মঙ্গলবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) পঞ্চম আসরে ঢাকা ডাইনামাইটস ও রংপুর রাইডার্সের ম্যাচটি ছিল এই আসরের অন্যতম উত্তেজনকার ম্যাচ। শ্বাসরুদ্ধকর সেই ম্যাচে অনেক নাটকীয়তার মধ্যে দিয়ে ৩ রানের জয় পায় রংপুর।
শেষ ওভারে ঢাকার দরকার ছিল ১০ রান। ক্রিজে ছিলেন ক্যারিবিয়ান কাইরন পোলার্ড এবং পাকিস্তানের মোহাম্মদ আমির। বল হাতে এলেন থিসারা পেরেরা। স্ট্রাইকে ছিলেন পোলার্ড।
পেরেরার প্রথম বলে পোলার্ড কোনো রান নেননি। দ্বিতীয় বলে সিঙ্গেল নেয়ার সুযোগ থাকলেও ওই পথে পা বাড়াননি তিনি। তৃতীয় বলেই ছয় হাঁকান ডানহাতি এই ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার। ৪র্থ বলেও রান নিতে গিয়ে নেননি। আর ৫ম বলে বোল্ড আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। আর এতেই তিনি ঢাকার দর্শকদের সমালোচনায় পড়েন। খেলা কার্যত সেখানেই শেষ হয়ে যায়। শেষ বলে জয়ের জন্য তখন ঢাকার দরকার হয়ে পড়ে ৪ রান। কিন্তু আবু হায়দার রনির স্ট্যাম্প ভেঙে রংপুরের জয় নিশ্চিত করেন লঙ্কান অলরাউন্ডার থিসারা পেরেরা।
দলের হারের চেয়ে ভক্ত-সমর্থকদের আক্ষেপ শেষ ওভারে দু’বার সুযোগ পেয়েও পোলার্ড সিঙ্গেল না নেয়ায়। ম্যাচ শেষ হতেই তাই ক্যারিবিোন এই তারকার সমালোচনায় মেতেছেন ঢাকার ভক্ত-সমর্থকরা।
তবে সতীর্থদের পাশে দাঁড়িয়েছেন পেসার আবু হায়দার রনি। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বাঁহাতি এই পেসার জানান, ছক্কা মারার পরিকল্পনা থেকেই হয়ত সিঙ্গেল নেননি পোলার্ড।
এ প্রসঙ্গে রনি বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে কারো সঙ্গে কথা হয়নি। ওর হয়ত পরিকল্পনা ছিল ছক্কা মারার। ওর জন্য দুটি বলই প্রয়োজন ছিল। দুর্ভাগ্যবশত ওর পরিকল্পনা সফল হয়নি। ম্যাচটি আমাদের ফেভারে আসেনি।’
জয়ের খুব কাছে থেকেও হারার কারণ জানতে চাইলে রনি বলেন, ‘আসলে দুর্বলতার কিছু নেই। টি-টোয়েন্টিতে যেদিন যারা ভালো খেলবে তারা জিতবে। এখানে ছোট বড় দলের কিছু নেই। আমরা কিছু ভুল হয়ত করেছি। সেগুলো ঠিক করে নিতে পারলে পরের ম্যাচে ওভারকাম করব।’
পোলার্ড সমর্থন পেলেন প্রতিপক্ষ দল থেকেও। রংপুরের রবি বোপারাও বললেন, পোলার্ডের কৌশল মন্দ ছিল না।
“আমার মনে হয় না সে খুব খারাপ পরিকল্পনা করেছিল। ওই মুহূর্তে আসলে ১০ ও ১১ নম্বর ব্যাটসম্যানকে স্ট্রাইকে পাঠালে ঝুঁকি থাকতে পারে। তার পরিকল্পনা ঠিকই ছিল। কারণ ছক্কা মারার সামর্থ্য তারই আছে। তার নিজের ওপর বিশ্বাস রাখারই দরকার ছিল।”
সেরা পাঁচে ইমরুল রিয়াদ
ক্রীড়া প্রতিবেদক
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) পঞ্চম আসরে সিলেটের পর ঢাকাপর্বও শেষ। টুর্নামেন্টের প্রায় অর্ধেকই শেষ। চলতি আসরে যেটি বারবার ঘুরেফিরে আলোচনায় এসেছে সেটি হলো পাঁচজন বিদেশীর অন্তর্ভুক্তি। তাতে ব্যাটিং-বোলিং সবখানেই এগিয়ে থাকছেন অতিথি খেলোয়াড়েরা। মূলত দেশী খেলোয়াড়েরা কম সুযোগ পাচ্ছেন বলেই পারফরম্যান্সে নজর কাড়তে পারছেন না। এখন পর্যন্ত যে ম্যাচগুলো হয়েছে তাতে সেরা ব্যাটসম্যানের তালিকায় প্রথম পাঁচজনের মধ্যে মাত্র দুইজন বাংলাদেশী। তারা হলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ইমরুল কায়েস ও খুলনা টাইটান্সের মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ছয় ম্যাচে ২০১ রানে সেরা ব্যাটসম্যানের তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে ইমরুল ও ১৮৯ রানে পঞ্চমে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
তবে ব্যাটিংয়ে এগিয়ে থাকতে না পারলেও বোলিংয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশী খেলোয়াড়েরা। সেরা পাঁচ বোলারের মধ্যে তিনজন বাংলাদেশী ও দুইজন বিদেশী। এখন পর্যন্ত ১২ উইকেট নিয়ে সেরা উইকেট শিকারি আবু জায়েদ রাহি। সমান ১১ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে আবু হায়দার রনি ও শহীদ আফ্রিদি।
সেরা পাঁচ ব্যাটসম্যান
নাম দল রান
এভিন লুইস ঢাকা ডায়নামাইটস ২৩৯
রবি বোপারা রংপুর রাইডার্স ২১৯
উপুল থারাঙ্গা সিলেট সিক্সার্স ২০৭
ইমরুল কায়েস কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ২০১
মাহমুদুল্লাহ খুলনা টাইটান্স ১৮৯
সেরা পাঁচ বোলার
নাম দল উইকেট
আবু জায়েদ রাহি খুলনা টাইটান্স ১২
আবু হায়দার রনি ঢাকা ডায়নামাইটস ১১
শহীদ আফ্রিদি ঢাকা ডায়নামাইটস ১১
সাকিব আল হাসান ঢাকা ডায়নামাইটস ১০
সুনিল নারিন ঢাকা ডায়নামাইটস ৮