chinaচীনের বেইজিংয়ে ১৯৭০ থেকে ১৯৮০ সালের দিকে বোমার হাত থেকে রক্ষার জন্য লোকজন মাটির নিচে শেল্টার ও বাংকার বানাতো। এই শেল্টার বা বাংকারগুলোতে বসবাসকারীদের বলা হতো শুজু। শুজুদের ইঁদুর প্রজাতিও বলা হয়ে থাকে। এদের সংখ্যা ছিল প্রায় ১০ লাখ। এই শুজু উপজাতিরা এখন না থাকলেও সম্প্রতি বেইজিংয়ের অভিজাত এলাকার বিভিন্ন এপার্টমেন্টের বেইজমেন্টে বসবাসকারী প্রায় ৪০০ জন ব্যক্তির সন্ধান মিলেছে।

চীনের রাজধানী আবাসন কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে শনিবার (১৭ জুন) দেশটির রাষ্ট্রীয় বেতার বার্তায় জানানো হয়, ধনাঢ্য প্রবাসীদের এলাকা হিসেবে পরিচিত বেইজিংয়ের জুলং গার্ডেনে জানালাবিহীন ভূগর্ভস্থ ঘরের খোঁজ পেয়েছেন তারা। এসব ঘর থেকে বাইরে বেরোনোর জন্য শুধু একটা করে পথ রয়েছে। এই ঘরগুলোতে বসবাসকারীদেরও শুজু উপজাতির মানুষদের সাথে তুলনা করা হচ্ছে। তারা কতদিন ধরে এভাবে বসবাস করছেন এ ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি।

chardike-ad

দ্য চায়না ন্যাশনাল রেডিও রিপোর্টে বলা হয়, জুলং গার্ডেনের বাসিন্দারা তাদের আশপাশে বেশ কয়েকজন অপরিচিত মুখ দেখতে পেয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েন। তারপর তারা সন্ধান করে জানতে পারেন তাদের বেইজমেন্টের দরজার পেছনে লুকানো ঘিঞ্জি কতগুলো ঘর রয়েছে। সেগুলোতে লোকজন বসবাস করে আসছে।

এরকমই একটি ভবনের ভূগর্ভে কর্মজীবী লোকদের জন্য থাকার ব্যবস্থা ও ধূমপানের জন্য আলাদা করে স্মোকিং জোন পাওয়া গেছে। এই ভূগর্ভস্থ বাড়িগুলো বৈধ কিনা সে বিষয়টি এখনো পরিষ্কার নয়। তবে এই জায়গাগুলো স্থানীয় সরকারের মালিকানাধীন যা বর্গা দেয়ার জন্য বরাদ্দ ছিল। এর আগে ২০১৫ সালে ১২ লাখ শুজুদের নিরাপত্তার খাতিরে উচ্ছেদ করা হয়েছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাধারণত বাইরে থেকে বেইজিংয়ে পড়তে আসে অনেক শিক্ষার্থী এই বাড়িগুলোতে ভাড়া থাকছেন। কারণ এই বাড়িগুলোতে থাকার খরচ অনেক কম, মাসে সর্বোচ্চ ২০ ডলারের মতো।

সম্প্রতি একটি জরিপে দেখা যায়, গত বছর বেইজিংয়ের বাড়িভাড়া বেড়েছে প্রায় ৪ হাজার ৫৫০ আরএমবি (চীনা মুদ্রা)। ২০১০ সালের তুলনায় বেড়েছে ৬০ শতাংশ। চীনের বাড়ি নিবন্ধন সিস্টেমকে বলা হয় হুকো যার আওতায় সরকার নিজ এলাকায় বসবাস করার জন্য কিছু সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে। বাইরে থেকে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য তাদের হুকো স্থানান্তর করা অনেক খরচের ব্যাপার। এজন্যও অনেকে ভূগর্ভস্থ ঘরে থাকতে বাধ্য হচ্ছে।