Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বড়লোক হওয়ার ১০ উপায়

takaবড়লোক হওয়ার ইচ্ছে কার না জাগে। সাধারণ জীবনযাপন থেকে সবাই বড়লোক হতে চায়। কিন্তু ইচ্ছা থাকলেই তো আর হওয়া যায় না। কেউ কেউ ঘুমিয়েও স্বপ্ন দেখে বড়লোক হওয়ার। আবার কেউ কেউ বড়লোক হওয়ার চেষ্টাও বাকি রাখে না। তবে বড়লোক হতে চাইলে কিছু উপায় করতে হয়। তো চলুনে জেনে নেয়া যাক, বড়লোক হওয়ার ১০ উপায়-

১) আগে ঠিক করুন কোন ধরনের বড়লোক হতে চান– ব্যবসার মাধ্যমে নাকি চাকরি করে। বড়লোক মানে প্রচুর টাকার মালিক নাকি বড় মনের মানুষ। সে সবগুলো আগে ঠিক করুন। ব্যবসা করে বড় কিছু করতে হলে ধাপে ধাপে ওঠার চেষ্টা করুন। লাভের টাকার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিনিয়োগ করুন। একটা ব্যবসায় আটকে না থেকে ধীরে ধীরে অনেক কিছুতে বিনিয়োগ করার চেষ্টা করুন। চাকরি করে বড়লোক হতে হলে আগে টিম লিড করতে শিখুন। কাজের পাশাপাশি নতুন আইডিয়া নিয়ে আসুন। অফিসের সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে বসকে নিজের কাজের ভালো দিকটা বোঝানোর চেষ্টা করুন।

chardike-ad

২) স্বপ্ন দেখুন দোষ নেই, কিন্তু সবার আগে সঠিক পরিকল্পনা করুন– বড়লোক হব এমন স্বপ্ন দেখাটা ভালো। হ্যাঁ, ছেঁড়া কাঁথাতে শুয়ে থেকেও লাখ টাকার স্বপ্ন দেখাও ভালো। কারণ আগে কোনোকিছু করতে হলে স্বপ্ন দেখতে হয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে, আগে সঠিক পরিকল্পনা করতে হবে। ডায়েরিতে সময় ঠিক করে পরিকল্পনা করুন। ধরুন লিখলেন এক বছরের মধ্যে এক লাখ টাকা জমাতে চান। তারপর স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ। দশ মাস পর হিসাব করে নিন পরিকল্পনা ঠিক দিকে বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না।

৩) সময়কে কাজে লাগান, বিনিয়োগ করার আগে ভাবুন– দিনের ২৪ ঘণ্টাকে ভাগ করে নিন। রোজগার করতে হলে পরিশ্রম করতে হবে। কিন্তু তার চেয়েও বেশি করতে হবে সময় পরিকল্পনা। ধরা যাক আপনি চাকরি করেন। মানে ৯-১০ ঘণ্টা আপনি কাজে ব্যস্ত, তারপরের সময়টা কাজে লাগান। ছোট কোনো ব্যবসা থেকে শুরু করুন। টিউশনিও খারাপ অপশন নয়। যে অতিরিক্ত সময়টা কাজ করছেন সেই টাকাটা বিনিয়োগ করুন। ভুলে যাবেন না বিন্দুতে বিন্দুতে সিন্ধু হয়।

৪) চোখ কান খোলা রাখুন, রোজগারের পন্থা আসতে পারে যেকোনো জায়গা থেকে– সব সময় চোখ কান খোলা রাখুন। যেকোনো আলোচনা থেকে বড় কোনো রোজগারের একটা দিশা তৈরি হতে পারে। কখনো ভাববেন না ওটা আমার কাজ নয়। ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকেরবার্গ পর্যন্ত বলেছেন, চোখ কান খোলা না থাকলে তিনি কখনই ফেসবুক খুলতে পারতেন না। ইন্টারনেটটা খুব ভালো করে ঘেঁটে ফেলনু। গোটা দুনিয়াটা লুকিয়ে আছে নেট দুনিয়ায়। সেখান থেকে রোজগারের পন্থা বের করুন। মাথা খাঁটান।

৫) পড়াশোনা, কোর্স করে নিজের যোগ্যতা বাড়ান। এতে পদোন্নতি হবে সবদিকে– পড়াশোনা চালিয়া যান। আপনার যা যোগ্যতা সেটা সবসময় বাড়িয়ে চলুন। বিএ পাস হলে এমএ করুন। মাস্টার ডিগ্রি থাকলে পিএইচডি করুন। যুগপোযোগী কোর্স করুন। এতে একদিকে আপনার সিভি ভারী হবে, আপনার যোগ্যতা বাড়বে। তার চেয়েও বড় কথা আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে। রোজগারের আরো অনেক পথ বাড়বে। বিভিন্ন কোম্পানিতে লোভনীয় চাকরির প্রস্তাব আসবে।

