
সেন্টমার্টিন
দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ১ ডিসেম্বর থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে কক্সবাজার–সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল। চলতি মৌসুমে পর্যটকদের জন্য থাকছে রাত্রিযাপনের সুযোগও। তবে সেন্টমার্টিনের পরিবেশ রক্ষায় প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটকের সীমা নির্ধারণ করেছে প্রশাসন। এছাড়া পালন করতে হবে ১২টি নির্দেশনা।
নিরাপত্তার স্বার্থে এবার টেকনাফ নয় কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া থেকে জাহাজ ছেড়ে যাচ্ছে। নুনিয়ারছড়া জেটিঘাট থেকে প্রতিদিন সকাল ৭টায় জাহাজ যাত্রা করবে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে। পরদিন দুপুর ৩টায় সেই জাহাজ ফিরে আসবে কক্সবাজারে। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি—টানা দুই মাস পর্যটকরা দ্বীপে রাত্রিযাপনের সুযোগ পাবেন। তবে ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।
এমভি কর্ণফুলি এক্সপ্রেস, এমভি বারো আউলিয়া, কেয়ারি সিন্দাবাদ ও কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন— এই চারটি জাহাজকে সেন্টমার্টিন রুটে চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়েছে এবং সেন্টমার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের আরোপিত ১২ নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ১২ নির্দেশনা
গত ২২ অক্টোবর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সেন্টমার্টিন ভ্রমণের ক্ষেত্রে ১২টি নির্দেশনা জারি করে।
* বিআইডব্লিউটিএ ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান চলবে না।
* অনলাইনে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড স্বীকৃত ওয়েব পোর্টাল থেকে টিকিট সংগ্রহ বাধ্যতামূলক।
* প্রতিটি টিকিটে কিউআর কোড থাকবে, কিউআর কোডবিহীন টিকিট বাতিল হিসাবে গণ্য।
* রাতের সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি, বারবিকিউ পার্টি নিষিদ্ধ।
* কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা বিক্রি নিষিদ্ধ।
* সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক–ঝিনুকসহ কোনো জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করা যাবে না।
* দ্বীপে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ মোটরযান চলাচল নিষিদ্ধ।
* পলিথিন বহন নিষিদ্ধ; একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক নিরুৎসাহিত (যেমন চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, ৫০০ ও ১০০০ মিলিলিটারের প্লাস্টিক বোতল)।
* পর্যটকদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ।
* নভেম্বর মাসে পর্যটকেরা শুধু দিনের বেলায় ভ্রমণ করতে পারবেন। রাত্রিযাপন করা যাবে না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাত্রিযাপনের অনুমতি থাকবে।
* ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে।
* প্রতিদিন গড়ে দুই হাজারের বেশি পর্যটক দ্বীপে ভ্রমণ করতে পারবেন না।
এসব নতুন নির্দেশনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেন্টমার্টিন দ্বীপের নাজুক পরিবেশ ও অনন্য জীববৈচিত্র্য সংরক্ষিত থাকবে এবং দ্বীপটি দায়িত্বশীল ও পরিবেশবান্ধব পর্যটনের উৎকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে উঠবে বলে আশা করছে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ।









































