দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবীণ দম্পতিদের গড় আয়ু ক্রমশ বাড়ছে। জীবনযাত্রার ধরণে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনই এর অন্যতম কারণ বলে ধারণা করা হচ্ছে। কোরিয়ায় যখন একাকী বাস করা বয়স্ক নাগরিকদের মাঝে দারিদ্যের প্রকোপ বড় ধরণের সামাজিক সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে তখন ভিন্ন একটি গোষ্ঠীর মধ্যে শেষ বয়সে দীর্ঘ, সুখী জীবনের অধিকারির সংখ্যাও বাড়ছে।
আলোচ্য শ্রেণীর মানুষেরা যে কেবল আর্থিকভাবেই সচ্ছল তা নয়, সন্তানদের বিয়ে দিয়ে তাঁরা নিজেদের মতো করে দাম্পত্য জীবনের গোধূলি বেলাটুকু বেশ ভালোভাবেই উপভোগ করছেন। কোরিয়ার স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ ইন্সটিটিউটের তথ্যমতে বিগত আড়াই দশকে ৬০ থেকে ৭৫ বছর বয়সী দম্পতিদের মাঝে সন্তানদের থেকে আলাদা থাকার হার ১৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ১৯৮৫ সালে যে সংখ্যাটা ছিল দুই লাখের মতো সেটা ২০১১ সাল নাগাদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ লাখে এবং চলতি বছরের শেষে এ সংখ্যা ৩১ লক্ষ ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা হচ্ছে।
এছাড়া প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি ও কর্মজীবন থেকে অবসর গ্রহণের বয়স কমতে থাকায় এসব দম্পতি শেষ জীবনের অনেকটা সময় একান্তই নিজেদের মতো করে কাটাতে পারছেন।
১৯৮৫ সালে কোরিয়ানদের প্রত্যাশি আয়ু ছিল ৭৪ বছর আর অবসর গ্রহণের বয়স ৫৫। ২০১১ সালের হিসেবে এ দুটো অংক যথাক্রমে ৮২ ও ৫৩। সে হিসেবে এখনকার কোরিয়ান দম্পতিরা অবসর জীবনে ২৯ বছরের মতো শুধুই নিজেদের নিয়ে থাকতে পারছেন।
পরিবর্তন হচ্ছে প্রথাগত ধ্যানধারণায়ও। শেষ বয়সে ছেলেমেয়েদের সাথে থাকার প্রবণতা তো কমছেই, পাশাপাশি নিজেদের সব সম্পত্তি সন্তানদের নামে লিখে দেয়ার হারও হ্রাস পাচ্ছে।
বাড়ছে যৌন জীবন দীর্ঘায়িত করার প্রতি আগ্রহও। বুড়ো বয়সেও আজকাল অনেকেই সঙ্গী বা সঙ্গিনীর মৃত্যু কিংবা বিচ্ছেদের পর নতুন করে গাঁটছড়া বাঁধছেন। সাম্প্রতিক একটি জরিপের ফল বলছে ৬০ থেকে ৭৫ বয়সীদেড় ৪৯ শতাংশই জানিয়েছেন উল্লেখিত পরিস্থিতিতে তাঁরা নতুন সঙ্গী/সঙ্গিনী খুঁজে নিতে আগ্রহী।