রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সময়সীমা আছে কি না সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদ আলীর কাছে একজন সাংবাদিক জানতে চান। ওই সাংবাদিকের আরো প্রশ্ন ছিল, দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গাদের স্থায়ীভাবে থাকতে দেওয়ার কোনো সুযোগ আছে কি না। জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সময়সীমা দেওয়া কঠিন। অনুকূল পরিবেশ পেলেই তারা ফিরে যাবে। তাদের বাড়িঘর থাকতে হবে। ভারত, চীন, জাপান, ইন্দোনেশিয়া এগিয়ে এসেছে। বাড়িঘরসহ অবকাঠামো তৈরি করছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়, স্বাস্থ্যসেবা কাঠামো তৈরি করছে। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে আশ্রয় দেওয়ার প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নতুন করে আর কোনো ব্যক্তি নিতে পারি না। আমরা এ ধরনের চিন্তাকে উৎসাহিত করছি না।’
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা মুসলমানের ঢলের কথা বাংলাদেশ তুলে ধরেছে। আমরা তাদের এই সংকটের দ্রুততম সমাধান নিশ্চিত করতে আমাদের সহযোগিতা নিশ্চিত করেছি। সম্প্রতি সই হওয়া প্রত্যাবাসনচুক্তির বিষয়েও ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা লগ্ন থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক জোরালো। প্রথম স্বীকৃতি দেওয়া দেশগুলোর মধ্যে রাশিয়া অন্যতম। রাশিয়া বাংলাদেশ পুনর্গঠনে অর্থনৈতিকসহ নানাভাবে সহযোগিতা করেছে। রুশ সেনারা ১৯৭২ সালে চট্টগ্রাম বন্দর এলাকা থেকে মাইন ও ডুবে থাকা জাহাজ মুক্ত করেছে। বাংলাদেশ যেভাবে এটি মনে রেখেছে, তাতে রাশিয়া কৃতজ্ঞ। তিনি বলেন, ‘আমরা বিদ্যমান চুক্তিগুলোর পর্যালোচনার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতার খসড়া নিয়ে আলোচনা করেছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সব বিষয়েই আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ বেশ খুশি। রাশিয়ার সহায়তায় বাংলাদেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়িত হচ্ছে। বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক বিষয়ে আমরা আমাদের সম্পর্ক আরো জোরালো করতে চাই।’ মন্ত্রী আরো বলেন, ‘বাণিজ্য সম্পর্কিত বিষয়ে সহযোগিতার ব্যাপারে আমরা সম্প্রতি চুক্তি সই করেছি। আমরা ঢাকায় এর প্রথম বৈঠক আয়োজন করতে চাই। এটি শিগগিরই চূড়ান্ত হবে। আমরা ইউরেশিয়ান অর্থনৈতিক ইউনিয়নেও যোগ দিতে চাই। রাশিয়া এ ব্যাপারেও জোরালো সমর্থন দিয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ গ্যাজপ্রমের সহায়তা নিচ্ছে। ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তির পর আমরা আমাদের ব্লকগুলোতে গ্যাস অনুসন্ধান করব।’