Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

শুক্রবার চাঁদপুরের অর্ধশতাধিক গ্রামে ঈদ

eidদীর্ঘ ৮৭ বছরেও চাঁদপুরে আগাম ঈদ উদযাপন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার অবসান হয়নি। হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা দরবার শরীফের লক্ষাধিক অনুসারী এবারও আরব দেশসূমহের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে একদিন আগেই ঈদ উদযাপন করবেন। তবে সারাদেশে ১৮ অথবা ১৯ জুলাই পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হবে।

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল করে শুক্রবার অর্থাৎ ১৭ জুলাই চাঁদপুরের অর্ধশতাধিক গ্রামে সাদ্রা দরবার শরীফের অনুসারীরা ঈদ পালন করবেন। গত ৮৬ বছর ধরে আরব দেশসমূহের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ওই গ্রামগুলোতে ঈদ উদযাপন হয়ে আসছে।

chardike-ad

তবে একদিন আগে ঈদের জামাত করা নিয়ে সংঘর্ষে ১৯৮৬ ও ৮৭ সালের দুই ঈদে দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়। এরপর থেকে প্রতি বছর সাদ্রায় ঈদের দিন ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

সাদ্রা ছাড়াও হাজীগঞ্জ উপজেলার বলাখাল, শ্রীপুর, মনিহার, বরকুল, অলীপুর, বেলচোঁ, রাজারগাঁও, জাকনি, কালচোঁ, মেনাপুর, ফরিদগঞ্জ উপজেলার শাচনমেঘ, খিলা, উভারামপুর, পাইকপাড়া, বিঘা, উটতলী, বালিথুবা, শোল্লা, রূপসা, গোয়ালভাওর, কড়ইতলী, নয়ারহাট, মতলবের মোহনপুর, এখলাসপুর, দশানী, নায়েরগাঁও, বেলতলীসহ হাইমচর ও কচুয়ার কয়েকটি গ্রামে একদিন আগেই ঈদ উদযাপন করা হয়।

এছাড়া চাঁদপুরের পার্শ্ববর্তী নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ভোলা ও শরীয়তপুরসহ চট্টগ্রাম ও ভোলার কয়েকটি স্থানে মাওলানা ইছহাক খানের অনুসারীরা একদিন আগে ঈদ উদযাপন করেন।

১৯২৮ সালে হাজীগঞ্জ উপজেলার রামচন্দ্রপুর মাদরাসার তৎকালীন অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইছহাক খান আরব দেশসমূহের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ঈদ উদযাপনের উদ্যোগ নেন। তবে সেসময় গ্রামবাসী অসহযোগিতা করলে উদ্যোগ ভেস্তে যায়। দেশে সরকারি নিয়মের বাইরে একদিন আগে ঈদ পালনের উদ্যোগ গ্রহণের দায়ে মাওলানা খানকে অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান মাওলানা খান ওই বছরই চলে আসেন নিজ গ্রাম একই উপজেলার সাদ্রায়। আরব দেশসমূহের রীতিনীতি অনুযায়ী ধর্ম পালনের জন্য প্রথমে নিজ গ্রামে শুরু করেন গণসংযোগ। গ্রামের অসহায়, দুঃস্থ মুসলমানদের প্রচুর আর্থিক সাহায্য দিয়ে একদিন আগে ঈদসহ সব প্রকার ধর্মীয় অনুষ্ঠান উদযাপন প্রথা চালু করেন।

মাওলানা খানের মতে, হানাফি, মালেকি ও হাম্বলী মাজহাবের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঈদসহ সর্বপ্রকার ধর্মীয় কার্যক্রম বিশ্বের সব দেশে একসঙ্গে পালিত হবে। বাংলাদেশ পবিত্র কাবা ঘর থেকে ৫০.১২ দ্রাঘিমাংশ পূর্বে অবস্থিত। মক্কার সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সময়ের ব্যবধান ৩ ঘণ্টা ২০ মিনিট ৪৮ সেকেন্ড। সময়ের ব্যবধান এত অল্প হলে একসঙ্গে রোজা রাখা ঈদ উদাপন করতে বাধা থাকার কথা নয়।

মাওলানা ইছহাক খান ১৯৮৫ সালে ১৩ নভেম্বর ইন্তেকাল করলে তার কবর ঘিরে গড়ে উঠে মাজার। তার ছয় ছেলে মাওলানা আবু জাফর হাই, আলহাজ মাওলানা আবু বকর, মো. ঈসমাঈল, মাওলানা আবুল খায়ের, মাওলানা মো. শেখ ইলিয়াস, আলহাজ মাওলানা আবু ইয়াহিয়া, মো. জাকারিয়া আলমাদানী, হাফেজ মাওলানা আহাম্মদ হোসাইন, মাওলানা শাহ মো. হাসান ও মেয়ে ওয়াহরেহা ফাতেমাতুজ জোহরা। ছয় ছেলেই বাবার মতবাদ প্রচারে সদা নিবেদিত। সেইসঙ্গে ওই মতবাদ প্রচারে কাজ করছেন মাওলানা ইছহাক খানের অসংখ্য মুরিদ। তার মৃত্যুবার্ষিকীতে ওরস মাহফিলও হয় পৃথক পৃথকভাবে।

বাংলামেইল২৪