Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

জালিয়াতি করে ডাক্তার হওয়ার চেষ্টা

bgc-trustবিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজ। চট্টগ্রামের চন্দনাইশে ২০০২ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেন ইঞ্জিনিয়ার আফসার উদ্দিন আহমেদ। শুরুতে বেশ সুনাম কুড়ালেও শিক্ষার্থী ভর্তিতে অনিয়মের কারণে আলোচনায় এসেছে প্রতিষ্ঠানটি।

সমন্বিত এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে যারা উত্তীর্ণ হন, তাদের মধ্যে আগ্রহী অনেক শিক্ষার্থী এখানে আবেদন করেও ভর্তি হতে পারেন না। টাকার অঙ্কে পিছিয়ে থাকা এসব শিক্ষার্থীর পরিবর্তে ভর্তি হতে পারে যোগ্যতাহীনরা।

chardike-ad

এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে নেওয়া হয় বিশেষ কৌশল। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর ছবির স্থলে অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর ছবি, নাম ও স্বাক্ষর বসিয়ে দেওয়া হয়। শুধু রাখা হয় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর রোল নম্বর, মেধাক্রম ও প্রাপ্ত স্কোর।

ন্যূনতম পাস নম্বর ৪০ না পেলেও এভাবে অযোগ্যদের ভর্তি করানো হচ্ছে লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে। মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের এমন অনিয়মের ঘটনা ফাঁস হয়েছে সম্প্রতি। জালিয়াতি করে ডাক্তার হওয়ার এ চেষ্টায় মদদ দিচ্ছে একশ্রেণির অভিভাবকরা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ৯টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের মধ্যে বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজও একটি। কলেজটিতে ২০০২-০৩ শিক্ষাবর্ষে ৫০টি আসন নিয়ে এমবিবিএস কোর্স শুরু হয়। এরপর ২০১৬ সালে ১২৫টি আসন বাড়ানো হয়। কিন্তু ভর্তিতে নানা অনিয়ম পাওয়ায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ৩৫টি আসন কমিয়ে ৯০টিতে রাখে।

মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্তের পরও দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধ হয়নি কলেজটিতে। ২০১২-১৩ ও ২০১৩-১৪ সেশনের ৫১জন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়েছে জালিয়াতির মাধ্যমে। এর মধ্যে ২০১২-১৩ সেশনের আছেন ১২জন আর ২০১৩-১৪ সেশনের ৩৯জন। এছাড়া কম স্কোর পেয়ে আরও ৯ শিক্ষার্থীকেও ভর্তি করা হয় ২০১২-১৩ সেশনে। সব মিলিয়ে ৬০জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ভর্তিতে অনিয়মের ঘটনা ধরা পড়েছে।

bgc-trust-studentবাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) এ অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে। যার প্রেক্ষিতে ৪ অক্টোবর বিএমডিসির রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত ১৮ পৃষ্ঠার একটি নথি বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের কাছে পাঠানো হয়। যেখানে ওই কলেজে ভর্তি হওয়া এসব শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়। পরে এর অনুলিপি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের ডিন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও রেজিস্ট্রারের কাছেও পাঠানো হয়। এর প্রেক্ষিতে ঘটনা তদন্তে রোববার (০৭ অক্টোবর) একটি কমিটিও গঠন করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সূত্র জানায়, শুধু ২০১২-১৩ ও ২০১৩-১৪ সেশন নয়, ২০০৮ সাল থেকেই এমন দুর্নীতি ও জালিয়াতি করে আসছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এরকম জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হয়ে অনেকে এমবিবিএস পাস করে বেরও হয়ে গেছেন।

যে ৬০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিএমডিসি অনিয়ম পেয়েছে তারা পঞ্চম বর্ষে অধ্যয়নরত। কলেজটির দুর্নীতির সুযোগের কবলে পড়ে তাদের শিক্ষাজীবন এখন হুমকির মুখে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও চবি চিকিৎসা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, বিএমডিসি থেকে যে চিঠি পেয়েছি সেখানে ওই কলেজের ৫১ শিক্ষার্থীকে জালিয়াতির মাধ্যমে এবং কম স্কোর পাওয়া ৯ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। তারা উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর ছবির স্থলে অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর ছবি, স্বাক্ষর ব্যবহার করে এ জালিয়াতি করেছে।

বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. এসএম তারেক বলেন, ৬০ জন শিক্ষার্থীর দুর্নীতির ব্যাপারে আমি জানি না। তবে কিছু গরমিল পেয়েছি। যদি এসব শিক্ষার্থীর ভর্তিতে গরমিল পাওয়া যায়, তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে।

সৌজন্যে- বাংলা নিউজ