Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

অভিবাসন হোক নিরাপদ

অভিবাসন হোক নিরাপদ, দিনবদল হোক অভিবাসীদের। আজ ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস-২০১৪’। জাতিসংঘের সকল সদস্যভুক্ত দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে প্রতিবছরের ১৮ ডিসেম্বর।

মূলত, ২০০০ সালের ৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ দিনটি বিশ্বব্যাপী উদ্‌যাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ব্যাপক হারে অভিবাসন ও বিপুলসংখ্যক অভিবাসীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়াদিকে ঘিরেই এ দিবসের উৎপত্তি। ১৮ ডিসেম্বর, ১৯৯০ সালে সাধারণ পরিষদ অভিবাসী শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা এবং তাদের পরিবারের ন্যায্য অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক চুক্তি ৪৫/১৫৮ প্রস্তাব আকারে গ্রহণ করে।

chardike-ad
immegration
প্রতীকী ছবি

পেছনে ফিরে তাকালে দেখা যায়, ১৯৯৭ সাল থেকে ফিলিপিনো এবং অন্যান্য এশীয় অভিবাসী সংগঠনগুলো দিবসটি পালন করতে শুরু করে। শুরুর দিকে তারা ১৮ ডিসেম্বরকে নির্ধারণ করে এবং অভিবাসীদের ঘিরে ‘আন্তর্জাতিক ঐক্য দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৯০ সালে জাতিসংঘ অভিবাসী শ্রমিক ও দেশে রেখে আসা তাদের পরিবারের নিরাপত্তা রক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্মেলন করেছিল।

এর প্রেক্ষাপটে ১৮ ডিসেম্বর দিনটিকে লক্ষ্য করে মাইগ্রেন্ট রাইটস ইন্টারন্যাশনাল, ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অন মাইগ্রেন্টস রাইটসসহ বিশ্বের অনেক সংগঠন অভিবাসীদের স্বার্থ রক্ষার্থে বৈশ্বিকভাবে প্রচারণা চালায়। অবশেষে ১৯৯৯ সালের শেষার্ধে অনলাইনে ব্যাপক প্রচারণার ফলে জাতিসংঘের মুখপাত্র এ দিবসটিকে ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস হিসেবে ঘোষণা করতে বাধ্য হন।

এবারের অভিবাসী দিবসে প্রবাসীদের নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধান ও প্রতারণা রোধ করতে বলেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এসব ব্যাপারে তিনি আরো ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণেরও আহ্বান জানান।

আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস-২০১৪ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, বৈদেশিক কর্মসংস্থান ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন সাধন এবং নিরাপদ অভিবাসন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি বৈদেশিক কর্মসংস্থান কার্যক্রম ত্বরান্বিত করবে।

রাষ্ট্রপতি অভিবাসী কর্মীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন, তাদের অধিকার সংরক্ষণ এবং দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদানের গুরুত্ব বিবেচনায় প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস-২০১৪’ উদ্‌যাপিত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত বাংলাদেশিদেরও আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, অভিবাসী ভাইবোনেরা জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। এ জন্য তাদের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

দিবসটি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে প্রবাসে কর্মরত বাংলাদেশি অভিবাসীদের সততা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল করার আহ্বান জানান। তিনি অভিবাসীদের কল্যাণে তার সরকারের গৃহীত উদ্যোগগুলো তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অভিবাসী ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত। অভিবাসী কর্মীদের কল্যাণ ও স্বার্থ সংরক্ষণ, তাদের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার সর্বোত্তম ব্যবহার এবং তাদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ অভিবাসন ব্যবস্থাপনাকে স্বচ্ছ ও গতিশীল করতে গত ছয় বছরে সরকার বিভিন্নমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি ‘বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী কর্মী আইন-২০১৩’ এবং ‘জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতি-২০১১’ প্রণয়নের কথা বলেন।

এবারের অভিবাসী দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ‘নিরাপদ অভিবাসন, দিনবদলের লক্ষ্য অর্জন’। এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্বজুড়ে আজ বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। তন্মধ্যে আলোচনা সভা, পথসভা, শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মানববন্ধন উল্লেখযোগ্য। এ বিষয়গুলোর সবটুকুই অভিবাসীদের উপজীব্য করে অনুষ্ঠিত হবে।