Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

আড়াই টাকার নোট!

taka-2.5আড়াই টাকার নোট! শুনলেই ভ্রু কুঁচকে আসবে যেকারো। বাংলাদেশে এক থেকে এক হাজার পর্যন্ত মোট ৯টি নোট চালু রয়েছে এবং তা সর্বত্র প্রচলিত। কিন্তু আড়াই টাকার নোট? এটি কি বাংলাদেশি নোট? এমন প্রশ্ন আসাটাই স্বাভাবিক।

অবাক হলেও সত্য এমন নোট বাংলাদেশেই প্রচলিত ছিলো। ১০০ বছর আগে ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতবর্ষে প্রচলন করা হয়েছিল এমনই এক নোট। নোটটির মূল্য ছিল দুই রুপি আট আনা, অর্থাৎ আড়াই টাকা। সে সময় এই আড়াই টাকার বিনিময় মূল্য ছিল এক মার্কিন ডলারের সমান।

chardike-ad

ব্রিটিশ সরকার প্রচলিত নোটটি ছিল একেবারেই সাদামাটা। এক টুকরা কাগজের একেবারে ওপরে লেখা ছিল ‘ভারত সরকার’। এর নিচে লেখা ছিল ‘চাহিবা মাত্র এর বাহককে দুই রুপি আট আনা দিতে বাধ্য থাকবে’। নোটের বাঁ দিকে ওপরে পঞ্চম জর্জের ছবি এবং নিচে তৎকালীন ব্রিটিশ অর্থ সচিব এম এম এস গুব্বের স্বাক্ষর ছিল।

তবে কী কারণে বাজারে এই নোট আনা হয়েছিল, তার সঠিক তথ্য জানা যায়নি। কেউ বলেন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় রুপার চাহিদা বেড়ে যায়। ফলে দাম বাড়ে ধাতুর। এ অবস্থায় রুপার আধুলি, সিকি ও দুই আনার মুদ্রা তৈরি করা লাভজনক ছিল না। এ ছাড়া কালোবাজারিরা রুপা গোপনে মজুদ করতো। পরিস্থিতি সামাল দিতে তাই আড়াই টাকার নোট আনা হয় বাজারে।

কেউ কেউ আবার বলেন, ১৯১৪ সালে বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রূপার ঘাটতি দেখা দেয় ভারতে। আর ওই বছর ২২ সেপ্টেম্বর জার্মান রণতরি তৎকালীন মাদ্রাজ বন্দরে ভিড়ে ব্রিটিশদের মালিকানাধীন বর্মা অয়েল কোম্পানির স্টোরেজ ট্যাঙ্কে হামলা চালায়। তার পরই ব্রিটিশদের চালু করা ‘পেপার মানি’, ও ‘কারেন্সি নোটে’র উপর আস্থা হারিয়ে রৌপ্য মুদ্রা মজুত করতে থাকেন ভারতের একটা বড় অংশের মানুষ।

শুধু তাই নয়, রূপার এক আনা, আধ আনা কয়েন তৈরির ব্যয়ভার সামলাতেও হিমশিম খাচ্ছিল ব্রিটিশ সরকার। রূপার এই সঙ্কট থেকে ঘুরে দাঁড়াতেই দু’টাকার সঙ্গে আট আনাকে মিশিয়ে ব্রিটিশ সম্রাট জর্জ ভি’র আমলে ১৯১৮ সালে আড়াই টাকা নোট ভারতের বাজারে নিয়ে আসেন তারা।

১৯২৬ সালের জানুয়ারি মাসে ভারতে এক টাকা ও আড়াই টাকার নোট বাজার থেকে তুলে নেয় ব্রিটিশরা। ১৯৪০ সালে এক টাকার নোটকে বাজারে পুনরায় ফিরিয়ে আনলেও আড়াই টাকার নোটকে ফেরায়নি তারা। এখন এটি শুধুই ইতিহাস।

অর্থসূচক এর সৌজন্যে