তামিম-সাকিবের অনবদ্য চেষ্টার পরেও খুব বেশি দীর্ঘ হলো না বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। ম্যাচের প্রথম দিনেই গুটিয়ে গেল টাইগাররা। ম্যাক্সওয়েল, অ্যাশটন অ্যাগার, প্যাট কামিন্স, নাথান লায়ন, জস হ্যাজেলউডের বোলিং এর সামনে মাত্র ২৬০ রানেই থেমে গেল বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস।
অ্যাশটন অ্যাগারের বলে জস হ্যাজেলউডের কাছে ক্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন শফিউল ইসলাম।তিনি করেছিলেন ১৩ রান। মোস্তাফিজুর রহমান কোনো রান না করে অপরপ্রান্তে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে বৃষ্টির কারণে তৃতীয় বা শেষ সেশনের খেলা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকে। এর মাঠে নামার কিছু সময় পরেই বিদায় নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দলের ২৪০ রানের মাথায় সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন তিনি। তখন তার রান ১৮।
আর প্রান্তে ২২ রানে অপরাজিত নাসিরের সঙ্গে যোগ দেন তাইজুল ইসলাম। তবে বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ যখন ৭ উইকেট হারিয়ে ২৪৬ রান। তখনই নিজের ২৩ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরেন নাসির। এর পরে ক্রিজে নামেন শফিউল ইসলাম, তাইজুলের রান তখন ৪। কিন্তু এর পরে তাইজুলের ব্যাট থেকে কোনো রান আসার আগেই ফিরতে হয় তাকে।
এর আগে শেষ সেশনের শুরুতেই বিদায় নেন মুশফিক। চা বিরতির পরে নেমেছেই এলবিডব্লিউ এর ফাঁদে পড়ে সাজ ঘরে ফিরেছে গেছেন মুশফিকুর রহিম। দলের ১৯৮ রানের মাথায় ও ব্যক্তিগত ১৮ রানের মাথায় আউন হন তিনি।
আজ রোববার টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ওপেন করতে নামে তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার।
তবে খুব শিগগিরই আউট হন সৌম্য। নিজের ৮ রান আর দলের ১০ রানের মাথায় বিদায় নেন এই ওপেনার। এরপর এক করে ওই ১০ রানের মাথাই বিদায় নেন ইমরুল ও সাব্বির। দল পড়ে বিপর্যয়ে।
তবে দিনের শুরুতে সেই ১০ রানের মাথায় প্রথম এবং তৃতীয় উইকেটের পতনের পর তবে তামিমের ধৈর্য্যশীল ব্যাটং তার সতীর্থ সাকিবের সতর্ক অচথচ আক্রমণাত্বক ব্যাটিং সেই বিপর্যয়ে কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করে।
কিন্তু ১৫৫ রানের জুটি ভেঙে গেলে ফিরে যান তামিম (৭১)। আর তামিম যাওয়ার কিছু সময় পরেই একপথ ধরেন সাকিবও (৮৪)।
তামিম চলে গেলে ৭৫ রানে অপরাজিত থাকা সাকিবকে সঙ্গ দিতে মাঠে আসেন অধিনায়ক মুশফিকিুর রহিম। তবে সাকিব আর মাত্র ৯ রান যোগ করেইফিরে যাওয়ার পর মুশফিকের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন দীর্ঘদিন পরে দলে ফেরা নাসির হোসেন।
নাসির নামার কিছু সময় পরেই শেষ হয় দ্বিতীয় সেশনের খেলা। তখন বাংলাদেশের রান ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯০।
দিনের শুরুতে প্যাট কামিন্সের দারুন বোলিং এর মুখে দলীয় মাত্র ১০ রানের মাথায় তিন উইকেট হারায় টাইগাররা। তিন উইকেট যাওয়ার পরে ওপেনার তামিম ইকবালের সঙ্গে ক্রিজে আসেন সাকিব আল হাসান। এরপর এই দুই ব্যাটসম্যান দলের শুরুর বিপর্যের সামাল দিতে শুরু করেন।
প্রথম সেশনের খেলা শেষ হওয়া পর্যন্ত টাইগারদের সংগ্রহ ছেল ২৮ ওভার শেষে ৯৬ রান।
এর আগে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ফিরে যান সৌম্য সরকার। দলের ১০ রানের মাথায় প্যাট কমিন্সের বলে পিটার হ্যান্ডসকমকে ক্যাচ দিয়ে সাজ ঘরে ফিরেন সৌম্য। তিনি করেন ৮ রান।
এরপর তামিমের সঙ্গে ক্রিজে যোগ দেন ইমরুল কায়েস। তবে ব্যক্তিগত কোনো রানের আগের সেই প্যাট কমিন্সের বলেই ম্যাথু ওয়েডের তালুবন্দি হয়ে সাজ ঘরে ফেরেন তিনি।
ইমরুলের পরে ক্রিজে নেমেই প্যাট কমিন্সের বলেই ম্যাথু ওয়েডের তালুবন্দি হয়ে সাজ ঘরে ফেরেন সাব্বির রহমান। তিনিও কোনো রান সংগ্রহ করতে পারেন নি।
এদিকে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের মধ্যে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ৫ ওভার বল করে ১৫ রান দিয়ে তুলে নেন এক উইকেট।
অ্যাশটন অ্যাগার ১২ ওভার ৫ বল করে নিয়েছেন দুই মেডেন। আর ৪৬ রানের বিনিময়ে পেয়েছেন ৩ উইকেট।
বাংলাদেশের জন্য ভয়ংকর হয়ে ওঠা প্যাট কমিন্স ১৬ ওভার বল করে পেয়েছেন মাত্র একটি মেডেন। তবে ৬৩ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩টি মূল্যবান উইকেট।
নাথান লায়ন ৩০ ওভার বল করে পেয়েছেন ৬ মেডেন আর ৭৯ রানের বিনিময়ে পেয়েছেন ৩ উইকেট।
আর জস হ্যাজেলউড ১৫ ওভার বল করে নিয়েছেন ৫ মেডেন। ৩৯ রান দিয়ে রয়েছেন উইকেট শূন্য।
শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়াম থেকে খেলাটি ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করছে বিটিভি, গাজী টিভি ও স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ওয়ান।
বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, শফিউল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান।
অস্ট্রেলিয়া একাদশ: ডেভিড ওয়ার্নার, ম্যাট রেনশ, উসমান খাওয়াজা, স্টিভ স্মিথ, পিটার হ্যান্ডসকম, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, ম্যাথু ওয়েড, অ্যাশটন অ্যাগার, প্যাট কামিন্স, নাথান লায়ন, জস হ্যাজেলউড।