সারা বিশ্বেই দৈনন্দিন জীবনযাপনের অংশ হয়ে উঠছে ইন্টারনেট। ইন্টারনেটসেবা দিতে চালু রয়েছে কোটি কোটি ব্যয়বহুল সার্ভার। তবে উদ্ভাবকরা এ সমস্যা সমাধানে নিয়ে এসেছেন পিয়ার টু পিয়ার ইন্টারনেট পদ্ধতি। এতে কোনো ওয়েবসাইট কিংবা তথ্য খুঁজে বের করতে সার্ভারের বদলে সুনির্দিষ্ট যন্ত্রে সংযোগ করতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। খবর টেকগিগের।
প্রযুক্তিটি উদ্ভাবন করা হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘পারসুট’ প্রকল্পের অর্থায়নে। প্রচলিত ইন্টারনেট প্রটোকলের (আইপি) মাধ্যমে স্বতন্ত্র কম্পিউটার নেটওয়ার্কগুলো ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত হয়। তবে পারসুট ইন্টারনেট হবে আরো সামাজিক যোগাযোগনির্ভর ও অধিকতর বুদ্ধিমান। এতে কোনো সার্ভারে সরাসরি প্রবেশ না করেই তথ্য আহরণে সক্ষম হবেন ব্যবহারকারীরা। এ পদ্ধতিতে প্রতিটি কম্পিউটারই বিশেষ ব্যবস্থার আওতায় যেকোনো অনলাইন কনটেন্ট কপি করে অন্য গ্রাহকদের ব্যবহারের জন্য তা উন্মুক্ত করে দিতে পারবেন। এতে তথ্য বিশেষ কোনো স্থানে না থেকে ছড়িয়ে পড়বে ইন্টারনেটের বিভিন্ন দিকে।
বর্তমানে পিয়ার টু পিয়ার পদ্ধতিতে কাজ করে ফাইল শেয়ারিং সাইট। তবে পারসুট সেটিকে ইন্টারনেটজুড়েই ছড়িয়ে দিতে চাইছে। আবার এ মাধ্যমে সার্ভার অচল হয়ে পড়লেও তথ্যপ্রবাহে কোনো বাধা সৃষ্টি হবে না। অনলাইনে থাকা ব্যক্তিগত তথ্যও তাতে নিরাপদে রাখা সহজ হয়ে যাবে। গবেষকরা জানান, তারা ওয়েব ঠিকানার (ইউআরএল) বদলে তথ্যের কার্যকর ও সমবণ্টন নিশ্চিত করার দিকেই মনোযোগ দিচ্ছেন। তাতে অনলাইন কিংবা কম্পিউটারে থাকা ডিজিটাল কনটেন্ট অধিকতর নিরাপদ হবে। পাশাপাশি প্রত্যেক তথ্যের প্রতিটি বিট আলাদা করে শনাক্ত করার প্রচেষ্টাও চালাচ্ছেন তারা। এজন্য প্রতিটি ডাটা যে বৈধ উত্স থেকে আসছে, তা নিশ্চিত করতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে।
পারসুটের সঙ্গে যুক্ত ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় কম্পিউটার ল্যাবের জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. ডার্ক ট্রসেন জানান, অনলাইন সার্চ ইউআরএলের (ইউনিফর্ম রিসোর্স লোকেশন) বদলে ইউআরআই (ইউনিফর্ম রিসোর্স আইডেন্টিফায়ার) খুঁজবে। সহজভাবে বলতে গেলে, প্রতিটি তথ্য কিংবা কনটেন্ট থাকবে একেবারেই সুনির্দিষ্ট। কাজটি করবে ইউআরআই। গবেষকদের দাবি, তাদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তিটি ব্যাপক আকারে বাস্তবায়ন করা হলে বর্তমান ইন্টারনেটব্যবস্থা আমূল বদলে যাবে। পাশাপাশি ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন ও ব্যবহার ব্যয় নেমে আসবে নাটকীয় হারে। সূত্রঃ বণিকবার্তা।