Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

হাতে হাত রেখেই না ফেরার দেশে

floyedপ্রিয়তমা, একাকী এই নাবিকের পক্ষ থেকে তোমার জন্য কিছু লিখছি। তোমাকে অনেক মিস করছি। কারণ আমি তোমার প্রেমে পড়েছি। জানি, যখন আমি ফিরব, তুমি অনেক খুশি হবে। যদিও আমি এক সময় ভাবতাম নাবিকের জীবন অনেক সুন্দর। কিন্তু সেটা ছিল বিশ্ব সংসারের সবচেয়ে মিষ্টি মেয়ে তোমাকে ভালোবাসার আগের কথা।

১৯৪৭ সালের মে মাসের কোনো এক বিরহী ক্ষণে প্রেমিকা ভায়োলেটকে প্রশান্ত মহাসাগরের জনস্টন অ্যালট থেকে এই চিঠিটি লিখেছিলেন ফ্লয়েড।

chardike-ad

৬৭ বছর হাতে হাত রেখে কাটিয়ে দেওয়ার পর মৃত্যুও বাধা হতে পারেনি ভায়োলেট-ফ্লয়েডের জনম জনম একসঙ্গে থাকার প্রত্যয়কে।

বাজফিড নিউজ সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত ১১ ফেব্রুয়ারি ৯০ বছর বয়সী ফ্লয়েড মারা যান। মৃত্যুর সময়ও তিনি তার স্ত্রীর হাত ধরে ছিলেন। ফ্লয়েডের মারা যাওয়ার মাত্র ৫ ঘণ্টা পরে হাত ধরা অবস্থাতেই ৮৯ বছর বয়সী ভায়োলেটও প্রিয়তমের পথ ধরেন।

এ সময় পরিবারের সবাই তাদের কাছে ছিলেন। এর আগে প্রচণ্ড অসুস্থ অবস্থায় ওই দম্পতিকে পাশাপাশি বিছানায় শুইয়ে দেন সন্তানেরা। এরপর থেকে তারা দুজন দুজনের হাত ধরে ছিলেন। এ অবস্থায়ই ফ্লয়েড মারা যান। ৫ ঘণ্টা পর ভায়োলেটও চলে যান না ফেরার দেশে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, জীবনের শেষ বছর ডিমেনশিয়ায় ভুগছিলেন ভায়োলেট। এসময় ফ্লয়েড তার সেবা করতেন। কিন্তু গত জানুয়ারিতে ফ্লয়েডের কিডনি নষ্ট হওয়ায় ডাক্তাররা জানান, তিনি আর মাত্র ২ সপ্তাহ বাঁচবেন। ফ্লোয়েডের শরীর দিন দিন খারাপ হওয়ার পরও তিনি তার স্ত্রীর সেবা করে যাচ্ছিলেন।

তাদের মেয়ে দনা স্চারটন বলেন, তাদের মধ্যে এক অদ্ভুত সংযোগ ছিল। আর আমার মনে হয়েছে, এই সংযোগ দিন দিন বাড়ছিল; বিশেষ করে তাদের জীবনের শেষ মাসে সেটি সর্বাধিক হয়েছিল।

দনা বলেন, আমার বাবার হাঁটতে খুব কষ্ট হতো। কিন্তু তার প্রধান চিন্তার বিষয় ছিল মা।

কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, তারা একসাথে চলেও গেলেন। তারপরও আমরা সুখী। কারণ আমরা জানি তারা কী চেয়েছিলেন।

ফ্লয়েড ও ভায়োলেট একে অপরকে প্রাথমিক স্কুলে পড়ার সময় থেকেই চিনতেন। ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় ক্যালিফোর্নিয়ার ফ্রেসনোতে তাদের দেখা হয়। ওই শহরের রেইনবো বলরুমে তাদের কথা হয়। সেখানে তাদের ভালো লাগা শুরু।

নৌবাহিনীতে চাকরির সূত্রে এরপর ফ্লয়েডকে প্রশান্ত মহাসাগরে চলে যেতে হয়। তারপর ১৯৪৫ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত এই প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে চিঠি আদান-প্রদান হতো।