ম্যাচের আগে শঙ্কা ছিলো নিউজিল্যান্ডের গতি ও সুইংয়ের বিপক্ষে প্রথম দশ ওভারের ব্যাপারে। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে সে দশ ওভারের প্রায় পুরোটাই ভালোভাবে কাটিয়ে দেয় বাংলাদেশ। আইসিসির স্কোর প্রেডিক্টর তখন দেখাচ্ছিলো ৫০ ওভারে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়াবে ৩০৯ রান।
কিন্তু ইনিংসের নবম ওভারের প্রথম বলে সৌম্য সরকার বোল্ড হয়ে যাওয়ার পর আর সে অর্থে আধিপত্য বিস্তার করতে পারেননি পরের ব্যাটসম্যানরা। তাই তো ৪৯.২ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ২৪৪ রান। টানা দ্বিতীয় জয় পেতে নিউজিল্যান্ডকে করতে হবে ২৪৫ রান।
কেনিংটন ওভালে টস জিতে আগে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাও জানান তিনি টস জিতলে আগে বোলিংই নিতেন। ফলে টসের সময়ই খানিক পিছিয়ে যায় বাংলাদেশ।
তবে প্রতিপক্ষের আমন্ত্রণে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার তামিম ও সৌম্য ঠিকই শুরু করেন ইতিবাচক ভঙ্গিতে। দুই কিউই পেসার ট্রেন্ট বোল্ট এবং ম্যাট হেনরি শুরুতে খানিক মুভমেন্ট পেলেও টাইগার ব্যাটসম্যানদের দাপটে তা খুব একটা সমস্যার সৃষ্টি করতে পারেনি।
আগের ম্যাচের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে প্রথম ৮ ওভারেই ৪৪ রান করে বাংলাদেশ। ড্যাশিং ওপেনার সৌম্য তখন অপরাজিত ২৪ বলে ২৫ রান করে। নবম ওভারের প্রথম বলেই ম্যাট হেনরিকে বড় শট হাঁকাতে গেলে সরাসরি বোল্ড হয়ে যান তিনি।
পরে তামিমও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ১৪তম ওভারে হেনরির শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে ব্যাটের ওপরের কানায় লাগে তার। শর্ট মিড উইকেটে দাঁড়িয়ে লোপ্পা ক্যাচ ধরেন ট্রেন্ট বোল্ট। আউট হওয়ার আগে ৩৮ বলে ২৪ রান করেন তামিম।
তৃতীয় উইকেটে জুটি বাঁধেন আগের ম্যাচের দুই নায়ক সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহীম। তবে এদিন আর লম্বা হয়নি তাদের জুটি। ঠিক পঞ্চাশ রান যোগ করে ভুল বোঝাবুঝির শিকার হন মুশফিক। শর্ট কভারে ঠেলে দিয়ে সিঙ্গেল নিতে গিয়ে কাঁটা পড়েন রানআউটে। তিনি থামেন ১৯ রানে।
মুশফিক ফিরে গেলেও দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় সাকিব ঠিকই তুলে নেন ব্যাক টু ব্যাক ফিফটি। কিন্তু তিনি আবারও ব্যর্থ নিজের ইনিংস বড় করতে। দলীয় ১৫১ রানের মাথায় কট বিহাইন্ড হয়ে ফেরার আগে ৭ চারের মারে ৬৮ বলে ৬৪ রান করেন সাকিব।
এরপরের গল্পটা পুরোটাই হতাশার। ব্যাটে-বলে করতে ব্যর্থ হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। এ দুইয়ের আগে আশা জাগিয়েও ৩৩ বলে ২৬ রান করে ফিরে যান মোহাম্মদ মিঠুন।
মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে আসে ৪১ বলে ২০ রান, মোসাদ্দেক আউট হন ২২ বলে ১১ রান করে। শেষদিকে অল্প যা রান আসে তার পুরো কৃতিত্ব মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের। ইনিংসের একমাত্র ছক্কার সঙ্গে ৩ চারের মারে ২৩ বলে ২৯ রান করে দশম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন তিনি।
নিউজিল্যান্ডের পক্ষে বল হাতে ম্যাট হেনরি নেন ৪ উইকেট, ট্রেন্ট বোল্টের ঝুলিতে যায় ২ উইকেট। এছাড়া ১টি করে উইকেট নেন লকি ফার্গুসন, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম এবং মিচেল স্যান্টনার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২৪৪/১০ (৪৯.২ ওভার) (তামিম ২৪, সৌম্য ২৫, সাকিব ৬৪, মুশফিক ১৯, মিঠুন ২৬, মাহমুদউল্লাহ ২০, মোসাদ্দেক ১১, সাইফউদ্দিন ২৯, মিরাজ ৭, মাশরাফি ১, মোস্তাফিজ ০*; হেনরি ৪/৪৭, বোল্ট ২/৪৪, ফার্গুসন ১/৪০, গ্র্যান্ডহোম ১/৩৯, নিশাম ০/২৪, স্যান্টনার ১/৪১)
লক্ষ্য: ম্যাচ জিততে নিউজিল্যান্ডের প্রয়োজন ২৪৫ রান