Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ভারতের দ্বিতীয় নাকি শ্রীলংকার প্রথম

সিউল, ৬ এপ্রিল ২০১৪:

আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশিবার ফাইনালে ওঠা দল শ্রীলংকা। পাঁচ আসরের মধ্যে এ নিয়ে তিনবার ফাইনালে ওঠার কৃতিত্ব দেখিয়েছে লংকানরা। কিন্তু শিরোপার স্বাদ পায়নি তারা। অন্যদিকে একবার ফাইনাল খেলেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে ভারত। ২০০৭ সালে অভিষেক আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। এমন অবস্থায় আজ মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে টি২০ বিশ্বকাপের পঞ্চম আসরে শিরোপার লড়াইয়ে নামছে ভারত ও শ্রীলংকা। এ উত্তাপ ছড়ানো ফাইনালে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ লংকানদের। আর প্রথম দল হিসেবে দ্বিতীয়বার শিরোপা জেতার হাতছানি ধোনিদের সামনে। ফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায়।

chardike-ad

2_36932ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ভার্সনে (ওয়ানডে ও টি২০) ভারতের চেয়ে তো বটেই, বিশ্বক্রিকেটে শ্রীলংকা সবচেয়ে ধারাবাহিক। কিন্তু স্বাভাবিক ম্যাচের শ্রীলংকা আর বড় আসরের ফাইনালে শ্রীলংকা যেন সম্পূর্ণ ভিন্ন দুই দল। ২০১২ সালে সর্বশেষ টি২০ বিশ্বকাপে ঘরের মাঠে তারা ফাইনালে হারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। সর্বশেষ ২০১১-এর বিশ্বকাপেও একই চিত্র। ভারতের কাছে হেরে রানার্সআপ ট্রফি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে লংকানদের। গত বছর মিনি বিশ্বকাপখ্যাত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে ভারতের কাছেই হেরে বিদায় নিতে হয়েছে তাদের। এর ঠিক বিপরীত অবস্থা ভারতের। ধোনি আর ট্রফি যেন সমার্থক। ক্রিকেটের সর্বশেষ দুটি বড় আসরেই চ্যাম্পিয়ন ধোনির দল। গত বছর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে ২০১১ সালে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ভারত। আজ আরেকটি নতুন রেকর্ডের সামনে ধোনি ব্রিগেড। ফাইনালে জিততে পারলে প্রথম দল হিসেবে দুবার করে আইসিসির সব ট্রফি জয়ের কৃতিত্বের অধিকারী হবে ভারত। বিশ্বকাপ (১৯৮৩ ও ২০১১) ছাড়াও ভারত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (২০০২ ও ২০১৩) জিতেছে দুবার করে। এবার টি২০ বিশ্বকাপে একই সুযোগ ভারতের। ভারত ছাড়া আইসিসির সব বড় ট্রফি জয়ের কৃতিত্ব আছে কেবল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। তবে ক্যারিবীয়রা বিশ্বকাপ দুবার জিতলেও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও টি২০ বিশ্বকাপ জিতেছে একবার করে।

শ্রীলংকা ফাইনালের ‘চোকার্স’, এমন একটা কথা প্রচলিত আছে। তবে কয়েক দিন আগে সর্বশেষ এশিয়া কাপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মধ্য দিয়ে এ অপবাদ অনেকটা কাটিয়ে উঠেছে তারা। দুই কিংবদন্তি কুমার সাঙ্গাকারা ও মাহেলা জয়াবর্ধনে কোনো বড় ট্রফি ছাড়াই ক্যারিয়ার শেষ করবেন, ক্রিকেটের দেবী কি এতটাই নির্মম হবেন— এমন আক্ষেপ অনেকেরই। এক যুগেরও বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে আইসিসি ট্রফি একবারই জেতেন মাহেলা-সাঙ্গাকারা। ২০০২ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ওই আসরে ফাইনাল ম্যাচ ভাসিয়ে দেয় বৃষ্টি। সেবার ভারতের সঙ্গে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন হয় শ্রীলংকা। বলা বাহুল্য, আজই ক্যারিয়ারের শেষ টি২০ ম্যাচ খেলছেন এ দুই কিংবদন্তি। ভাগ্যদেবী অবশ্য সেমিফাইনালে লংকানদের পাশেই ছিল। ওই ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে গেলে হারার আগেই হেরে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথডে ২৭ রানে ম্যাচ জেতে ফাইনালের মঞ্চে মাহেলা-সাঙ্গাকারারা। এটা স্মরণ করিয়ে দিয়ে উইন্ডিজ অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি বলেছেন, ‘এবার মাহেলা-সাঙ্গাকারা কাপ জিতুক, এটা চান স্বয়ং ঈশ্বরও।’

এদিকে মাহেলা-সাঙ্গাকারার জন্য হলেও কাপ জিততে চায় লংকান শিবির। তাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত অধিনায়ক লাসিথ মালিঙ্গা বলেন, ‘মাহেলা-সাঙ্গাকারার বিদায়ী টি২০ ম্যাচ এটি। আমরা এ দুজনকে বিশেষ উপহার দিতে চাই।’ ফাইনালের চোকার্স দুর্নাম ঘোচানোর জন্য সর্বশেষ এশিয়া কাপকে প্রেরণা মনে করছে লংকান শিবির। তাদের কোচ পল ফারব্রেস বলেন, ‘আমরা বেশির ভাগ টুর্নামেন্টেই ফাইনাল খেলি। সর্বশেষ এশিয়া কাপ ফাইনালে আমরা খুব ভালোভাবেই জিতেছি। ওই আসরে আমরা খুব সহজেই হারিয়েছি ভারতকে, পাকিস্তানকে হারিয়েছি দুবার। দুই বছর আগে সর্বশেষ টি২০ বিশ্বকাপে আমরা কী করেছি, তা নিয়ে ভাবছি না।’

গত ৮ মার্চ এশিয়া কাপ ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে লংকানরা। এ মুহূর্তে ফর্মের তুঙ্গে ভারত। চলতি আসরের একমাত্র অপরাজিত দল তারা। ব্যাটে-বলে প্রতিপক্ষকে এখন পর্যন্ত কোনো সুযোগই দেয়নি তারা। এর সঙ্গে ধোনির ক্রিকেট মস্তিষ্ক। সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্রিকেটে অধিনায়ক ধোনির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেন, এমন কেউ নেই। তবে ফাইনাল ম্যাচের আগে আবেগকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন না ভারত অধিনায়ক। তার ভাষায়, ‘ফাইনাল নিয়ে দুটো দলই ভীষণভাবে উদ্দীপ্ত। আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ফাইনালের আশা করছি। আমরা মানুষ, আর মানুষমাত্রই আবেগ থাকে। তবে একটা বড় ম্যাচের বিভিন্ন পর্যায়ে আবেগের বশে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া যায় না। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করেই আমাদের খেলতে হয়।’

ফাইনালে ভারতের রেকর্ড ভালো, এটাকে কোনো গুরুত্বই দিচ্ছেন না ধোনি। বলেন, ‘রেকর্ড পরিসংখ্যানের চেয়েও দেশের জন্য বিশ্বকাপ জয়ের ওপরই আমরা বেশি জোর দিচ্ছি।’ সূত্রঃ বণিকবার্তা।