Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

হাইড্রোজেন বোমা কী, যার জন্য কাঁপছে সারাবিশ্ব!

hidozen-bomaউত্তর কোরিয়া হাইড্রোজেন বোমা বিস্ফোরণ নিয়ে সৃষ্ট হয়েছে ধুম্রজাল। দেশটি বলছে এটি হাইড্রোজেন বোমা। কিন্তু জাতিসংঘ বলছে এটি পারমাণবিক বোমা। আবার যুক্তরাষ্ট্র বলছে এই বোমার ক্ষমতা যতটা দাবি করা হচ্ছে আসলে ততটা নয়। পৃথিবীর তিনটি শক্তিশালী বোমা হলো- হাইড্রোজেন, নিউট্রন ও পারমাণবিক বোমা। একেকটি বোমা একেক ধরনের ভয়ঙ্কর।

এবার চোখ বুলানো যাক হাইড্রজেন বোমার গভিরে। এটি থার্মোনিউক্লিয়ার বোমা নামেও পরিচিত। ১৯৫২ সালে সর্বপ্রথম এই বোমর বিস্ফোরণ ঘটানো হয় যুক্তরাষ্ট্রের এনিউইটাকে। এরপরের বছর ১৯৫৩ সালে এ বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় রাশিয়া (তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন)। ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং চীনও হাইড্রোজেন বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। নক্ষত্রের যে প্রক্রিয়ায় আলো তৈরি হয়, হাইড্রোজেন বোমা ঠিক সেই প্রক্রিয়ায় কাজে করে। হাইড্রোজেন বোমায় নিউক্লিয়াস একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় চারটি হাইড্রোজেন নিউক্লিয়াসকে সংযুক্ত করে একটি হিলিয়াম নিউক্লিয়াস গঠন করা হয়।

chardike-ad

আর এই একীভূতকরণের সময় সৃষ্টি হয় প্রচণ্ড তাপ। হাইড্রোজেন বোমার ভেতরে একটি মিনি সাইজের এটমবোমাও থাকে। বিস্ফোরণের আগে বোমার ভেতরে একীভবনের ক্রিয়াটি শুরু করার জন্যই একে ধরে রাখা হয়। মূল বোমাটি বিস্ফোরণের আগেই এটি বিস্ফোরিত হয়। তখন তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যায়। এই তাপমাত্রাতেই ডয়টেরিয়াম ও ট্রিটিয়াম মিলে হিলিয়াম নিউক্লিয়াস সৃষ্টির কাজ করে। তাতে তাপমাত্রা বেড়ে যায় আরো বহুগুণ। এই প্রক্রিয়ায় শুধু হিলিয়ামই উৎপন্ন হয় না, সঙ্গে সঙ্গে নিউট্রনও উৎপাদিত হয়। তখন আবার নিউট্রন বোমার মতো কাজ করতে থাকে এবং একই ভবন ক্রিয়াকে চালু রাখে। তাই এই বোমা পারমাণবিক বোমা থেকে অনেক শক্তিশালী।

হাইড্রোজেন বোমায় হাইড্রোজেনের ডিউটারিযাম ও ট্রাইটিয়াম নামক দুটি আইসোটোপ ব্যবহার করা হয়। হাইড্রোজেন বোমার বিস্ফোরণে লক্ষ লক্ষ ডিগ্রী তাপমাত্রার সৃষ্টি হয়।

এদিকে এক দশকের মধ্যে চতুর্থবারের মত উত্তর কোরিয়া পারমানবিক পরীক্ষা চালানোর পর নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘ বলছে, এর মাধ্যমে দেশটি পারমানবিক অস্ত্র সংক্রান্ত জাতিসংঘের পূর্ববর্তী সব প্রস্তাবনাকে লঙ্ঘন করেছে।

দেশটির ওপর আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। একে বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি হিসেবে বর্ণনা করে নিরাপত্তা পরিষদের বর্তমান প্রেসিডেন্ট এলবিও রোজিলি এ ঘটনার নিন্দা জানান। বর্তমান প্রেক্ষাপটে, দেশটির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নিরাপত্তা পরিষদ শীঘ্রই কাজ শুরু করবে। এর আগে এ ঘটনার নিন্দা জানান জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন।

তবে, উত্তর কোরিয়ার দাবি মোতাবেক ঐ বোমা যথেষ্ট শক্তিশালী কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউজের একজন মুখপাত্র বলছেন, প্রাথমিক বিশ্লেষণে যা বোঝা গেছে, তা দেশটির দাবীর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তবে, পিয়ংইয়ং এর কারিগরি ও সেনা সামর্থ্যের ব্যপারে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানাচ্ছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, উত্তর কোরিয়ার এই উস্কানিমূলক আচরণের পরিণামে দেশটি আন্তর্জাতিক বিশ্বে আরো একা হয়ে পড়বে।