Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

টাইব্রেকারে স্বাগতিক রাশিয়াকে হারিয়ে শেষ চারে ক্রোয়েশিয়া

crosia১২০ মিনিটের খেলা। কেউ কাউরে ছাড়ার পাত্র নয়। প্রথমে গোল করেছিল রাশিয়া, এরপর ক্রোয়েশিয়া। খেলা গড়াল অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে গোল করে এগিয়ে গেলো ক্রোয়েশিয়া। এরপর আবারও গোল করলো রাশিয়া।

১২০ মিনিট শেষে ২-২ সমতা। খেলা গড়ালো টাইব্রেকারে। ভাগ্যের এই লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত ৪-৩ ব্যবধানে স্বাগতিক রাশিয়াকে হারিয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছে গেলো ক্রোয়েশিয়া। যে ফার্নান্দেস গোল করে রাশিয়াকে সমতায় ফিরিয়েছিলেন, সেই ফার্নান্দেসই টাইব্রেকারে গোল মিস করে ডোবালেন রাশিয়াকে।

chardike-ad

১৯৯৮ সালের পর এই প্রথম আবারও সেমিতে উঠলো ক্রোয়াটরা। টাইব্রেকারে ইভান রাকিটিচের শটের পরই জয়ের উল্লাসে মেতে ওঠে ক্রোয়েশিয়া। নির্ধারিত সময়ের শুরুতে, ৩১ মিনিটে গোল করে রাশিয়াকে এগিয়ে দিয়েছিল ডেনিশ চেরিশেভ। ৩৯ মিনিটে গোল করে ক্রোয়েশিয়াকে সমতায় ফেরায় ক্রামারিচ। ১০০তম মিনিটে হেডে গোল করে ক্রোয়েশিয়াকে আবারও এগিয়ে দেয় ডোমাজগ ভিদা। ১১৫ মিনিটে অসাধারণ একে হেড থেকে গোল করে রাশিয়াকে সমতায় ফেরান মারিও ফার্নান্দেস।

১২০ মিনিটের খেলার মত টাইব্রেকারেও নাটকের পর নাটক। রাশিয়ার প্রথম শটটাই ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক সুবাসিচ। ঝাঁপিয়ে পড়লেও হাত দিয়ে ঠেকিয়ে দেন সমোলভের শট। ক্রোয়েশিয়ার ব্রজোভিকের শট জড়িয়ে যায় রাশিয়ার জালে। ১-০। পরের শট নেন জাগোয়েভ। এই শটটি জড়িয়ে যায় জালে। ১-১। ক্রোয়েশিয়ার হয়ে শট নিতে আসেন কোভাসিচ। কিন্তু তার শট ঠেকিয়ে দেন রাশিয়ার গোলরক্ষক আকিনফিভ। ১-১।

রাশিয়ার হয়ে পরের শট নিতে আসেন মারিও ফার্নান্দেজ। যার গোলে সমতায় ফিরেছিল রাশিয়া। কিন্তু, তিনি বলটি মেরে দেন বক্সের বাইরে। ১-১। ক্রোয়েশিয়ার হয়ে শট নিতে আসেন লুকা মদ্রিচ। তার শট ঠেকিয়েছিলেনও আকিনফিভ। কিন্তু বল হাতে লেগে চলে যায় ভেতরে। ২-১। রাশিয়ার হয়ে ইগনাসেভিক স্কোর করেন। ২-২।

ক্রোয়েশিয়ার হয়ে পরের শটে গোল করেন ভিদা। ২-৩। রাশিয়ার হয়ে পরের শট নেন কুজায়েভ। এটা ছিল রাশিয়ার শেষ শট। এবারও গোল। ৩-৩। ক্রোয়েশিয়ার হয়ে শেষ শট নিতে আসেন ইভান রাকিটিচ। তার শট জড়িয়ে গেলো জালে। ৪-৩। জয়ের আনন্দে মেতে ওঠে পুরো ক্রোয়েশিয়া শিবির। নিথর-নিস্তব্ধ হয়ে যায় পুরো গ্যালারি। কান্নায় ভিজে যায় রাশিয়ান সমর্থকদের চোখ।

crosia-rassiaসোচির ফিশ্ট স্টেডিয়ামে ম্যাচের প্রথমার্ধে যে কেউ কারো চেয়ে কম যায়নি! ১-১ সমতা নিয়েই দু’দল শেষে করে প্রথমার্ধ। প্রথমে দুর্দান্ত গোলে এগিয়ে যায় রাশিয়া। পরে রাশিয়ান ডিফেন্ডারদের ভুলে গোল শোধ করে দেয় ক্রোয়েশিয়া।

