শনিবার । ডিসেম্বর ২০, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক জাতীয় ৫ অগাস্ট ২০২৫, ৯:০০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার

ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস আজ


julyআজ (৫ আগস্ট) ঐতিহাসিক ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’। ২০২৪ সালের এই দিনে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থার অবসান ঘটে।

এই দিনটি পরবর্তীকালে ‘৩৬ জুলাই’ নামে পরিচিতি পায়। দিবসটি পালনে রাজধানীসহ সারাদেশে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আজ সরকারি ছুটির দিন। জাতীয়ভাবে উদযাপন করা হবে দিবসটি।

আজ সকাল ৯টায় দেশের ৬৪ জেলায় ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে’ পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়েছে। সকল ধর্মীয় উপাসনালয়ে হয়েছে মোনাজাত ও প্রার্থনা। শহীদদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে দেশের মানুষ একত্র হয়েছে শ্রদ্ধা জানাতে।

এদিকে ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা’র মূল মঞ্চ, সাউন্ড ও লাইটিং সিস্টেমের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এছাড়া অনুষ্ঠানস্থল এবং আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিকেল ৫টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করবেন, যা বাংলাদেশ টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করবে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় থাকছে বিশেষ ড্রোন শো এবং রাত ৮টায় থাকবে ব্যান্ডদলের পরিবেশনা।

দিবসটি উপলক্ষে সোমবার (৪ আগস্ট) এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘বৈষম্যমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা ও ফ্যাসিবাদী অপশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-শ্রমিক-জনতা সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তুলে ২০২৪ সালের এই দিনে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে। ঐতিহাসিক এই অর্জনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আমি দেশের মুক্তিকামী ছাত্র-জনতাকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।’

তিনি বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ছিল দীর্ঘদিনের বঞ্চনা, দুঃশাসন, দুর্নীতি, লুটপাট, গুম, খুন, অপহরণ, ভোটাধিকার হরণসহ সব ধরনের অত্যাচার, নিপীড়নের বিরুদ্ধে তরুণ প্রজন্ম ও আপামর জনতার ক্ষোভের বিস্ফোরণ। এই বৈষম্যমূলক ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপ করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, জনগণের ক্ষমতায়ন এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে সুনিশ্চিত করাই ছিল এর মূল লক্ষ্য। একটি সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটন করে জুলাইয়ের চেতনার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। সংস্কারের মধ্যদিয়ে গণ-অভ্যুত্থানের আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হবে, প্রকৃত গণতান্ত্রিক উত্তরণের মধ্যদিয়ে গড়ে উঠবে একটি ন্যায় ও সাম্যভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ–এ আমার একান্ত প্রত্যাশা।’

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার বাণীতে বলেন, ‘জুলাই আমাদের নতুন করে আশার আলো–একটি ন্যায় ও সাম্যভিত্তিক, বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছে। হাজারো শহীদের আত্মত্যাগ আমাদের রাষ্ট্র সংস্কারের যে সুযোগ এনে দিয়েছে, তা যে কোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে। পতিত স্বৈরাচারী ও তার স্বার্থলোভী গোষ্ঠী এখনও দেশকে ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে। আসুন সবাই মিলে আমরা এমন এক বাংলাদেশ গড়ে তুলি, যেখানে আর কোনো স্বৈরাচারীর ঠাঁই হবে না।’

দিবসটি উপলক্ষে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন নিজ নিজভাবে কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। র‍্যালি, আলোচনা সভা, শহীদদের স্মরণে দোয়া— নানা আয়োজনে মুখর রয়েছে সারাদেশ।