রাস্তায় বেরিয়ে জ্যামে পড়লে কিংবা প্রচণ্ড গরমে যখন মাথা খারাপ হওয়ার যোগাড় তখন মুখ থেকে অনেকেরই আক্ষেপ বেড়িয়ে যায় ‘ইস, অন্য কোনো দেশে থাকলে সুখে থাকতে পারতাম’। হ্যাঁ, অনেকেই ভাবেন ঢাকা শহরের চাইতে বসবাসের অযোগ্য কোনো জায়গা নেই। কিন্তু আপনাদের মতোই হয়তো অন্য কোনো দেশে বসে একই ধরণের কথা ভাবছেন, তা কি কখনো ভেবে দেখেছেন? তারা হয়তো আমাদের থেকেও খারাপ অবস্থার মধ্যে জীবন যাপন করছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের জরিপে খুঁজে বের করেছেন বিশ্বের সব চাইতে দূষিত স্থান। তাদের মতে সেই সকল স্থান বসবাসের অযোগ্য হয়ে গিয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করে চলেছেন এই সকল স্থানে। চলুন তবে দেখে নেয়া যাক সেই সকল বসবাসের অযোগ্য ৫ টি দূষিত স্থান।
এই স্থানটি বিশ্বের ইলেকট্রনিক আবর্জনা তৈরির ক্ষেত্রে পশ্চিম আফ্রিকার মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে আছে। এখানে বৈদ্যুতিক তার পুড়িয়ে ভেতরের কপার বের করা হয়। এতে যে গ্যাস এবং আবর্জনার তৈরি হয় তা এই স্থানের পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী। বর্তমানে যেখানে বসবাস আসলেই সম্ভব নয়।
চারনোবিল, ইউক্রেন
১৯৮৬ সালের নিউক্লিয়ার দুর্ঘটনার জের এখন পর্যন্ত এই স্থান বয়ে বেড়াচ্ছে। এখানে যে নিউক্লিয়ার দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল তা হিরোশিমা এবং নাগাসাকির তুলনায় ১০০ গুণ বেশি রেডিয়েশন ছড়িয়েছিল। প্রায় ১০ মিলিয়ন মানুষ এই দূষণের শিকার।
সিতারাম নদী, ইন্দোনেশিয়া
প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষভাবে এই দূষণের শিকার এবং পরোক্ষভাবে প্রায় ৫ মিলিয়ন মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন সিতারাম নদী দূষণের। পশ্চিম জাভার অববাহিকায় বইছে কেমিক্যালে দূষিত এই নদী। এই নদীর পানিতে লেড, অ্যালুমিনিয়াম, ম্যাংগানিজ এবং লোহার পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত বেশি। এই দূষণের পেছনে রয়েছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল আবর্জনা যা সয়াসরি নদীতে ফেলা হয়।
ডেজারসিন্সক, রাশিয়া
কেমিক্যাল উৎপাদনকারি এই স্থানটি মাটির নিচের পানিতে ডাইঅক্সিন এবং ফেনলের মাত্রার কারণে বসবাসের অযোগ্য। এই স্থানের মানুষজন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনায় থাকেন অন্যান্য স্থানের মানুষের তুলনায় প্রায় ৪০% বেশি।
হাজারীবাগ, বাংলাদেশ
বাংলাদেশের এই স্থানটিতে রয়েছে অনেক ট্যানারি যেখানে প্রাচীন এবং পুরাতন উপায়ে চামড়া প্রক্রিয়াজাত করা হয়। এবং এখানে প্রায় ২২,০০০ কিউবিক লিটার টক্সিক আবর্জনা তৈরি হয় যা সরাসরি নদীতে ফেলা হয়। এই আবর্জনায় রয়েছে ক্যান্সার জন্মদানকারী উপাদান হেক্সাভ্যালেন্ট ক্রোমিয়াম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই স্থানটিকেও বসবাসের অযোগ্য বলে রিপোর্ট প্রদান করেন।