খেলার ৩১তম মিনিটেই গোল বের করে নেয় রাশিয়া। আবারও স্বাগতিকদের উল্লাসে ভাসালেন ডেনিশ চেরিশেভ। ভিয়ারিয়ালের এই স্ট্রাইকার কী অসাধারণ এক শট নিলেন। ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্সিভ হাফে বলের নিয়ন্ত্রণ নেন আর্তেম জিউবা। তিনি বল বাড়িয়ে দেন চেরিশেভকে। ডোমাগজ ভিদাকে কাটিয়ে বাম পায়ের দুর্দান্ত শট নেন চেরিশেভ।

ছোট বক্সের সামনে দাঁড়ানো গোলরক্ষক ড্যানিয়েল সুবাসিচ কোনো সুযোগই পেলেন না। নড়ারও সুযোগ ছিল না তার। বল সোজা গিয়ে প্রবেশ করলো ক্রোয়েশিয়ার জালে।

গোল হজম করে সেটা শোধ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে ক্রোয়াটরা। একের পর এক আক্রমণের পসরা সাজিয়ে তোলে তারা। যদিও পাল্টা আক্রমণে উঠে আসার চেষ্টা করছিল রাশিয়া। এই সুযোগটাই গ্রহণ করে লুকা মদ্রিচরা। ৩৯ মিনিটেই দারুণ এক গোলে দলকে সমতায় ফেরান আন্দ্রে ক্রামারিচ।

বাম উইং থেকে বল নিয়ে এগিয়ে আসেন মারিও মানজুকিচ। একজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দারুণ এক ক্রস করেন মানজুকিচ। এই ক্রসেই অসাধারণ এক হেড করেন ক্রামারিচ। তিনজন ডিফেন্ডার থাকলেও ক্রমানারিচের হেড ঠেকাতে পারেননি। গোলরক্ষক আকিনফিভকে ফাঁকি দিয়ে বল প্রবেশ করে রাশিয়ার জালে।

১০০তম মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া। ডোমাগজ ভিদা অসাধারণ এক হেডে গোলটি করে ক্রোয়েশিয়াকে লিড এনে দেন। রাশিয়ান গোলরক্ষক আকিনফিভের হাত থেকে ফসকে আসা বলকে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন কুতেপভ। সেই কর্নার কিকটি নেন লুকা মদ্রিচ। সেই বলটিকেই অসাধারণ এক হেডে রাশিয়ার জালে জড়িয়ে দেন ভিদা।

খেলা শেষ হওয়ার মাত্র ৫ মিনিট আগে গোল করে সমতায় চলে আসে রাশিয়া। বক্সের ডান কোনে হাত লাগিয়ে ফাউল করেন পিভারিক। রেফারি ফ্রি কিকের বাঁশি বাজান। শট নেন অ্যালান জাগোয়েভ। তার নিখুঁত শট থেকে ভেসে আসা বলে মাথা ছুঁইয়ে হেড করেন মারিও ফার্নান্দেস। সমতায় ফেরে রাশিয়া।

দ্বিতীয় মিনিটেই আক্রমণে ওঠে স্বাগতিক রাশিয়া। আর্তেম জিউবার থ্রো বল ধরে ক্রোয়েশিয়ার গোলমুখে এগিয়ে যান ডেনিশ চেরিশেভ। কিন্তু তাকে নিজেদের বক্সে আটকে দেন ভ্রাজালকো।

দুই মিনিট পরই আক্রমণে আবারও রাশিয়া। এবার আলেকজান্ডার গলোভিন দুর্দান্ত এক ক্রস দেন চেরিশেভকে। কিন্তু বক্সের মধ্যে চেরিশেভ বলের কাছে পৌঁছাতে পারেননি। যদিও ফিরতি বলটিতে বক্সের মধ্যেই দারুণ এক শট নিয়েছিলেন আর্তেম জিউবা। কিন্তু ডেজান লভরেন নিজের শরীর দিয়ে বল ঠেকিয়ে কর্নারের বিনিময়ে দলকে বাঁচান।