Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

মালয়েশিয়ায় ইন্সট্যান্ট কন্স্যুলার সেবা বন্ধ, বিপাকে প্রবাসীরা

malaysiaজটিলতা যেন পিছু ছাড়ছে না মালয়েশিয়া প্রবাসীদের। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ মিশনের ইন্সট্যান্ট কন্স্যুলার সেবা বন্ধ হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন মালয়েশিয়া প্রবাসীরা।

জানা গেছে, দূতাবাসের ইন্সট্যান্ট কন্স্যুলার সেবার মধ্যে ছিল বয়স, পুরাতন পাসপোর্ট নম্বর না থাকা এবং নামের সংশোধন। সেবাটি এমআরপি পাসপোর্ট নির্মাণের শুরু থেকে দিয়ে আসছিল হাইকমিশন। কিন্তু বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের হঠাৎ সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা।

chardike-ad

হাতের লেখা পাসপোর্টের সঙ্গে নতুন এমআরপির নাম বা বয়সে মিল না থাকা এবং বয়স ৪৫-এর বেশি থাকার কারণে ভিসার জন্য মালয়েশিয়ান ইমিগ্রেশন থেকে ফেরত আসতে হয় প্রতিনিয়ত। এই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ মিশন দীর্ঘদিন এমআরপি পাসপোর্ট ৪৪ নম্বর পৃষ্ঠায় এন্ডোজমেন্টের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক সমাধান করে আসছিল।

কিন্তু গত ১ জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে উন্নত সেবা প্রদান ও সহযোগিতার লক্ষ্যে ঢাকা আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিস থেকে প্রজেক্ট ডিরেক্টর, এডিশনাল প্রজেক্টর ডিরেক্টরসহ ২৪ জনের প্রতিনিধি দল মালয়েশিয়ায় আসেন। এ সময় ৪৪ নম্বর পৃষ্ঠায় এন্ডোজমেন্ট করে মিশনের ইন্সট্যান্ট কন্স্যুলার সেবার বিষয়টি ঢাকায় ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরকে অবহিত করে। পাসপোর্ট, ভিসা ও পরিদর্শন বিভাগের পরিচালক মো. সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠি গত ১৮ জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসে পাঠালে ২৫ জানুয়ারি থেকে ইন্সট্যান্ট কন্স্যুলার সেবা বন্ধ করে দেয় মিশন কর্তৃপক্ষ।

malaysiaএ সময় সংশোধনের জন্য নতুন নিয়ম করা হয়েছে ১০০ টাকার স্ট্যাম্পের ওপর প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে এফিডেভিট, ‘ল’ মিনিস্ট্রি ও ফরেন মিনিস্ট্রি থেকে সত্যায়িত করে অর্জিনাল কপি আনতে হবে এবং নতুন করে রি-ইস্যুর জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদনের ৪০ থেকে ৪৫ দিন পর নতুন পাসপোর্ট হাতে পাবে। তাহলেই সমস্যার সমাধান হবে। নিয়মের এ বেড়াজালে সাধারণ প্রবাসী শ্রমিকদের পক্ষে একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

এ ব্যাপারে মিশনের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, ডিআইপির কোনো কর্মকর্তা আমাদের মিশনের সঙ্গে এ বিষয়ে কোনো আলাপ-আলোচনা করেনি। তারা নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদেরকে অবহিত করেছেন। আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করি কিভাবে একজন সাধারণ প্রবাসী শ্রমিকের সমস্যার সমাধান করতে হয় সেটা আমাদের থেকে ভালো কেউ জানে না।

এর আগে গত বছর বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের কর্ড-১/৮৬/২০০৯/১৩৫৫(৬৯), ব,পা,অ,/প্র:১/২৪৪/২০১৫/২৪৩৬(৭) স্মারকের সঙ্গে প্রবাসে পাসপোর্ট আবেদনকারীদের কোনোটাই মিল থাকে না।

প্রবাসীদের ভাষ্যমতে, আমরা প্রবাস থেকে দেশে রেমিট্যান্স পাঠায়। আর এই রেমিট্যান্সে দেশ আজ উন্নতির দিকে যাচ্ছে। রেমিট্যান্সের দিক বিবেচনা করে বয়স ও নাম জটিলতার সমস্যার সমাধানে দূতাবাস তথা সরকার যেন এগিয়ে আসে। তা-না হলে রেমিট্যান্স যোদ্ধারা মালয়েশিয়া সরকারের ঘোষিত রি-হিয়ারিং প্রোগ্রামের আওতায় বৈধ হওয়া থেকে বাদ পড়ে যাবে।

এদিকে দেশটিতে বসবাসরত অবৈধ বিদেশি কর্মীদের বৈধকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে বছরজুড়ে ছিল আলোচনা। গেলো বছর রি-হিয়ারিংয়ের আওতায় প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ অবৈধ বাংলাদেশি নিবন্ধিত হয়েছেন। এর মধ্যে এক লাখ ৬৫ হাজার কর্মী ভিসা পেয়েছেন এবং নিবন্ধিত প্রায় তিন লাখ ৩০ হাজার শ্রমিকের ভিসাসহ বৈধতার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে দেশটির অভিবাসন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, নাম ও বয়স জটিলতা ছাড়াও নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষে ইমিগ্রেশন ফিঙ্গারিং এর পর লেভি পরিশোধ করে এক বছর ধরে ভিসা প্রাপ্তির অপেক্ষায় রয়েছেন অনেকে।

এছাড়া নাম ও বয়স জটিলতার কারণে কমপক্ষে ৫৫ হাজার কর্মী ভিসা পাননি। তারা নানা সমস্যায় পড়েছেন। তাদের ভাগ্যে কী ঘটতে যাচ্ছে, ওইসব কর্মীর জটিলতা নিরসনের সুযোগ পাবেন না-কি দেশে ফিরতে হবে তা নিয়ে ২৯ জানুয়ারি পুত্রাযায়া ইমিগ্রেশনের বড় কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন দূতাবাসের কর্তারা।

বৈঠকে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা সাফ জানিয়েছেন, বয়স এবং নাম জটিলতায় যারা রয়েছেন তারা বৈধতার আওতায় আসবেন না কারণ জটিলতা সৃষ্টি করেছেন আবেদনকারীরা। তবুও হাল ছাড়েননি দূতাবাসের কর্তারা। তারা প্রস্তাব রেখেছেন তাদেরকে বৈধ করে নিতে।

এদিকে, অবৈধ প্রবাসীদের নির্ধারিত সময়ে যারা রেজিস্ট্রেশন করে নিবন্ধনের আওতায় আসতে পারেননি তারা পড়েছেন সমস্যায়। অভিবাসন বিভাগ পর্যবেক্ষণ করছে অবৈধদের স্বেচ্ছায় দেশ ত্যাগের। এর মধ্যে কেউ গ্রেফতার হলে দেশটির অভিবাসন আইন-অনুযায়ী, ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট ১৯৫৯/৬৩-এর ধারা ৫৫-বি এর অধীনে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার হাজার রিঙ্গিত জরিমানা বা ১২ মাস পর্যন্ত জেল অথবা উভয় দণ্ড দেয়ার বিধান রয়েছে।

সৌজন্যে: জাগো নিউজ