২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা দেশের সর্বত্র দলবাজ কর্মকর্তা কর্মচারীদের তালিকা প্রণয়ন করছে বলে জানিয়েছেন বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ।
শনিবার সন্ধ্যায় নিজের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে একথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, দেশ আজ ভয়ংকর পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। জাতিকে সেই পুলিশি রিমান্ড থেকে মুক্ত করার জন্য অবিরাম সংগ্রামের কোনো বিকল্প নেই।
প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হুকুমে আন্দোলনরত বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের নৃশংসভাবে ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হত্যা করে সমগ্র দেশকে বধ্যভূমিতে পরিণত করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন করে আওয়ামী লীগই রাজনৈতিক ভুল করেছে এবং সেই ভুলের খেসারত আওয়ামী লীগ ও তার দোসরদেরকেই দিতে হবে, সেই দায় জনগণ নেবেনা। সাংবিধানিক, গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আন্দোলনের সকল দরজা বন্ধ করে দিয়ে সরকারই জনগণকে বাধ্য করেছে রাজপথে অবিরাম সংগ্রামে লিপ্ত হতে। খালেদা জিয়াকে অঘোষিত কারাগারে রুদ্ধ করে সরকারের গদি রক্ষার স্বপ্ন কোনদিনই পূরণ হবেনা।
বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, ‘গতরাতে গাইবান্ধার তুলশীঘাটে যাত্রীবাহী বাসে বর্বরোচিত পেট্রলবোমা হামলার ঘটনায় ২০ দলীয় জোট নেতা বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছি এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার করে বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। পেট্রলবোমা হামলায় নিহত বাসযাত্রীদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’
বিএনপি ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট বরাবরই বলে আসছে যে, এ ধরনের নাশকতামূলক কর্মকা-ে তারা আদৌ জড়িত নয়। বরং ২০ দলীয় জোটের গণতন্ত্র মুক্তি আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে সরকারই এ ধরনের নাশকতামূলক কর্মকা- ঘটিয়ে বিরোধী দলের ওপর দায় চাপানো এবং নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমে তা প্রচার ও প্রকাশের অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এসব ঘটনায় সরকারের সংশ্লিষ্টতার তথ্য প্রমাণ আমরা আমাদের গতকালের বিবৃতিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছি।
সালাহ উদ্দিন আরো বলেন, আওয়ামী রাজনীতির স্বৈরতান্ত্রিকতা ও একনায়কতান্ত্রিকতার ঐতিহ্যে লালিত হাসিনার ছেলে জয় গতকাল অস্ত্রের ভাষায় কথা বলে মুজিব বংশীয় রক্তের প্রতিধ্বনি করেছেন। রাজনীতির পাঠশালায় বাল্য শিক্ষা শ্রেণি অতিক্রম না করার আগেই ভাষণ দেয়া শুভ লক্ষণ নয়। জয় সাহেবের মাতার পিতা মুজিবের রক্ষীবাহিনী নারকীয় হত্যাযজ্ঞে পুরো বাংলাদেশকে বধ্যভূমিতে পরিণত করেও মুজিবকে রক্ষা করতে পারেনি। যে রাজনৈতিক সমস্যা পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে জন্ম দিয়েছেন শেখ হাসিনা, সেই সংশোধনী বাতিল করে সমস্যার সমাধান তাকেই করতে হবে। গণআন্দোলনের তীব্রতা দেখে সরকার অতিমাত্রায় ভীত হয়ে গুম, খুন, অপহরণ, দমন-পীড়ন, হামলা-মামলা এবং গ্রেফতার নির্যাতন চালিয়ে শেষ রক্ষা পেতে চায়। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী দেয়-জনতার ন্যায্য আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারী সরকারের পতন হয়েছে যুগে যুগে দেশে দেশে। এই স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের পতনও এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
