তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলের শহর গাজিয়ানটেপে কুর্দিদের এক বিয়ের অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫০ জনে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় গভর্নর জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় শনিবার রাত ১১টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে কমপক্ষে ১০০ জন আহত হয়েছেন।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ১২ জনকে সমাহিত করা হয়েছে। তবে ভয়াবহ ওই বোমা হামলায় অনেক মরদেহ ছিন্ন ভিন্ন হয়ে পড়ায় সেগুলো শনাক্ত করা যাচ্ছে না। ফরেনসিক পরীক্ষা শেষে মৃতদেহগুলো শনাক্ত করে সেগুলো সমাহিত করা হবে।
বিয়ের অনুষ্ঠান যখন প্রায় শেষের দিকে এবং লোকজন রাস্তায় নাচানাচি করছিলেন তখন হঠাৎ বিস্ফোরণে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। এদিকে এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেনি।
তবে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রোসেপ তাইয়েপ এরদোগান এই হামলার জন্য মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) দায়ী করেছেন। স্থানীয় গণমাধ্যম এরদোগানের একটি লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করেছে। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘আইএস , কুর্দি জঙ্গি পিকেকে এবং গত মাসে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থান প্রচেষ্টাকারী যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ফেতুল্লাহ গুলেনের অনুসারিদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।’
এরদোগান হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘আমাদের দেশ ও জাতির পক্ষ থেকে তাদের কাছে একটিই বার্তা- তোমরা সফল হবে না।’
এর আগে তুরস্কের উপপ্রধানমন্ত্রী মাহমেত সিমসেক হামলাটিকে ‘বর্বর’ উল্লেখ করে বলেন, ‘ঈশ্বর চাইলে আমরা এটি কাটিয়ে উঠব।’
সিরীয় সীমান্ত থেকে গাজিয়ানটেপের দূরত্ব ৬৪ কিলোমিটার এবং এলাকাটি কুর্দি অধ্যুষিত। শহরের যে জায়গায় হামলাটি হয়েছে, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীর বসবাস রয়েছে।
বিয়ের অনুষ্ঠানটি রাস্তায়ও ছড়িয়ে পড়ে, এমন সময় বোমা বিস্ফোরণের শব্দটি শহরের সকল প্রান্ত থেকে শোনা যায়। গাজিয়ানটেপে আইএসের সদস্যরা আছে বলে আগেও জানা গিয়েছিল। গত বছর থেকে তুরস্কে আইএস ও কুর্দি জঙ্গিগোষ্ঠীরা একাধিক বোমা হামলা চালিয়েছে। সর্বশেষ গত জুনে ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে এক হামলায় ৪০ জন নিহত হয়।
এর আগে গত মে মাসে কুর্দি অধ্যুষিত গাজিয়ানটেপ শহরে আত্মঘাতী হামলায় দুই পুলিশ সদস্য নিহত হন।