৬) শুধু পছন্দসই চাকরি নয়, চাকরির জায়গাটাকেও গুরুত্ব দিন– শুধু পছন্দসই চাকরিতে পেয়েছেন বলেই আত্মহারা হবেন না। চাকরির জায়গাটাও গুরুত্ব দিন। ধরুন আপনি চলচ্চিত্রশিল্পের সঙ্গে জড়িত। তাহলে চেষ্টা করুন এ কাজের সেরা জায়গায় কাজ করতে। এটা ঠিক যোগ্যতা থাকলে যেকোনো জায়গা থেকে উজ্জ্বল হওয়া যায়। তবে এটাও ঠিক অনেক সময় পেশাদার আবহ আপনার কাছ থেকে সেরাটা বের করে নেয়। তাই একেবারে সেরা জায়গায় কাজ করলে আপনার সেরাটা দেয়া যায়। তাই সেরাটা পাওয়ায় যায়।

৭) একই চাকরিতে বছরের পর বছর আটকে না থেকে ভালো সুযোগ পেলে নতুন জায়গায় যান– বছরের পর বছর একই কোম্পানিতে কাজ করে যাচ্ছেন। শুধু এই কথা ভেবে ‘যাক চলে যাচ্ছে, রোজগার তো করছি, খেতে তো পাচ্ছি’। এভাবে না ভেবে সুযোগ তৈরি করুন, সুযোগ কাজে লাগান। কোম্পানি পরিবর্তন করলে একদিকে মাইনে, পদ বাড়ে, অন্যদিকে বাড়ে আত্মবিশ্বাস, আসে নতুন কিছু করার মানসিকতা। তাই ভালো সুযোগ পেলে নতুন জায়গায় যান।

৮) খরচের জায়গাগুলো একটু ভাল করে খেয়াল করুন– আপনি হয়তো ভালো রোজগার করছেন। কিন্তু মাসের শেষে দেখছেন সেই ভাঁড়ে মা ভবানি অবস্থা। তাহলে এক কাজ করুন দেখুন তো আপনার খরচগুলো ঠিক কোথায় কোথছায় হচ্ছে। আচ্ছা, আপনার লাইফস্টাইলটা কী একটু বড়লোকি হয়ে যাচ্ছে না। হয়তো এর চেয়ে একটু কম খরচ হলেও আপনার চলে যায়। এসবই আপনি বুঝতে পারবেন যদি খরচের জায়গাগুলো একটু লিখে রাখেন। দেখবেন পরে চোখ বোলালে বুঝবেন কোন জায়গাগুলো একটু চেক করতে হবে।

৯) ব্যতিক্রমী কিছু ব্যবসা-বিনিয়োগের কথা ভাবুন– দুনিয়ার বেশির ভাগ বড়লোক মানুষই ব্যতিক্রমী কিছু ভাবনার ওপর ভর করে ব্যবসা করেই নিজেদের ওপরে নিয়ে গিয়েছেন। আচ্ছা, একবার ভাবুন scotch brite-এর কথা। আগে তো আমারা এমনি ন্যাকড়া দিয়েই বাসনপত্র মাজতাম। কিন্তু কেউ একজন ভেবেছিলেন এমন একটা কিছু আনতে হবে যা দিয়ে ন্যাকড়াকে বদলে অভ্যাস করানো যায়। কিংবা ধরুন আজকালকার অনলাইন শপিং। অ্যামাজন, ফ্লিপকার্টের মালিকরাও ব্যতিক্রমী ভেবেছিলেন। আপনিও ভাবুন, পড়ুন, দেখুন। নতুন ব্যবসার ভাবনা লুকিয়ে আছে আমাদের চোখের সামনে, শুধু আমরা সেটা দেখতে পারছি না। এ ভাবনা, আর তারপর সেটাকে বাস্তবে রূপ দেয়ার ওপরেই আপনার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।

১০) টাকার পেছনে ছুটবেন না, টাকাকে নিজের পেছনে ছোটান– বড়লোক হতে গেলে টাকার পেছনে ছুটলেই চলে না। দেখবেন ঠিক পরিকল্পনা করে চলে টাকাই আপনার পেছনে ছুটবে। আচ্ছা একটা ঘটনা বলি বিল গেটসের। বিল গেটস একদিন এক বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেন লেকচার দিতে। অনেক কথা ছাত্রদের সঙ্গে শেয়ার করার পর যখন বিলের বক্তৃতা শেষ হলো, তখন হঠাত্‍ই তার পকেট থেকে ১০ ডলার পরে গেল। বিল কিন্তু সে টাকাটা কুড়ালেন না। সবাই তখন অবাক হয়েছিলেন। বিল কারণ হিসেবে বলেছিলেন, ওই টাকা কুড়াতে যত সময় খরচ হলো, ওই সময় ব্যায় করে তিনি তার চেয়ে বেশি টাকা রোজগার করতে পারেন। নিজেকে এমনভাবেই তৈরি করুন। শুধু টাকার পেছনে ছুটবেন না। সময়কে, কাজকে উপভোগ করে কাজ করুন।