Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

মিরাজের রাজশাহীর কাছে ধরাশায়ী তামিমের কুমিল্লা

rajshahiচলতি বিপিএলে ‘জায়ান্ট কিলার’ হিসেবেই যেনো আবির্ভূত হলো রাজশাহী কিংস। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে কাগজে-কলমে তাদের কথা কেউই তেমন একটা আলোচনা না করলেও, মাঠের খেলা শুরু হতেই একের পর এক চমক উপহার দিচ্ছে তরুণ মেহেদি হাসান মিরাজের দল।

টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই ২১ বছর বয়সী মেহেদি মিরাজকে অধিনায়কের দায়িত্ব সঁপে দিয়ে বড় চমক দিয়েছিল রাজশাহী। সে চমকের ধারাবাহিকতা যেনো মাঠেও বজায় রেখেছে তারা। আগের আসরের দুই ফাইনালিস্ট রংপুর রাইডার্স ও ঢাকা ডায়নামাইটসকে হারানোর পর এবার গতবারের তৃতীয় হওয়া কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের বিপক্ষেও জয় তুলে নিয়েছে রাজশাহী।

chardike-ad

আজ (সোমবার) লরি ইভান্সের সেঞ্চুরিতে আগে ব্যাট করে ৩ উইকেটে ১৭৬ রানের সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছিল রাজশাহী। তারকাসমৃদ্ধ কুমিল্লার জন্য এ লক্ষ্য খুব বেশি কঠিন না হলেও নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে তাদের আটকে রেখেছে রাজশাহীর বোলাররা।

শেষপর্যন্ত ১০ বল বাকি থাকতেই ১৩৮ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছে ইমরুল কায়েসের দল। কুমিল্লাকে ৩৮ রানের ব্যবধানে হারিয়ে এবারের আসরে নিজেদের চতুর্থ জয়টি তুলে নিয়েছে মেহেদি মিরাজের রাজশাহী। কুমিল্লার সমান সাত ম্যাচে ৪ জয় নিয়ে নেট রানরেটের পিছিয়ে থাকার কারণে টেবিলের চার নম্বরে অবস্থান করছে রাজশাহী।

রান তাড়া করতে নেমে কুমিল্লার প্রায় সবাই ব্যাট হাতে শুরুটা পেয়েছেন ভালো। কিন্তু কেউই নিজেদের ইনিংস বড় করতে পারেননি। রানরেটের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই ব্যাটিং করেছেন তামিম-ইমরুলরা, কিন্তু নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে নিয়ে কুমিল্লাকে কখনোই ম্যাচে থাকতে দেননি মোস্তাফিজুর রহমান, কামরুল ইসলাম রাব্বিরা।

উদ্বোধনী জুটিতে ৩৭ রান যোগ করেছিলেন তামিম ইকবাল এবং এনামুল হক বিজয়। চতুর্থ ওভারে মোস্তাফিজের বিপক্ষে হাঁসফাঁস করতে থাকা তামিম, পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে কামরুল রাব্বিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন মিড অন ফিল্ডারের হাতে। আউট হওয়ার আগে ২টি করে চার-ছক্কার মারে ২৫ রান করেন তামিম।

এরপর এনামুল বিজয় ২৬, শামসুর রহমান ১২, জিয়াউর রহমান ১২ কিংবা অধিনায়ক ইমরুল কায়েস প্রথম ২ বলেই ছক্কা-চারের মারে ১০ রান নিয়ে আউট হয়ে যান মাত্র ১৫ রান করেই। এদের মধ্যে কেউই নিজেদের ইনিংস বড় করতে পারেনি বিধায় দায়িত্ব গিয়ে বর্তায় শেষের তিন স্বীকৃত হার্ডহিটার লিয়াম ডসন, থিসারা পেরেরা এবং শহিদ আফ্রিদির কাঁধে।

এর মধ্যে থিসারা পেরেরা নিজের মুখোমুখি প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে আউট হয়ে যান শূন্য রানেই। লিয়াম ডসন দায়িত্বশীল ব্যাটিং করে আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। তবে ১টি করে চার-ছক্কার মারে ১৭ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।

পাকিস্তানি অলরাউন্ডার শহিদ আফ্রিদি আফগান লেগস্পিনার কাইস আহমেদকে পরপর তিন বলে ৬, ৬, ও ৪ মেরে আভাস দিয়েছিলেন নিজের সহজাত ঝড়ের। কিন্তু মোস্তাফিজুর রহমানের বিপক্ষে একদমই স্বচ্ছন্দে খেলতে পারেননি তিনি। টানা দুই ওভারে মোস্তাফিজকে ৭টি ডট খেলেন আফ্রিদি।

যার ফায়দা নেন কামরুল রাব্বি। ১৮তম ওভারের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্রিশ্চিয়ান জঙ্কারের অসাধারণ ক্যাচে পরিণত হন আফ্রিদি। আউট হওয়ার আগে করেন ১৯ রান। সে ওভারে আরো ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচ রাজশাহীর পক্ষে নিয়ে আসেন রাব্বি।

তুলির শেষ আঁচরটি দেন মোস্তাফিজই। ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মেহেদি হাসানকে অধিনায়ক মেহেদি মিরাজের হাতে ক্যাচে পরিণত করে দলের জয় নিশ্চিত করেন দ্য ফিজ। কুমিল্লার দশ ব্যাটসম্যানই আউট হন রাজশাহীর ফিল্ডারদের হাতে ক্যাচে পরিণত হয়ে।

রাজশাহীর পক্ষে বল হাতে ৩ ওভারে মাত্র ১০ রান খরচায় ৪ উইকেট নিয়েছেন রাব্বি। এছাড়া কাইস আহমেদ ও রায়ান টেন ডেসকাট নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। আরাফাত সানি ও মোস্তাফিজুর রহমানের ঝুলিতে গিয়েছে ১টি করে উইকেট।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা একদমই ভালো হয়নি রাজশাহী কিংসের। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে শাহরিয়ার নাফীস (৫) ফেরেন মেহেদী হাসানের বলে বোল্ড হয়ে। ওয়ান ডাউনে নেমে আরও একবার ব্যর্থ হন রাজশাহী অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। এবার তিনি শূন্যতে সাজঘরের পথ ধরেন লিয়াম ডসনের শিকার হয়ে।

ডসনের দ্বিতীয় শিকার মার্শাল আইয়ুব। ২ রানে থাকা এই ব্যাটসম্যানকে দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন কুমিল্লার এই স্পিনার। ৬ ওভার পার হতেই ২৮ রানের মধ্যে তখন ৩ উইকেট নেই রাজশাহী কিংসের।

দলের এই বিপর্যয়ের মুখে হাল ধরেন দুই বিদেশি লরি ইভান্স আর রায়ান টেন ডেসকাট। চতুর্থ উইকেটে দাঁড়িয়ে তারা দলকে এগিয়ে নেন একদম শেষ পর্যন্ত। প্রায় ১৪ ওভারের জুটিতে রাজশাহীকে ১৪৮ রান তুলে দিয়েছেন এই যুগল। রানরেট ছিল ১০.৬৯!

দুর্দান্ত ইভান্সের ব্যাটে চড়েই এবারের বিপিএল পেয়েছে প্রথম সেঞ্চুরির দেখাও। শেষ পর্যন্ত ৬২ বলে ৯ চার আর ৬ ছক্কায় ১০৪ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছেড়েছেন ইংলিশ এই ব্যাটসম্যান। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন ডেসকাট। ৪১ বলে ২ চার আর ৩ ছক্কায় ৫৯ রান করেন তিনি।