ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠাতে কোনো মাসুল লাগবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। মাসুল না নেওয়া এবং অন্যান্য খরচ কমানোর বিষয়ে আলোচনা করতে কাল বুধবার রেমিটেন্স আহরণকারী ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আজ অর্থনীতি বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) সদস্যদের জন্য আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়। বৈদেশিক মুদ্রা নীতি ও বিনিয়োগ বিষয়ক বাংলাদেশ ব্যাংক এ কর্মশালার আয়োজন করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ জামাল বলেন, অভ্যন্তরীণ চাহিদা তেজী রাখতে রেমিটেন্স গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক। সম্প্রতি রেমিটেন্স কমে যাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক অস্বস্তিতে রয়েছে। রেমিটেন্সের কমে যাওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে উৎস দেশগুলোতে অর্থপাচার প্রতিরোধ সংক্রান্ত আইন কঠোরভাবে প্রতিপালন। তবে খরচসহ অন্য যেকারণ রয়েছে তা নিরসনে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠানোর খরচ কমাতে কাল রেমিটেন্স আহরণকারী শীর্ষ ২০ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। বৈঠকে আলোচনার ভিত্তিতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বিভিন্ন সভা সেমিনারের বক্তৃতায় রেমিটেন্স পাঠাতে ব্যাংকগুলো কোনো মাসুল নেবে না বলে ঘোষণা দিচ্ছেন।
সাংবাদিকদের জন্য দিনব্যাপী এ কর্মশালার উদ্বোধন করেন গভর্নর ফজলে কবির। কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী ও এসএম মনিরুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা, সুলতান আহম্মদ, এএনএম আবুল কাশেম, মহাব্যবস্থাপক মাসুদ বিশ্বাস, ড. হাবিবুর রহমান, জীএম আবুল কালাম আজাদ, ইআরএফ সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলাল ও সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ফজলে কবির বলেন, বৈদেশিক বাণিজ্যকে সহজ করতে বৈদেশিক মুদ্রা আইনে অনেক সংশোধন আনা হয়েছে। বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে ব্যবসার সহজীকরণের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মধ্যম আয়ের দেশে যেতে হলে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দরকার। এরজন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বিনিয়োগ বাড়ানো। এতে ব্যাংক খাতকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। তবে সবার আগে দরকার বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ।
আহমেদ জামাল আরও বলেন, পাচারের বিষয়ে সুস্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়না। মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির নামে দাম বেশি দেখিয়ে অর্থ পাচার হচ্ছে কিনা সেটি দেখার দায়িত্ব ব্যাংকের। তবে অভিযোগ পেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিদর্শন করে। ইতোমধ্যে অনেক বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিদর্শন করেছে। আমদানি-রপ্তানীর আড়ালে অর্থপাচার অনেক কঠিন। কারণ ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে এলসি খোলা থেকে শুরু করে পণ্য আসা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক তদারকি করে। আমদানির জন্য অর্থ পাঠিয়ে পণ্য না আনলে তা ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে জানতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।