেলনে এ ৬৫ জন সদস্য নির্বাচন করা হবে।

সম্মেলনের বিষয়ে আইটিইউর বর্তমান মহাসচিব তোরে বলেন, ‘আপনারা এখানে ভবিষ্যত্ নির্ধারণে একত্রিত হয়েছেন। আমরা এখানে শুধু আইটিইউর ভবিষ্যত্ নিয়ে আলোচনা করব না। আমরা তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ভবিষ্যত্ নিয়েও আলোচনা করব।’ তিনি আরো বলেন, ‘আশা করি, ‘আমরা আগামী তিন সপ্তাহ তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ভবিষ্যত্ নিয়ে স্বপ্ন দেখতে পারব। পাশাপাশি নতুন উদ্ভাবন এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনায় সক্ষম হব।’

দক্ষিণ কোরিয়ার বিষয়ে তোরে বলেন, ‘আজ থেকে তিন সপ্তাহ বুসান হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের রাজধানী। আমরা সবাই জানি তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে কোরিয়া নেতৃস্থানীয় দেশ।’

চলমান এ সম্মেলনের মূল আলোচ্যসূচির মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টি। বিশ্বের বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক প্রতিষ্ঠানে এখনো কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে বৈষম্য লক্ষ্য করা যায়। ধারণা করা হচ্ছে, এ সম্মেলনে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টির ওপর অধিক গুরুত্বারোপ করা হবে। উল্লেখ্য, ২০১০ সালের সম্মেলনের মূল আলোচ্যসূচির মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল শিশুদের জন্য অনলাইনকে নিরাপদ রাখা।

প্রতি চার বছর পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনটির মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে বৈশ্বিক তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করা এবং এ খাতের ভবিষ্যত্ কীভাবে আরো উন্নত করা যায় সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করা।

বিশ্লেষকদের মতে, জাতিসংঘের সংগঠনটির এ সম্মেলন তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে এখন পর্যন্ত ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। মূলত তথ্য প্রযুক্তি খাত নিয়ে ভবিষ্যত দিকনির্দেশনা প্রস্তুত করতেই চার বছর পর পর এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনটি নিয়মিত বৈশ্বিক তথ্য প্রযুক্তি বাজারের বিভিন্ন সমস্যা নিয়েও গবেষণা করে। এ সমস্যার সমাধানের মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তি খাতকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি মাধ্যম হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করে সংগঠনটি। কোরীয় যুদ্ধ চলাকালীন ১৯৫২ সালে আইটিইউতে যোগ দেয় দক্ষিণ কোরিয়া। সম্মেলন উপলক্ষে বিভিন্ন বিষয় প্রদর্শনীসহ বেশকিছু আয়োজনের ব্যবস্থাও করেছে স্বাগতিক দেশটি।  বণিকবার্তা।