Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

চিকিৎসার জন্য ফ্ল্যাট বিক্রি করতে চান ক্রিকেটার মোশাররফ রুবেল!

mosarrof-rubelব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার মোশাররফ রুবেল ইতিমধ্যে এক কোটি টাকা ব্যয় করেছেন চিকিৎসার জন্য। এখন চলছে কেমোথেরাপি। সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ৬ সার্কেলেরে কেমোথেরাপি দিতে হবে। যার জন্য আরও প্রয়োজন ৫০ লাখ টাকা।

মোট ৩০ রাউন্ড রেডিওথেরাপি এবং ৫০ রাউন্ড কেমোথেরাপি দিতে হচ্ছে রুবেলকে। এত ব্যয়বহুল চিকিৎসা নিতে গিয়ে ইতিমধ্যে ১ কোটি টাকারও বেশি খরচ হয়েছে বলে নিজেই এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন মোশাররফ রুবেল। বাকি ৫০ লাখ টাকার জন্য নিজের সদ্য কেনা ১৫৫০ স্কয়ার ফুটের ফ্ল্যাটটি বিক্রি করে দিতে চাচ্ছেন।

এ নিয়ে আজ (সোমবার) বিকেলে নিজের ফেসবুক ওয়ালে একটি পোস্ট দিয়েছেন রুবেল। সেখানে লিখেছেন, ‘এখন সময় হচ্ছে কেমোথেরাপির সঙ্গে লড়াই করার। আমার চিকিৎসার জন্য ইতোমধ্যে ১ কোটি টাকার মতো খরচ করে ফেলেছি। বাকি ৬ সার্কেল কেমোথেরাপির জন্য আরও ৫০ লাখ টাকা প্রয়োজন। এ কারণে জরুরিভাবে আমার ফ্ল্যাটটি বিক্রি করে দিতে চাই। (১৫৫০ স্কয়ার ফুট)। যদি কেউ আগ্রহী হন, তাহলে আমার সঙ্গে ইনবক্সে যোগাযোগ করুন। এবং অবশ্যই আপনার দোয়াও প্রয়োজন। কারণ, এখনও আমি বেঁচে আছি কেবল আপনাদের দোয়ায়। আল্লাহ আমাদের সব অপরাধ ক্ষমা করুন। ধন্যবাদ।’

ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত হওয়ার পর সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি হন মোশাররফ রুবেল। সেখানে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে তার মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের পর বায়োপসি রিপোর্টে দেখা যায়, টিউমারে ক্যান্সারের জীবাণু নেই। যে কারণে আপাতত স্বস্তি মিললেও, পরে জানা গেছে ৩০টি রেডিওথেরাপি এবং ৫০টি কেমোথেরাপি নিতে হবে তাকে।

এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে গিয়ে রেডিও থেরাপি নিতে শুরু করেন তিনি। আজ ফেসবুকে দেয়া পোস্টে জানান কেমোথেরাপি শুরু হচ্ছে এ সপ্তাহ থেকে। ৬ রাউন্ডের কেমোথেরাপি নিতে তিন সপ্তাহ অন্তর একবার করে সিঙ্গাপুর যেতে হবে এবং প্রতিবার সেখানে থাকতে হচ্ছে এক সপ্তাহ করে। অর্থাৎ ৬ মাসের লম্বা একটি সময়।

ফেসবুকে দেয়া পোস্টের পর মোশাররফ রুবেলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘নতুন কেনা ফ্ল্যাট দিয়ে কি করবো। আগে তো জীবন বাঁচাতে হবে! বেঁচে থাকলে ভবিষ্যতে হয়তো ফ্ল্যাট হবে; কিন্তু এখন তো টাকার প্রয়োজন। এ কারণেই ফ্ল্যাটটা বিক্রি করতে চাই।’

কিন্তু অনেকেই তো আপনাকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। বিসিবিও বলেছিল তারা আপনার পাশে আছে। সাকিব-মাশরাফিরাও আছে। তবুও ফ্ল্যাট বিক্রি করার প্রয়োজন হচ্ছে কেন? এ প্রশ্নের জবাবে মোশাররফ রুবেল বলেন, ‘সার্জারির সময় সাকিব-মাশরাফিদের পাশে পেয়েছি। তারা অনেক সহযোগিতা করেছে। বিশ্বকাপের ব্যস্ততার মাঝেও তারা আমার খোঁজ নিয়েছে। এছাড়া কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, খুলনা টাইটান্সসহ অনেকেই আমার পাশে দাঁড়িয়েছে। ওই সময় সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ লাখ টাকার মতো সহযোগিতা পেয়েছি। কিন্তু খরচ হয়েছে তো ১ কোটি টাকার মতো। আরও লাগবে ৫০ লাখ টাকা। সুতরাং অনেক টাকার প্রয়োজন।’

বিসিবির সহযোগিতা সম্পর্কে মোশাররফ রুবেল বলেন, ‘বিসিবিও আমার পাশে আছে। সুজন ভাইয়ের (বিসিবি প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন) সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা সবসময় সাহস দিচ্ছেন এবং ভালোমানের একটা সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন। তবুও সব খরচ হয়তো মিটবে না। এ কারণেই ফ্ল্যাটটা বিক্রি করতে চাই।’

কেমোথেরাপির ৬ সার্কেল শেষ হওয়ার পর চিকিৎসার কি অবস্থা দাঁড়াবে? জানতে চাইলে রুবেল বলেন, ‘ডাক্তাররা জানিয়েছেন, ৬ সার্কেলের কেমোথেরাপি শেষ হলে আশা করি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যেতে পারবো। তবুও আমি সবার কাছে দোয়া চাই। যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারি।’

প্রসঙ্গত জাতীয় দলের হয়ে ৫টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন মোশাররফ রুবেল। ৪টি উইকেটও রয়েছে তার নামের পাশে। সেরা বোলিং ২৪ রানে ৩ উইকেট। ২০০৮ সালের ৯ মার্চ চট্টগ্রামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক হওয়া মোশাররফ রুবেল ২০১৬ সালের ৭ অক্টোবর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডে খেলেছেন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email