মন্ত্রী হওয়ার পরদিনই ইন্টারনেটের দাম কমানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তবে ক্ষমতায় আসার এক মাস পর ইন্টারনেটের দাম না কমাতে পারার কারণ জানালেন তিনি। বুধবার রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের কম্পিউটার সিটি সেন্টারে একটি অনুষ্ঠানে তিনি এ কারণ জানান।
কম্পিউটার সিটি সেন্টারে পাঁচ দিনব্যাপী দেশের বৃহৎ ডিজিটাল আইসিটি ফেয়ার-২০১৮ এর উদ্বোধনকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমি ইন্টারনেটের দাম কমানোর কথা বলি এটা সত্যি। পৃথিবীতে আমরা নিচের দিক থেকে সবচেয়ে কমদামে ইন্টারনেট ব্যবহার করার মধ্যে দ্বিতীয়তে রয়েছি।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালে ১ জিবিপিএস ইন্টারনেটের দাম ছিল ২৭ হাজার টাকা। আমি শেষ যে ফাইলে সই করেছি তাতে ১ জিবিপিএস ইন্টারনেটের মূল্য ছিল ৩১০ টাকা। সরকারের পক্ষ থেকে এর থেকে বড় ছাড় দেয়া কঠিন। সমস্যাটা যেখানে রয়েছে সে জায়গাটা হলো, সরকারের পক্ষ থেকে ইন্টারনেটের দাম কমানোর সুফলটা এখনো জনগণের কাছে পৌঁছায়নি।
ইন্টারনেটের দাম না কমানোর মূল দুইটি কারণ রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এর মধ্যে অন্যতম হলো আমরা ব্যান্ডউইথ প্রদান করি সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে। কক্সবাজার, চট্টগ্রাম এবং ঢাকায় ক্যাবলের মাধ্যমে ইন্টারনেটে পৌঁছানো হয়। কিন্তু ঢাকা শহরের ভেতরে যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন অথবা ঢাকার বাইরে যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তারা কোনো প্রতিষ্ঠানের ক্যাবল লাইন ব্যবহার করেন।
ক্যাবল লাইন ব্যবহার করার জন্য ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডেরদেরকে একটা মূল্য দিতে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই মূল্যটার কারণে ইন্টারনেটের গ্রাহক পর্যায়ের দাম বেড়ে যায়। আমরা চেষ্টা করছি, গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়ার এই ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেলকে সহজ করতে। এতে করে ইন্টারনেটের মূল্য অনেকাংশে কমে যাবে।
ইতোমধ্যে সরকার দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে ফাইবার অপটিক ক্যাবলের মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়ার প্রকল্প হাতে নিয়েছে জানিয়ে মোস্তফা জব্বার বলেন, ২০১৮ সালের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন হবে। এই প্লাটফর্মটি তৈরি হলে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের দাম আরো কমবে।
তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি পৃথিবীর সবচেয়ে কমদামে ইন্টারনেট যেন ব্যবহার করতে পারি। এই লড়াই আমার একার নয়, আপনাদেরও।
তিনি সবার কাছে কম দামে ইন্টারনেট পরিষেবা দেয়ার আশ্বাস দিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, আপনাকে দুইটি বড় দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। একটি হলো ইন্টারনেটের মূল্য কমানো এবং অন্যটি ইন্টারনেটে সবাইকে নিরাপদ রাখা। আমি বিষয় দুটো আন্তরিকভাবে সমাধান করার চেষ্টা করছি।