Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

চুপচাপ শুয়ে বসেই দিন কাটছে অভিনেতা সালেহ আহমেদের

saleh‘আগের মতোই আছেন। এখন একা উঠে বসতে পারেন না। কথাও খুব কম বলেন। চুপচাপ থাকেন। শুয়ে বসেই দিন কেটে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে উঠিয়ে বসিয়ে দিলে কিছুক্ষণ বসে থাকেন, চারপাশে তাকিয়ে দেখেন।’ আলাপকালে কথাগুলো বলেন গুণী অভিনেতা সালেহ আহমেদের স্ত্রী মুসলিমা আহমেদ।

প্রায় আট বছর আগে স্ট্রোক করেন টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের বর্ষীয়ান অভিনেতা সালেহ আহমেদ। তারপর অনেকটা সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরেন। কিন্তু এরপর থেকে শারীরিক নানা সমস্যা দেখা দিতে থাকে। বিশেষ করে গত বছরের শেষের দিকে ঠান্ডাজনিত কারণে আবারো অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্বাভাবিকভাবে এখন কথা বলার ক্ষমতাও অনেকটা হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। এছাড়া ফুসফুসে পানি জমা হওয়ায় আরো সমস্যা বেড়েছে। বর্তমানে নগরীর উত্তরখানের নিজ বাসায় অসুস্থ অবস্থায় নীরবে দিন যাপন করছেন এই অভিনেতা।

chardike-ad

সালেহ আহমেদের স্ত্রী মুসলিমা আহমেদ বলেন, ‘গত বছর ঠান্ডা থেকে বেশি সমস্যা হয়েছে। একটু জেদি মানুষ তো, বাইরে ঠান্ডার মধ্যে বসে থাকত। বাইরে প্রচুর বাতাস থাকা সত্ত্বেও বাইরে পাতা চেয়ারেই বসে থাকত। মানুষের সঙ্গে কথা বলতে চাইত। মূলত সেখান থেকে সমস্যাটা বেড়ে যায়। এরপর গত ফেব্রুয়ারি মাসে ফুসফুসে পানি জমে। যদিও পানি বের করা হয়েছে। কিন্তু শারীরিকভাবে এখন খুব দুর্বল। ডাক্তার ওষুধ দিয়েছেন। পুষ্টিকর খাবার খেতে বলেছেন। অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। আমরা ফলো আপ করে যাচ্ছি।’

অনেক দিন অভিনয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। সালেহ আহমেদের বন্ধু-বান্ধব কিংবা শোবিজ অঙ্গনের লোকজন আপনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন কিনা জানতে চাইলে মুসলিমা আহমেদ বলেন, ‘আসলে সবাই তো অনেক ব্যস্ত সময় পার করেন। আর ঢাকা শহরে কতটা জ্যাম তা তো জানেন-ই। এখন কে কার কতটা খবর নিতে পারে! আমরাই তো আমাদের আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে ততটা যোগাযোগ করতে পারি না। এখন মোবাইল ফোনে যতটা যোগাযোগ হয় আর কি। আসলে এ বিষয় নিয়ে আমাদের কোনো আক্ষেপ নেই। কিছুদিন আগে জি এম সৈকত এসেছিলেন দেখতে। আমরা তাকে বলেছি, আমাদের সামর্থ্য যতটুকু আছে তা দিয়ে আমরা চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারব। কারণ কেউ অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করবেন তা ‍উনি (সালেহ আহমেদ) পছন্দ করেন না। আর আমাদের এ ধরনের কোনো সমস্যাও নেই। আপনারা শুধু দোয়া করবেন।’

৩-৪ মাস পরপর সালেহ আহমেদকে চেকআপ করাতে হয়। নগরীর অ্যাপোলো হাসপাতালের কিডনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রানার তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এই অভিনেতা।

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে সালেহ আহমেদের জন্ম। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরে চাকরির পাশাপাশি ময়মনসিংহে অমরাবতী নাট্যমঞ্চের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। স্বাধীনতার আগে বিটিভিতে নিয়মিত অভিনয় করতেন। ১৯৯১ সালে অবসরে যাওয়ার পর নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। হুমায়ূন আহমেদ নির্মিত জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটক ‘অয়োময়’ এবং ‘আগুনের পরশমণি’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিনয় জগতে দাপুটে পদচারণা শুরু। তারপর অসংখ্য টেলিভিশন নাটক এবং চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন এই অভিনেতা।

সৌজন্যে- রাইজিংবিডি