শনিবার । ডিসেম্বর ২০, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক বিনোদন ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৬:৫৯ অপরাহ্ন
শেয়ার

হলিউড কিংবদন্তি রবার্ট রেডফোর্ড মারা গেছেন


Robert Redford

অভিনেতা, পরিচালক, পরিবেশবাদী এবং স্বাধীন চলচ্চিত্রের মহীরুহ রবার্ট রেডফোর্ড মারা গেছেন। তার জনসংযোগ কর্মকর্তা সিন্ডি বার্গার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, রবার্ট রেডফোর্ডকে আমরা হারালাম। তিনি সানড্যান্সের পাহাড়ে, প্রকৃতির কোলে, ভালোবাসার মানুষদের মাঝে বিদায় নিয়েছেন। পরিবার এ সময়টিতে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা কামনা করছে।

তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর।

“বুচ ক্যাসিডি অ্যান্ড দ্য সানড্যান্স কিড” কিংবা “অল দ্য প্রেসিডেন্টস মেন”-এর মতো চলচ্চিত্রে অভিনয় করে রেডফোর্ড হলিউডে এক অনন্য দাগ কেটে গেছেন। তবে তিনি শুধু নায়কের জৌলুসে থেমে থাকেননি। ক্যামেরার পেছনে দাঁড়িয়ে “অর্ডিনারি পিপল” এবং “এ রিভার রানস থ্রু ইট”-এর মতো অনন্য চলচ্চিত্র পরিচালনা করে পেয়েছেন অস্কার।

জীবনের শেষভাগেও রেডফোর্ড পর্দা থেকে দূরে সরে যাননি। ২০১৭ সালে জেন ফন্ডার সঙ্গে নেটফ্লিক্স প্রযোজিত ‌‘আওয়ার সোলস এট নাইট’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে পুরোনো রসায়নকে আবার ফিরিয়ে আনেন। এরপর ২০১৮ সালে ‘দ্য ওল্ড ম্যান এন্ড দ্য গান’ ছবিতে ৮২ বছর বয়সে শেষবারের মতো প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন। তবে অবসর শব্দটিকে কখনোই তিনি নিজের অভিধানে জায়গা দেননি। CBS-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, আমার কাছে অবসর মানে থেমে যাওয়া। আমি যতদিন পারি বাঁচতে চাই পূর্ণমাত্রায়।

১৯৩৬ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা মনিকায় জন্ম নেন রবার্ট রেডফোর্ড। বাবা ছিলেন দুধ বিক্রেতা, পরে হিসাবরক্ষক। সংসারের অভাবের কারণে শৈশবেই তাকে বইয়ের জগতে আশ্রয় নিতে হয়। গ্রিক ও রোমান পুরাণের গল্প তাকে মুগ্ধ করলেও তিনি পড়াশোনায় মনোযোগী ছিলেন না।

১৯৫৫ সালে বেসবলে স্কলারশিপ নিয়ে ভর্তি হন কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু মদ্যপান ও অমনোযোগের কারণে স্কলারশিপ হারান এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে বাধ্য হন। পরে তিনি ইউরোপে গিয়ে আঁকাআঁকি শিখেন। সেখান থেকে ফিরে নিউইয়র্কে ভর্তি হন আমেরিকান একাডেমি অব ড্রামাটিক আর্টসে। এখানেই তার অভিনয় প্রতিভা ধীরে ধীরে বিকশিত হয়।

১৯৫৯ সালে “পেরি ম্যাসন”-এর একটি পর্বে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে টেলিভিশনে অভিষেক ঘটে রেডফোর্ডের। বড় সুযোগ আসে ১৯৬৩ সালে, যখন তিনি নীল সাইমনের নাটক ‘বেয়ার ফুট ইন দ্য পার্ক’-এ ব্রডওয়েতে অভিনয় করেন। এই নাটক থেকেই তার হলিউডযাত্রার দরজা খুলে যায়।

১৯৬৯ সালে পল নিউম্যানের সঙ্গে একটি ছবিতে অভিনয়ের পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এরপর ১৯৭৩ সালে তাদের আরেকটি যৌথ ছবি ‘দ্য স্টিং’ The Sting শ্রেষ্ঠ ছবির অস্কার জিতে নেয়। পল নিউম্যানের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ থেকেছেন রেডফোর্ড।