লন্ডনে উত্তর কোরিয়া দূতাবাসের একজন শীর্ষ স্থানীয় কূটনীতিক পক্ষত্যাগ করেছেন বলে খবর বেরিয়েছে। সপরিবারে তিনি তৃতীয় একটি দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইছেন বলেও বলা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে উত্তর কোরিয়ার দূতাবাস থেকে পরিষ্কার কোন তথ্য মেলে নি। ওই কূটনীতিকের মোবাইলে ফোন দিয়েও কোন সদুত্তর মিলছে না। তার মোবাইলে ফোন দিলেই তা চলে যাচ্ছে ভয়েসমেইল ইনবক্সে। ফলে খবরটির সত্যতা নিরূপণ করা যাচ্ছে না।
দক্ষিণ কোরিয়ার পত্রিকা জুংআং ইলবো মঙ্গলবার খবর দিয়েছে যে, উত্তর কোরিয়া দূতাবাসের ওই কূটনীতিক পক্ষ ত্যাগ করে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে তৃতীয় একটি দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইছেন। ওই কূটনীতিকের নাম থাই ইয়ং হো। তিনি লন্ডনে অবস্থতি উত্তর কোরিয়া দূতবাসের একজন কাউন্সেলর ও রাষ্ট্রদূতের ডেপুটি। যদি পত্রিকার ওই খবর সত্য হয় তাহলে এটা হবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্রমাগত নিঃসঙ্গ হয়ে পড়া উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে হাই প্রোফাইলদের অন্যতম একজনের পক্ষত্যাগ। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জুংঅং ইলবো লিখেছে, ওই কূটনীতিক পরিকল্পনা নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন। তিনি তৃতীয় একটি দেশে যেয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে ছিলেন। তবে তিনি তৃতীয় কোন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে পারেন তা পরিষ্কার নয় ওই রিপোর্টে। দক্ষিণ কোরিয়ার মিডিয়ায় শুধু বলা হয়েছে তিনি উত্তর বা দক্ষিণ কোরিয়ায় ফিরছেন না।
তবে থাই ইয়ং হো’র এই পক্ষত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করে নি লন্ডনে অবস্থিত উত্তর কোরিয়া দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা। তিনি শুধু পক্ষত্যাগের এই রিপোর্টকে ‘পুরোপুরি আকস্মিক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি আরও বলেন, আপনারা যদি আমাদের জবাব চান তাহলে আমাদের কথা জানতে হবে। এরপর ওই দূতাবাসে যোগাযোগ করা হলে কোন জবাব মেলে নি। অন্যদিকে থাই ইয়ং হো’র মোবাইল ফোনে কল দিলে তা চলে যাচ্ছে ভয়েস মেইল ইনবক্সে। উল্লেখ্য, এ বছরের শুরুর দিকে উত্তর কোরিয়ার ১২ জন নারী হোটেলকর্মী পক্ষত্যাগের ঘোষণা দেন। তারা চীনে একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করেন। তারপরই থাই ইয়ং হো-এর পক্ষত্যাগের এই খবর এলো। উল্লেখ্য, যে ১২ জন নারী হোটেলকর্মী পক্ষত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ তদন্ত শেষ হয়েছে। তারা সহসাই স্বাভাবিক জীবনে ফিরবেন। বুধবার এ কথা বলেছে দক্ষিণ কোরিয়ার ইউনিফিকেশন মন্ত্রণালয়। জুলাই নাগাদ পক্ষত্যাগ করে দক্ষিণ কোরিয়ায় আশ্রয় নেয়া উত্তর কোরিয়ানের সংখ্যা ৮১৪। বছরে পক্ষত্যাগের ক্ষেত্রে এটা শতকরা ১৫ ভাগ বেশি। চীনের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার যে সীমান্ত রয়েছে পক্ষ ত্যাগের সংখ্যা সবচেয়ে কম।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, বৃটিশ মিডিয়ার কাছে সুপরিচিত থাই ইয়ং হো। পিয়ংইয়ং সফরে কোন বৃটিশ গেলেই দূতাবাসে যোগাযোগের মাধ্যম হতেন তিনি। সিউলে অবস্থিত বৃটিশ দূতাবাস বলেছে, তারা থাই ইয়ং হো-এর পক্ষত্যাগের বিষয়ে সচেতন। তবে এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করবে না। অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা পক্ষত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করতে বা এ নিয়ে আলোচনা করতে রাজি নয়। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ বলেছে, এ ধরনের রিপোর্টের বিষয়ে তারা কোন মন্তব্য করবে না।