হংকংভিত্তিক সোর্সিং প্রতিষ্ঠান লিঅ্যান্ডফাং বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বৃহৎ ক্রেতাদের অন্যতম। পোশাক রফতানি থেকে দেশের মোট আয়ের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ আসে প্রতিষ্ঠানটির দেয়া ক্রয়াদেশ থেকে। ধারাবাহিক শিল্প দুর্ঘটনার পরও পোশাক ক্রয়ের শীর্ষ উৎস হিসেবে বাংলাদেশকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে লিঅ্যান্ডফাং। গত মাসে প্রকাশিত প্রতিষ্ঠানটির ২০১৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, পোশাকের শীর্ষ উৎসগুলোর মধ্যে ভিয়েতনামের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।
জানা গেছে, বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে লিঅ্যান্ডফাং পোশাক, পাদুকা খেলনা, আসবাব, গৃহস্থালি পণ্য, কসমেটিকসসহ বিভিন্ন পণ্য ভোক্তার চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদক উৎস থেকে ক্রয় করে। এ প্রক্রিয়ায় প্রায় ৪০টি দেশ থেকে পণ্য উৎপাদন করিয়ে ক্রয় করে তারা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কেনা পণ্যগুলোকে হার্ড গুডস ও সফটগুডস এ দুই ভাগে দেখায় লিঅ্যান্ডফাং। হার্ড গুডসজাতীয় পণ্যগুলো হলো— খেলনা, আসবাব, গৃহস্থালি পণ্য, কসমেটিকস ইত্যাদি। অন্যদিকে সফটগুডস জাতীয় পণ্যগুলোর বেশির ভাগই পোশাক। দুই ধরনের পণ্য নিয়ে প্রতিবেদনে ২০১৪ সালের তিনটি শীর্ষ উৎসের ঘোষণা দিয়েছে লিঅ্যান্ডফাং।
দেখা গেছে, শীর্ষ তিন উৎসের মধ্যে র্যাংকিংয়ে প্রথম অবস্থানে রয়েছে চীন। দেশটি থেকে কেনা পণ্যের অধিকাংশই হার্ডগুডস, যার হার ৫১ শতাংশ। দেশটি থেকে কেনা বাকি ৪৯ শতাংশ পণ্য হলো সফটগুডস। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভিয়েতনাম থেকে বেশি কেনা হয় সফটগুডস, যার হার ৯১ শতাংশ। বাকি ৯ শতাংশ হার্ডগুডস। তৃতীয় অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ থেকে কেনা সবচেয়ে বেশি পণ্য হলো সফটগুডস। এর হার ৯৯ শতাংশ। বাকি ১ শতাংশ পণ্য হলো হার্ডগুডস। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, লিঅ্যান্ডফাংয়ের মোট টার্নওভারের ৬৩ শতাংশ আসে সফটগুডস থেকে। আর বাকি ৩৭ শতাংশ আসে হার্ডগুডস থেকে।
বাংলাদেশের রফতানিকারকদের সংগঠন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, বাংলাদেশের রফতানি খাত এখনো বহুমুখী বা বৈচিত্র্যময় পণ্য উৎপাদন সামর্থ্য গড়ে তোলার বিষয়ে পিছিয়ে রয়েছে। শুধু লিঅ্যান্ডফাং নয়, পোশাকের অনেক ক্রেতাই রয়েছেন, যারা অন্যান্য পণ্য কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। কেউ কেউ সে চাহিদা মেটাতেও পারছেন। তবে এর হার খুবই কম।
পোশাক খাতসংশিষ্ট সংগঠন বিজিএমইএ সূত্র অনুযায়ী, তৈরি পোশাক খাতে মোট রফতানি আয় ২১ বিলিয়ন ডলার। এর প্রায় ১০ শতাংশ ক্রয় করে লিঅ্যান্ডফাং, যার পরিমাণ ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির স্বীকৃত সরবরাহকারীদের মধ্যে শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলো হলো— এনভয়, স্ট্যান্ডার্ড, হা-মীম, ওপেক্স, তুসুকা অন্যতম।