অনলাইন প্রতিবেদক, সিউল, ২৬ জানুয়ারি ২০১৪:
যৌনতা, মাদক, রাজনীতি- অবসরের আড্ডায় ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধবরা একসাথে হলেই হয়তো খুব স্বাভাবিকভাবে আলোচনায় চলে আসে এসব প্রসঙ্গ। তবে কোরিয়ানদের আড্ডায় এ ধরণের আলোচনা কতটুকু প্রাসঙ্গিক? সিউলিস্টিক.কমে প্রকাশিত কেথ কিমের ব্লগ থেকে চলুন একটু ধারণা নেওয়া যাক।
যৌনতা
হালের কিছু যৌন আবেদনময়ী কোরিয়ান পপ মিউজিক ভিডিও দেখে যদি ভেবে থাকেন কোরিয়া অবাধ যৌনতার দেশ তবে বড় রকমের ভুল করবেন। বরং যৌন বিষয়ক আলোচনায় অধিকাংশ কোরিয়ানই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। উন্নত বিশ্বের আর দশটা দেশে এসব নিয়ে আলোচনা যতোটা খোলাখুলিভাবে হয়ে থাকে, কোরিয়ায় তেমনটা না। সুতরাং আপনার সঙ্গী/সঙ্গিনীর সাথে কাটানো অন্তরঙ্গ সময়ের গল্প কোন কোরিয়ান বন্ধুর কাছে করতে যাওয়াটা আপনার ব্যাপারে তাঁর কাছে খারাপ বৈ ভালো কোন ধারণা দেবে না।
মাদক
দুর্বল মাদক নিয়ন্ত্রন আইনের সুযোগে পৃথিবীর অনেক দেশেই মাদক গ্রহণ ও মাদক সংক্রান্ত আলোচনা বেশ প্রকাশ্যেই হচ্ছে। তবে কোরিয়ার মাদকবিরোধী আইন এখনও পর্যন্ত হেলাফেলা করার মতো কিছু নয়। দেশটিতে সব ধরণের মাদক সেবন, গ্রহণ ও বেচাকেনা গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয় এবং ধরা পড়লে নিশ্চিতভাবেই জেল-জরিমানা হয়ে যাবে। সারকথা হল কোরিয়ায় মাদক সম্পূর্ণরূপে অবৈধ। গভীর রাতে কোন প্রতিবেশী তরুণ রাস্তার কোনায় দাঁড়িয়ে নেশাজাতীয় দ্রব্য বিক্রি করছে, পুরনো বস নিয়মিত বারে গিয়ে মদ খাচ্ছে কিংবা রাতভর ক্লাবভর্তি লোক মাতলামি করছে-এমন অভিজ্ঞতা কোরিয়ায় হওয়ার কোন সুযোগ নেই। তাই কোন কোরিয়ান সহকর্মীকে ‘লাল পানি’র দাওয়াত দেওয়ার আগে সাবধান! কে জানে সহকর্মীটি একটু বেশীই বেরসিক হয়ে থাকলে এমন প্রস্তাবের জন্য পরবর্তী কয়টা রাত আপনার জেলেও কাটাতে হতে পারে!
রাজনীতি ও ইতিহাস
রাজনীতি পৃথিবীর যে কোন প্রান্তেই স্পর্শকাতর একটা বিষয়। রাজনৈতিক আদর্শ নিয়ে মতবিরোধ চিরায়ত এবং সাধারণত এ সংক্রান্ত বিতর্কে যে কোন মতের পক্ষে-বিপক্ষে শক্ত যুক্তি দেয়ার মতো লোকের অভাব হয় না। কোরিয়ায় রাজনৈতিক আলোচনায় সবচেয়ে বেশী অংশ জুড়ে থাকে জাপান সংক্রান্ত বিষয়াদি। জাপানের সাথে দকদো দ্বীপ নিয়ে কোরিয়ার বিরোধ বহুদিনের। ‘দকদো আমাদের ভূমি’ এমন উল্কি আঁকা অনেক কোরিয়ানের শরীরেই দেখতে পাবেন। এছাড়া অত্যন্ত স্পর্শকাতর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের যৌন দাসী ইস্যু, কোরিয়ায় মার্কিন সেনা ঘাঁটি, উত্তর কোরিয়া, চীনের সাথে ঐতিহাসিক বিরোধ এসব নিয়েও কোরিয়ায় গরম আলোচনা হয়। তবে জাপান ইস্যুর মতো উত্তাপ ছড়াতে পারে না আর কোন কিছুই। অতএব এসব নিয়ে কোন কোরিয়ানের সাথে তর্কে যাবার আগে একটু ভেবেচিন্তে!