Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

আবারো কুমিল্লার কাছে ঢাকার হার

comillaদুই হেভিওয়েট দলের লড়াই। সাগরিকার গ্যালারি ভরে যাবে তা আগেই জানা ছিল। গ্যালারিও ভরল, দুই দলের ক্রিকেটাররা উপহার দিল রোমাঞ্চকর ম্যাচ।

কুমিল্লা ও ঢাকার ম্যাচকে ঘিরে ছিল উত্তেজনা। শেষ মুখোমুখিতে শেষ প্রান্তে গিয়ে কুমিল্লার জয় নিশ্চিত হয়। ঢাকার জন্য ম্যাচটি ছিল প্রতিশোধ নেওয়ার ম্যাচ। কিন্তু পারল না বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। দুইবার মুখোমুখি হয়ে দুইবারই সাকিবের মুখের হাসি ম্লান করে দিয়ে জয় উৎসব করল তামিমের কুমিল্লা।

chardike-ad

সাকিবের আমন্ত্রণে ব্যাট করতে নেমে তামিমের দল ৬ উইকেটে করে ১৬৭ রান। জবাবে ১৫৫ রানের বেশি করতে পারেনি ঢাকা। সাকিবের দলের ১২ রানের পরাজয়ে টুর্নামেন্টে সপ্তম জয় পায় কুমিল্লা।

টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে আবারও কুমিল্লাকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন তামিম ইকবাল। বুমবুম তামিম প্রথম ওভারের ষষ্ঠ বলে পান প্রথম বাউন্ডারির স্বাদ। আবু হায়দার রনির করা তৃতীয় ওভারে তিন বাউন্ডারিসহ তামিম তুলেন ১৭ রান। বাঁহাতি এ ওপেনার দ্রুত রান তুললেও লিটন দাস রান পেতে সময় নিচ্ছিলেন। পাওয়ার প্লেতে কুমিল্লা তুলে ৫৪ রান, তামিমের ব্যাট থেকে আসে ৩৫ রান। লিটন করেন ১৭ রান।

রানের চাকা থামাতে ঢাকার দরকার ছিল ব্রেক থ্রু। সাকিব নিজ কাঁধে তুলে নেন দায়িত্ব। সাকিবের করা অষ্টম ওভারের দ্বিতীয় বলে ডিপ স্কয়ার লেগে তুলে মারতে গিয়ে তামিম (৩৭) ক্যাচ দেন মোসাদ্দেকের হাতে। তামিম আউট হওয়ার আগে রান রেট ছিল ৮ এর উপরে। তামিম আউট হওয়ার পর রান রেট নেমে যায় ৭ এর নিচে। বিশেষ করে ইমরুল ও লিটন যখন ব্যাট করছিলেন রানের চাকা অনেকটাই থমকে ছিল! দুজন তৃতীয় উইকেট জুটিতে যোগ করে ২৪ বলে ২৯ রান।

সাকিবের বলে স্ট্যাম্পড হওয়ার আগে লিটন ৩০ বলে ৩৪ রান করেন। তার আউটে ক্রিজে আসেন মারলন স্যামুয়েলস। ১৯তম ওভারে কেভিন কুপারের বলে লং অফে ডেনলির হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে স্যামুয়েলস করেন ৩৯ রান। মূলত তার ব্যাটিংয়ে শেষ দিকে বড় স্কোর পায় কুমিল্লা। ৫ চার ও ২টি ছক্কা হাঁকান ক্যারিবীয়ন তারকা। শোয়েব মালিক ৪ বলে ৯, হাসান আলী ২ বলে ৮, ব্রাভো ৩ বলে ৬ রান করলে ১৬৭ রানের পুঁজি পায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।

