Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বাংলাদেশের শিক্ষাক্রমের উন্নয়নে আগ্রহী কোরিয়া

Flag-Pins-Bangladesh-South-Koreaপ্রাথমিক স্তরের শিক্ষাক্রম আধুনিকায়ন, পরিমার্জন ও জীবনমুখী করতে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার সব ধরণের সহায়তা প্রদান করতে চাচ্ছে। কোরিয়া আর্থিক, বিশেষজ্ঞ, অবকাঠামো ও কারিগরি সহায়তার মাধ্যমে বাংলাদেশের শিক্ষাক্রমের উন্নয়নে কাজ করতে আগ্রহী। এই লক্ষে দক্ষিণ কোরিয়ান কারিকুলাম উন্নয়ন বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘কোরিয়া ইনস্টিটিউট ফর কারিকুলাম অ্যান্ড এভালুয়েশন’ (কাইস) এবং বাংলাদেশের জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) যৌথভাবে চারদিন ব্যাপী একটি কর্মশালা শুরু হয়েছে।

রাজধানীর মতিঝিলস্থ পাঠ্যপুস্তক ভবনে শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছে কোরিয়ার কারিকুলাম বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কেআইসিই বা ‘কাইস’ এর কার্যকরী সভাপতি ড. নান শিম ছো, এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ন চন্দ্র পাল, সদস্য (প্রাইমারি কারিকুলাম) ড. আব্দুল মান্নান প্রমূখ। এনসিটিবি চেয়ারম্যান প্রফেসর নারায়ন চন্দ্র পাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোরিয়া বাংলাদেশের শিক্ষাক্রম বিশেষ করে বিজ্ঞান ও গণিত বিষয়ের আরো মানোন্নয়ন করতে চাচ্ছে। আমাদের কারিকুলামের সঙ্গে কোরিয়ার কারিকুলামের একটা সামঞ্জন্য আছে। কোরিয়াতে প্রাথমিক শিক্ষা স্তর বয়সের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষাস্তর। আমাদের প্রাথমিক শিক্ষাস্তর অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত বাস্তবায়ন হলে শিক্ষার্থীর বয়স বিবেচনায় প্রায় তাদের মতোই হবে। এক্ষেত্রের মিল পাওয়া যাবে। তাই জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসারে পরিবর্তিত শিক্ষাক্রমের উন্নয়নে কাজ করতে চায় কোরিয়ান রাষ্ট্রীয় সংস্থা কাইস।’

chardike-ad

এনসিটিবি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসারে প্রাথমিক শিক্ষা স্তর অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত হলে শিক্ষাক্রমে যে পরিবর্তন আসবে সেখানে প্রয়োজনীয় সহযোগীতা করবে কোরিয়া শিক্ষাক্রম ও মূল্যায়ন ইনস্টিটিউট (কাইস)। প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে কোরিয়ান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে একটি প্রকল্পও বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। এনসিটিবি চেয়ারম্যান জানান, ‘কোরিয় প্রতিষ্ঠানটি সেদেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ের কারিকুলাম উন্নয়ন, কারিকুলাম বিষয়ে গবেষণা ও মূল্যায়ন, টিচিং-লার্নি পদ্ধতির উন্নয়ন ইত্যাদি নিয়ে কাজ করে থাকে। ওয়ার্কশপের উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ের কারিকুলাম ও পাঠ্যপুস্তক উন্নয়নে সহযোগিতার ক্ষেত্রসমূহ চিহ্নিত করা এবং কীভাবে কার্যকরী ও যুগোপযোগী পরিবর্তন আনা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করা। কর্মশালা শেষে একটি সারসংক্ষেপ যাবে আমাদের মন্ত্রনালয়ে।’কর্মশালায় অংশ নিয়ে দুই পক্ষের বিশেষজ্ঞরাই বলেছেন, শিক্ষাক্রম পরিমার্জন, উন্নয়ন ও নবায়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া। যেকোন দেশের আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন ঘটে। পরিবর্তন ঘটে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে। নিয়ত বিকশিত হয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি। রাষ্ট্র, সমাজ ও জীবনকে মোকাবেলা করতে হয় নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ। সঙ্গে সঙ্গে শিখন চাহিদারও পরিবর্তন ঘটে। পরিবর্তনশীল অবস্থার সঙ্গে সাামঞ্জস্য রেখে দেশ ও জাতির আকাঙ্খার আলোকে নতুন প্রজন্মকে গড়ে তোলার প্রয়োজনেই কারিকুলাম নবায়ন ও উন্নয়ন করা হয়।

কোরিয়ান রাষ্ট্রীয় সংস্থা কাইস বাংলাদেশের কারিকুলাম উন্নয়নে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে, যা উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষাক্রম এবং পাঠ্যপুস্তক উন্নয়ন বিষয়ে কাজ করা এবং প্রয়োজনীয় শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রদান করা। এ কাজের অংশ হিসেবে ‘কাইস’ গত ফেব্রয়ারিতে এনসিটিবির সহায়তায় বাংলাদেশে গণিত ও বিজ্ঞানের বেশ কিছু প্রাথমিক শিক্ষকের মধ্যে জরিপ পরিচালনা করেছে। এর উদ্দেশ্য ছিল দেশের প্রাইমারী স্কুলের গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ের পাঠ্যপুস্তক ও কারিকুলামের বর্তমান অবস্থা জানা এবং সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করা। কাইস এর কর্মকর্তারা বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে বাংলাদেশ হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের সহযোগিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্টনার। তাই কারিয়া সরকার বাংলাদেশে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।