Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

কাজ হারানোর শঙ্কায় সৌদি প্রবাসীরা

saudi-bdসৌদি আরবে বেকারত্বের হার কমাতে দেশটির সরকার একের পর এক পরিকল্পনা নিচ্ছে। আর এসব পরিকল্পনার বেড়াজালে আটকে বিপাকে পড়ছেন প্রবাসী ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি দেশটির সরকার প্রবাসীদের জন্য ১২ ক্ষেত্রে কাজ নিষিদ্ধ করে। ফলে দেশটির প্রশাসন বিভিন্ন সময় মার্কেটে অভিযান চালাচ্ছে। দেশে পাঠানো হচ্ছে এসব ব্যবসায়ীদের।

ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লোকবল নিয়োগে ৭০ শতাংশ সৌদিকরণ বাধ্যতামূলক করেছে সৌদি সরকার। এ নিয়মের বাইরে কাউকে পেলে জেল থেকে শুরু করে মোটা অঙ্কের জরিমানার বিধান করা হয়েছে।

chardike-ad

এছাড়া আজ থেকে আবারও বিভিন্ন সুপারমল কিংবা প্রতিষ্ঠানে পুলিশি অভিযান চালানো হতে পারে। এমতাবস্থায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে দেশটিতে। এ কারণে লাখ লাখ শ্রমিক অজানা আতঙ্কে ভুগছেন। যারা ব্যবসা করছেন তারাও হয়ে পড়ছেন তটস্থ। কেউ কেউ তল্পিতল্পা গুছিয়ে দেশের পথে রওনা দিচ্ছেন।

সৌদি আরবে থাকা বাংলাদেশিরা আশঙ্কার কথা জানিয়ে বলেছেন, এই অবস্থা চলতে থাকলে সৌদি আরবের বিশাল শ্রম বাজার হারিয়ে ফেলবে বাংলাদেশ। সৌদি আরবকে তাড়িয়ে দিতে হচ্ছে না, নিয়মের জালে আটকা পড়ে দেশের পথে রওনা দিতে হচ্ছে শ্রমিকদের। ইতোমধ্যে অনেকেই দিচ্ছেনও।

মদিনা শহরের ‘বাংলা মার্কেট’ নামে বাঙালি এলাকা রয়েছে। বাংলাদেশিরাই সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য করেন। খেজুর, জায়নামাজ, জুতা, তসবিহসহ নানা পণ্যের দোকানের মালিক ছিলেন। কিন্তু গেল কয়েক মাসে ব্যবধানে ওই এলাকায় বাঙালি দোকানের সংখ্যা কমে এসেছে।

যে কয়েকটি দোকান রয়েছে সেগুলোও বন্ধ হওয়ার উপক্রম। বাংলা মার্কেটে বসবাসরত বাংলাদেশি শ্রমিকরা জানান, সৌদি আরবে নতুন নিয়ম চালু হয়েছে ভিনদেশিদের যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেগুলোতে বাধ্যতামূলক সৌদিয়ান নাগরিকদের চাকরিতে নিয়োগ করতে হবে। পাশাপাশি সরকারের আয়কর বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে দিগুণ থেকে তিন গুণও।

এ কারণে মদিনার বাংলা মার্কেট ও আশপাশ এলাকায় হাটলেই চোখে পড়ে অধিকাংশ দোকান বন্ধ। এক ব্যবসায়ী জানান, মদিনাতে যারা দোকান দিতেন তারা অনেকেই ব্যবসা গুটিয়ে চলে গেছেন। সরকারের বেঁধে দেয়া নিয়মের কারণে তারা টিকতে পারছেন না বলে দেশে চলে গেছেন। এ কারণে দোকান বন্ধ থাকার দৃশ্যটি চোখে পড়ে বেশি।

উহুদের ময়দান ও আশপাশ এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য কাজ করেন অন্তত ২০ জন বাংলাদেশি শ্রমিক। প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা করে তারা পরিছন্নতা কর্মী হিসেবে ওখানে কাজ করেন। ওই এলাকার পরিচ্ছন্নতা কর্মী জানান, মাসে তারা ৫০০ রিয়াল বেতনে চাকরি করেন। এই টাকা বাংলাদেশের হিসেবে প্রায় ১২ হাজার টাকা। এতে তারা নিজেরাও খেয়ে বেঁচে থাকতে পারেন না। দেশে টাকা পাঠাবেন কী করে।

ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়ন ও সৌদি নাগরিকদের কর্মসংস্থান বাড়াতে দেশটিতে মোবাইল, বোরকার দোকান, রেন্টে কার, একাউন্টিং, নারীদের তৈরি পোশাকের দোকানের পর এবার নতুন করে ১২ ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রবাসীদের কাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সৌদি আরবের শ্রম মন্ত্রণালয়।

নতুন আইন অনুযায়ী, চশমা, ঘড়ি, বাড়ি বা গৃহ নির্মাণ সামগ্রী, গাড়ির যন্ত্রাংশ, গাড়ির শো রুম, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও বিদ্যুৎ চালিত সামগ্রী, হাসপাতালে ব্যবহৃত সরঞ্জাম, চকলেট বা মিষ্টান্নের দোকান, রেডিমেড কাপড়ের দোকান, ক্রোকারিজ সামগ্রী, কার্পেট, ফার্নিচার বা ডেকোরেশনের দোকানে শুধুমাত্র সৌদি নারী-পুরুষ কাজ করতে পারবে। এতে দেশটিতে প্রবাসীদের কাজের সুযোগ সংকুচিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।