প্রথম ১০ ওভারে ৭৭ রান পাওয়া কুমিল্লা শেষ ১০ ওভারে করে ৯০ রান। বিপিএলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকার করা কেভিন কুপার আজ প্রথম খেলতে নেমে ৩ উইকেট পেলেও ছিলেন খরুচে। ৪ ওভারে দেন ৪২ রান।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় ঢাকা। ফর্মে থাকা এভিন লুইস দ্বিতীয় ওভারে স্ট্যাম্পড হন। শোয়ের মালিকের প্রথম বলে চার মেরে দ্বিতীয় বলে ডাক করেন লুইস। লিটন বল ধরে স্ট্যাম্প ভাঙেন দ্রুত। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, স্ট্যাম্প ভাঙার সময় লুইসের পা শূন্যে ছিল। টিভি আম্পায়ার গাজী সোহেল প্রায় ৪ মিনিট সময় নিয়ে লুইসের স্ট্যাম্পিংয়ের সিদ্ধান্ত দেন।

লুইসের উইকেট তুলে কুমিল্লা চেপে ধরে ঢাকার দুই ব্যাটসম্যান ডেনলি ও সাদমানকে। ৫ ওভারে তাদের রান ছিল মাত্র ৩৩। পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে এক চার ও এক ছক্কায় ১২ রান তুলে ডেনলি সেই রান নিয়ে যান ৪৫ এ। পরের ওভারে সামদান ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হলে ক্রিজে আসেন সাকিব।

কিন্তু বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। ব্রাভোর করা প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে জায়গা করে মারতে গিয়ে সাকিব মিড অফে তামিমের হাতে ক্যাচ দেন ৭ রানে। ওভারের শেষ বলে ব্রাভো আবারও ধাক্কা দেন ঢাকা শিবিরে। এবার তার শিকার সুনিল নারিন। স্লোয়ার বলে তুলে মারতে গিয়ে ফিরতি ক্যাচ দেন নারিন। ঢাকার রানের চাকা সচল রাখা জো ডেনলিকে এক ওভার পর সাইফ উদ্দীন বোল্ড করে ঢাকা শিবিরে বড় ধাক্কাটি দেন। ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৩৯ বলে ৪৯ রান করেন ডেনলি।

১৮ রানের ব্যবধানে গুরুত্বপূর্ণ ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ঢাকা। খাদের কিনারা থেকে দলকে টেনে তুলেন কাইরন পোলার্ড ও মোসাদ্দেক। ২৭ বলে দুজন করেন ৩৬ রান। সাতে নামা মোসাদ্দেক ব্যাট হাতে ১৩ বলে ১৭ রান করে ভালো ইনিংসের ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। কিন্তু ভুল বুঝাবুঝিতে ভেঙে যায় ঢাকার জয়ের স্বপ্ন।

শেষ ৪ ওভারে ৫২ রান প্রয়োজন ছিল ঢাকার। হাসান আলীর করা ১৭তম ওভারে প্রথম তিন বলে তিন রান নেন পোলার্ড ও মোসাদ্দেক। চতুর্থ বলে মোসাদ্দেক ড্রাইভ করে কভারে তামিমের হাতে বল দেন। পোলার্ড রান নিতে চাইলেও মোসাদ্দেক রাজী ছিলেন না। কিন্তু ততক্ষণে পোলার্ড মাঝ উইকেটে। নিরুপায় হয়ে উইকেট বিসর্জন দেন মোসাদ্দেক। কিন্তু সেই পোলার্ডও টিকেননি। ব্রাভোর করা পরের ওভারে ডিপ মিড উইকেটে পোলার্ড ক্যাচ দেন সোলোমান মিরের হাতে।

পরের ব্যাটসম্যানরা আর পারেননি। রান আউট হয়েও বেঁচে যাওয়া কুপার ও জহুরুল শেষ চেষ্টা চালালেও হাসান আলী ও সাইফ উদ্দীনের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পেরে উঠেনি। ফলে শেষ আক্ষেপ নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাদেরকে।

বল হাতে কুমিল্লার সেরা বোলার ডোয়াইন ব্রাভো। ৩১ রানে ৩ উইকেট নেন ব্রাভো।