Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

অফিস দালাল মুক্ত করায় পাসপোর্ট কার্যালয়ের কর্মকর্তাকে কুপিয়ে জখম

kabirবগুড়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক (এডি) সাজাহান কবিরকে অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের কৈগাড়ি এলাকায় মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা এই ঘটনা ঘটায়।

গুরুতর জখম অবস্থায় সাজাহান কবিরকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

chardike-ad

পাসপোর্ট অফিস ঘুষ, দুর্নীতি ও দালাল মুক্ত করার কারণে পাসপোর্টের দালালরা এই হামলার সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে পুলিশ জানতে পেরেছে। হামলাকারীদের ধরতে ইতোমধ্যে অভিযান শুরু করেছে সদর থানা ও গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক দল।

জানা গেছে, বগুড়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক সাজাহান কবির বাড়ি যাওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে রিকশাযোগে শহরতলীর শাকপালা যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে কৈগাড়ি এলাকায় বিভাগীয় বন অফিসের সামনে মোটরসাইকেলযোগে তিন দুর্বৃত্ত তার গতিরোধ করে। তিনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুর্বৃত্তরা রাম দা দিয়ে তার ডান পায়ে কোপ দেয়। এসময় তিনি রিকশা থেকে নেমে দৌঁড়ে বন অফিসের ভেতরে একটি কক্ষে ঢুকে দরজা আটকিয়ে দেয়। দুর্বৃত্তরা ওই কক্ষের দরজা ভেঙে তাকে বের করে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। এসময় বন অফিসের কর্মচারীরা পার্শ্ববর্তী মসজিদে নামাজ আদায় করছিলেন।

এ দৃশ্য দেখে মসজিদ থেকে লোকজন এগিয়ে আসলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়া হয়।

হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, সাজাহান কবিরের ডান পায়ের হাটু, ডান হাত এবং মাথায় আঘাতে চিহ্ন রয়েছে। এরমধ্যে হাটু এবং হাতের জখম গুরুতর। তবে তার জীবননাশের শঙ্কা নেই।

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আব্দুল আজিজ মন্ডল জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সহকারী পরিচালক সাজাহান কবির তাকে জানিয়েছেন গত মঙ্গলবার স্থানীয় কয়েকজন যুবক অফিসে গিয়ে তাকে জানান, আগের সহকারী পরিচালক বেকার যুবকদেরকে বিভিন্ন কাজ করিয়ে নিয়ে প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা দিতেন। আপনাকেও প্রতিদিন ১০ হাজার করে দিতে হবে। এই প্রস্তাবে তিনি রাজি না হলে তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়।

উল্লেখ্য, সাজাহান কবির ৬-৭ মাস আগে বগুড়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে যোগদানের পর থেকে অফিস থেকে দালালদের বিতারিত করেছেন। পাসপোর্ট করতে আসা লোকজনের কাছে অফিসের কোনো কর্মচারী ঘুষ দাবি, ঘুষ না পেয়ে খারাপ ব্যবহার করলে তাদের ব্যাপারে অভিযোগ জমা দেয়ার তিনি অফিসের খোলা জায়গায় স্বচ্ছ কাচের বাক্স স্থাপন করেছেন। আর এসব কারণে পাসপোর্ট অফিসের কিছু কর্মচারী ও দালালরা ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে সহকারী পরিচালকের উপর। আর এই ক্ষোভ থেকে হামলা করা হয় বলে পুলিশের ধারণা।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তী জানান, পাসপোর্ট অফিস দালাল মুক্ত করার কারণে দালালরা সংঘবদ্ধ হয়ে সাজাহান কবিরের উপর হামলা করে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।

সর্বশেষ খবরে জানা গেছে বিকেলে হেলিকপ্টার যোগে সহকারী পরিচালক সাজাহান কবিরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।