Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

অভিজিৎ হত্যার দায় স্বীকার

ovizitঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে হামলায় বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় চৌধুরীর খুনের দায় স্বীকার করেছে আনসার বাংলা সেভেন নামের একটি গোষ্ঠী। অভিজিতের ওপর হামলার প্রায় দুই ঘণ্টা পর টুইটার বার্তায় ওই দায় স্বীকার করে তারা।

টুইটে বলা হয়, লল (উচ্ছ্বিত)! তারা টার্গেট ব্লগ সাইটকে বন্ধ করতে পেরেছে।… কোনো প্রমাণ নেই। টার্গেট শেষ এবং পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য অপেক্ষা করুন। ইনশাল্লাহ।

chardike-ad

এদিকে, অভিজিৎ রায়ের হত্যাকারীদের ধরতে ডিবির পাশাপাশি পুলিশের অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি অ্যান্ড প্রসিকিউশন) শেখ মোহাম্মদ মারুফ হাসান।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় অভিজিৎ ও তার স্ত্রীকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর রাত ১০টা ২৫ মিনিটে প্রচুর রক্তক্ষরণজনিত কারণে অভিজিৎ মারা যান।

এ হামলায় গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা। তবে বেশ কিছুদিন যাবৎ বিভিন্ন অজ্ঞাত ফোন থেকে তার পরিবারকে হুমকি দিয়ে আসছিল বলে পরিবার সূত্রে জানা যায়। ফোনে বলা হতো, যারা হুমায়ুন আজাদের অনুসারী তাদের অবস্থাও তার মতো হবে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, কয়েকজন যুবক তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় চাপাতি দিয়ে তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে কুপিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। দুর্বৃত্তরা অভিজিতের মাথায় প্রচণ্ডভাবে আঘাত করে। এতে তার মাথার মগজ বেরিয়ে আসে। রাফিদার মাথায়ও চাপাতির আঘাত লাগে এবং তার বাম হাতের আঙ্গুল শরীর থেকে আলাদা হয়ে যায়। এ সময় চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন এসে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী অভিজিৎ রায় মুক্তমনা ব্লগারের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি নিয়মিত লেখালেখি করতেন। এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় তার দুটি বই প্রকাশিত হয়েছে। একটির নাম ‘শূন্য থেকে মহাবিশ্ব’। অন্যটির নাম জানা যায়নি। শুদ্ধস্বর প্রকাশনী তার বই দুটি প্রকাশ করে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. এম আমজাদ আলী বলেন, ‘গত কয়েকদিন আগে থেকে অভিজিতের ওপর হুমকি ছিল যে, তিনি দেশে আসলেই মেরে ফেলা হবে। যারা এ হুমকি দিয়েছে মূলত তারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তাৎক্ষণিক তারা হয়তো বা উদ্যানের ভেতর দিয়ে পালিয়ে গেছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’

অন্যদিকে, অভিজিৎকে হত্যার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার দাবি করে এবং অভিজিৎসহ অন্যান্যদের হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করে। এ ছাড়া শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে গণজাগরণ মঞ্চ অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করে। পাশাপাশি প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয়।

প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে বের হওয়ার পথে একইভাবে লেখক হুমায়ুন আজাদের ওপর হামলা হয়েছিল। এ ছাড়া ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দারকেও রাজধানীর মিরপুরে তার বাড়ির সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। এসব হত্যাকাণ্ডে জঙ্গিবাদীদের সম্পৃক্ততা ছিল বলে তদন্তে বেরিয়ে আসে।