Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

লজ্জার পরাজয়ে অ্যাশেজ খোয়ালো অস্ট্রেলিয়া

stocks
৬ উইকেট শিকারি বেন স্টোকসকে করতালি দিয়ে অভিনন্দন জানাচ্ছেন সতীর্থরা

প্রথম ম্যাচে নাকানিচুবানি খাওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে প্রতাপের সঙ্গে ফিরে আসা। এরপর টানা দুই ম্যাচে শোচনীয় অবস্থা। তৃতীয় ম্যাচে আট উইকেটের পরাজয় মেনে নেয়ার পর, চতুর্থ ম্যাচে ইনিংস ব্যবধানে হারের লজ্জা। পঞ্চম ম্যাচ শুধুই নিয়ম রক্ষার। সেই সঙ্গে ইংলিশদের তেতো কথা হজম করার!

তৃতীয় ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৬০ রানে অলআউট হওয়ার পর ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন মাইকেল ক্লার্ক। তবে ঘুরে দাঁড়ানো তো দূরে থাক চোখে চোখ পর্যন্ত রাখতে পারলেন না। শোনা যাচ্ছে, আজকাল অবসরটাও নিয়ে নিতে পারেন বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়ক।

chardike-ad

প্রথম দিন লাঞ্চের আগেই অস্ট্রেলিয়াকে ৬০ রানে অলআউট করে দেওয়া ইংল্যান্ড দ্বিতীয় দিনে লাঞ্চের আগে ৯ উইকেটে ৩৯১ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে। ৩৩১ রানে পিছিয়ে থেকে খেলতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসেও দিশেহারা হয়ে পড়েন অজিরা। শুক্রবার দ্বিতীয় দিন শেষে সফরকারীদের সংগ্রহ ছিল ৭ উইকেটে ২৪১ রান। সেখান থেকে শনিবার খেলা শুরু হতে না হতে ৭৮ রান পিছিয়ে থেকে গুটিয়ে যান পন্টিংয়ের উত্তরসূরীরা।

এই টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে পরাজয় এড়াতে অস্ট্রেলিয়া তাকিয়ে ছিল অ্যাডাম ভোজেসের দিকে। গতকাল ৪৮ রানে অপরাজিত থেকে আজও একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন তিনি। সময় যখন খারাপ যায়, তখন একার আর কী করার থাকে। ননস্ট্রাইকে দাঁড়িয়ে সতীর্থদের যাওয়া আসাই দেখলেন তিনি (৫১)।

সিরিজ জয়ী এই ম্যাচের নায়ক কে, তা আর বলায় প্রয়োজন নেই। গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচের দিকে চোখ ছিল গোটা দুনিয়ার। প্রথম দিন যারা একটু দেরি করে স্টেডিয়ামে ঢোকেন কিংবা দেরি করে টিভি খোলেন, তাদের চোখ কপালে তুলে দেন ব্রড। ১৫ রানে ৮ উইকেট নিয়ে একাই ধসিয়ে দেন অজিদের। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে জ্বলে ওঠেন আরেক পেসার বেন স্টোকস। দ্বিতীয় ইনিংসের ছয়টিই নিজের শিকারে পরিণত করেছেন তিনি।

ব্রডের বিধ্বংসী বোলিংয়ের পর জো রুটের দারুণ এক সেঞ্চুরিতে প্রথম দিনেই ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল ইংল্যান্ড। প্রথম দিন শেষে ইংলিশদের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ২৭৪ রান। সেখান থেকে দ্বিতীয় দিন শুরু করতে নামে তারা। লাঞ্চের আগে ৯ উইকেটে ৩৯১ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেন স্বাগতিক অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক। ফলে প্রথম ইনিংসে ৩৩১ রানে লিড পায় স্বাগতিকরা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১৩০ রান করেন রুট। নয় নম্বরে নেমে ৩৮ রান করেন মাঈন আলী। আগের দিন জনি বেয়ারস্টো ৭৪ ও কুক ৪৩ রান করেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ৬ উইকেট নেন স্টার্ক।

দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে নেমে বেশ ভালোই এগিয়ে যাচ্ছিল অস্ট্রেলিয়া। ডেভিড ওয়ার্নার ও ক্রিস রজার্সের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ১১৩ রান। স্টোকসের বলে বিদায় নেওয়ার আগে ৫২ রান করেন রজার্স। এরপর দলীয় ১৩০ রানে ওয়ার্নার ব্যক্তিগত ৬৪ রানে ওই স্টোকসের বলে ফেরার পরই প্রথম ইনিংসে মতো ভেঙে পড়ে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইনআপ। দলীয় ১৩৬ রানে দাঁড়িয়ে পর পর দুই ওভারে বিদায় নেন শন মার্শ ও স্টিভেন স্মিথ। মার্শকে ফেরান স্টোকস আর স্মিথকে ব্রড।

১৩৬ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর ভোজেসকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন মাইকেল ক্লার্ক। তবে এই ইনিংসেও ব্যর্থ অজি অধিনায়ক। ১৩ রান করে উডের বলে সাজঘরে ফেরেন ক্লার্ক। আর দিনের শেষ দিকে পিটার নেভিল ও মিচেল জনসন দ্রুত বিদায় নিলে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কা আরো জোরালো হয়।

তৃতীয় দিনের সকালে ভোজেস ৫১ রানে একপ্রান্তে অপরাজিত থেকে স্টার্ক, হ্যাজেলউড আর লায়নের প্রবেশ-প্রস্থান দেখেন। ‘অবনত মস্তকে’ ইংলিশদের উল্লাস কতটুকু দেখেছেন তা কে জানে!