Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

৪০ বিলিয়ন ডলার প্রণোদনার ঘোষণা দক্ষিণ কোরিয়ার

বৃহস্পতিবার ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের (৪১ ট্রিলিয়ন ওন) প্রণোদনা কর্মসূচির ঘোষণা দেয় দক্ষিণ কোরিয়া। দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশটির জিডিপির প্রবৃদ্ধি এক বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন হওয়ায় মন্দার ঝুঁকি আছে বলে হুঁশিয়ার করেন অর্থমন্ত্রী ছোয়ে গিয়ং হুয়ান। তার এই হুঁশিয়ারির পরেই অর্থনীতিকে গতিশীল করতে প্রণোদনা কর্মসূচির উদ্যোগ নিল দেশটি। খবর চ্যানেল নিউজ এশিয়া।

এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানায়, ৪১ ট্রিলিয়ন ওনের মধ্যে ব্যয়ের জন্য বরাদ্দ ১১ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ওন। আর অতিরিক্ত আর্থিক সহায়তা বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৯ ট্রিলিয়ন ওন। প্রণোদনা কর্মসূচির সিংহভাগই চলতি বছর কাজে লাগানো হবে। ৩ ট্রিলিয়ন ওন ব্যবহার করা হবে আগামী বছরের শুরুতে।

chardike-ad

iuw6SEA60jgMগত ১৬ এপ্রিল ফেরি দুর্ঘটনায় ৩০০ জনের প্রাণহানির পর থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় অভ্যন্তরীণভাবে পণ্যের চাহিদা কমতে শুরু করে, যার বিরূপ প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতেও। ফলে ২০১৪ সালের জন্য প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস ৪ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ কমিয়ে আনে অর্থ মন্ত্রণালয়।
ইয়নহাপ বার্তা সংস্থাকে দেশটির অর্থমন্ত্রী ছোয়ে গিয়ং হুয়ানজানান, ‘আমাদের অর্থনীতি দুই রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে যেখান থেকে অর্থনীতিকে সামনের দিকে অগ্রসর করতে হবে। নয়তো আবার মন্দায় পড়ার ঝুঁকি আছে।’

তিনি আরো বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে চাহিদা কমে গেছে। অর্থনীতি গতিশীলতা হারিয়ে ফেলেছে। কাজেই সংকুচিত স্থানীয় চাহিদার চক্র থেকে বেরিয়ে আসতে এবং জীবনযাত্রার মান স্থিতিশীল করতে সহায়ক হবে নতুন এই প্রণোদনা কর্মসূচি।

সরকার পক্ষ থেকে আরো বলা হয়, বন্ধকি নীতিমালা শিথিলের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের স্বার্থে কর সুবিধা দেয়া হবে, যাতে তারা কর্মীদের বেতন ও লভ্যাংশ দেয়ার ক্ষেত্রে তা ব্যবহার করতে পারেন।

বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় আরো জানায়, অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সম্প্রসারণমূলক আর্থিক নীতি গ্রহণ করে বছরের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত এ প্রণোদনা কর্মসূচি অব্যাহত রাখা হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত এ প্রণোদনা কর্মসূচির বাস্তব ফল পাওয়া না যাবে, তত দিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে এই পদক্ষেপ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘ব্যাংক অব কোরিয়া’ কর্তৃক দ্বিতীয় প্রান্তিকের ফলাফল প্রকাশের কয়েক ঘণ্টা পরেই এ প্রণোদনা কর্মসূচির ঘোষণা করা হলো। প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, গত বছরের তুলনায় এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হয়েছে সবচেয়ে শ্লথ। এ জন্য ফেরি দুর্ঘটনাকেই দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, মৌসুমভিত্তিক ইস্যুগুলো সমন্বয়ের পর আগের প্রান্তিকের তুলনায় এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে দক্ষিণ কোরিয়ার জিডিপিতে দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ২০১৩ সালের প্রথম প্রান্তিকের পর এটিই সবচেয়ে শ্লথ প্রবৃদ্ধি। কিন্তু এক বছর আগের তুলনায় এশিয়ার চতুর্থ সর্ববৃহত্ অর্থনীতি সম্প্রসারিত হয়েছে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। এর আগের প্রান্তিকে বৃদ্ধির এ হার ছিল ৩ দশমিক ৯ শতাংশ।

এদিকে আগামী আগস্টে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার কমাতে পারে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এর আগে জুলাইসহ টানা ১৪ মাস ধরে সুদের হার আড়াই শতাংশে অপরিবর্তিত রাখা হয়।

বিশ্ব অর্থনীতির দুরাবস্থার কারণে চাহিদা কমে যাওয়ায় মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয়েছে রফতানিনির্ভর দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতি। ২০০৮ সালে প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৮ শতাংশে থাকলেও ২০০৯ সালে তা কমে দশমিক ৭ শতাংশে নেমে আসে। তবে বিগত কয়েক বছর ধরেই অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির অংশ বাড়তে শুরু করেছে। ২০১২ সালে প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৩ শতাংশে থাকলেও ২০১৩ সালে তা দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ৩ শতাংশে উঠে এসেছে। বণিকবার্তা।