রাজধানীর ডেমরায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসিয়ে দিতে ষড়যন্ত্রমূলক পেট্রলবোমা নাটক সাজিয়ে এক ব্যক্তিকে পুলিশে দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন; মো. কামাল হোসেন (৩৫), বাকি বিল্লাহ (৩৪) ও মো. মোস্তফা (৪০)।
বৃহস্পতিবার রাতে ডেমরার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ডেমরার সানারপাড় এলাকার বরকত শিকদার (৪৩) নামে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতারকৃতরা গত ২১ জানুয়ারি রাতে সানারপাড় বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে পিস্তল ঠেকিয়ে কামালের বাড়ি নিয়ে যায়। সেখানে রাত দেড়টা পর্যন্ত বরকত শিকদারকে তিনজন মিলে মারধর করে। এরপর ছোট-বড় ৬টি প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে পেট্রলবোমা তৈরি করে গ্রেফতারকৃতরা। বোমা তৈরি শেষে তারা পুলিশকে খবর দেয়। রাত ২টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় বরকতকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায় পুলিশ। হাসপাতালে তিনি পুরো ঘটনাটি খুলে বলেন।
এরপর ডেমরা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিক বাদী হয়ে নাশকতার লক্ষ্যে বিস্ফোরক দ্রব্য রাখার অপরাধে গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। এদিকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বরকত শিকদার ২২ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতে নিজেই বাদী হয়ে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে ডেমরা থানায় আরো একটি মামলা দায়ের করেন।
বরকত শিকদার ঘটনার বর্ণনা করে শীর্ষ নিউজকে জানান, ২০১৩ সালের ১৮ ফেরুয়ারি কামাল, আরিফ ও সাইনবোর্ডের কামালসহ কয়েকজন মিলে তার মেয়ে বিপাশা আক্তার নিশুকে (১৩) হত্যা করে তাদের ঘরেই ঝুলিয়ে রেখে যায়। পরে তাদের বিরুদ্ধে তিনি একটি মামলা করেন। এরপর আসামিদের পুলিশ গ্রেফতার করলে আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণ করে। এরমধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে চলতি মাসের ১৫ জানুয়ারি কামালকে নিজের জিম্মায় কারাগার থেকে মুক্ত করেন তিনি। জেল হাজত থেকে বেরিয়ে এসেই কামাল, বাকি বিল্লাহ ও মোস্তফাসহ কয়েকজন মিলে তার সাথে এ ঘটনা ঘটায়।
বরকত শিকদারকে পেট্রলবোমা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগে গত বুধবার রাতেই আসামি কামালকে আটক করে পুলিশ। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে বাকি দুই আসামি বাকি বিল্লাহ ও মোস্তফাকেও গ্রেফতার করে। তিনজনকেই শুক্রবার দুপুর ১২ টায় আদালতে প্রেরণ করে থানা পুলিশ।
এ বিষয়ে ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিরা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বরকতকে আটক করে বেদম মারধর করেছে। তারা ৬টি পেট্রলবোমার নাটক সাজিয়ে পুলিশে সোপর্দ করার চেষ্টা করে। পুলিশ সত্য ঘটনাটি উদঘাটন করেছে।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে থানায় ২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান ওসি। শীর্ষনিউজ।