বিএনপি মনোনীত ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে টানা চতুর্থ দিনের মতো নগর ভবনের সামনে বিক্ষোভ করছেন তার সমর্থকেরা। রোববার (১৮ মে) সকাল থেকে ‘আমরা ঢাকাবাসী’ ব্যানারে তারা নগর ভবনের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালন করছেন।
বিক্ষোভকারীরা নগর ভবনের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। এতে সাধারণ সেবাগ্রহীতারা ভবনের ভেতরে প্রবেশ করতে পারছেন না।
ডিএসসিসির বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে এসে আন্দোলনকারীরা নগর ভবনের সামনে জড়ো হন। তারা ইশরাকের শপথ গ্রহণে বিলম্বের প্রতিবাদ জানিয়ে স্লোগান দেন— ‘শপথ শপথ চাই, ইশরাক ভাইয়ের শপথ চাই’, ‘শপথ নিয়ে টালবাহানা চলবে না’, ‘অবিলম্বে শপথ দিতে হবে’, ‘জনতার মেয়র ইশরাক ভাই, অন্য কোনো মেয়র নাই’ ইত্যাদি।
বিক্ষোভকারীরা জানান, ইশরাক হোসেনকে শপথ না পড়ানো পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। শপথে টালবাহানা হলে তারা আরও বৃহত্তর কর্মসূচির দিকে যাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন।
গতকালও (১৭ মে) বেলা ১১টার দিকে ইশরাক হোসেনের সমর্থক ও অনুসারীরা নগর ভবনের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের দিকে যান। সচিবালয়ের দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে গেলেও চারদিকে পুলিশের ব্যারিকেডের কারণে ইশরাকের সমর্থকেরা সচিবালয়ের সামনে যেতে পারেননি। পরে তারা মিছিল নিয়ে আবারও নগর ভবনের সামনে এসে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
এদিকে, মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণের দাবিতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন ইশরাক হোসেন।
গতকাল শনিবার (১৭ মে) তিনি এ আবেদন দাখিল করেন। আবেদনের সঙ্গে তিনি নির্বাচন-পরবর্তী ট্রাইব্যুনালের রায় এবং বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রকাশিত গেজেট সংযুক্ত করেন।
শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ইশরাক হোসেন অভিযোগ করেন, নির্বাচনের ৩০ দিনের মধ্যে মামলা করা হলেও আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে তা বন্ধ করার চেষ্টা হয়েছিল।
তিনি বলেন, তাপস প্রভাব খাটিয়ে মামলা থামাতে চেয়েছিলেন। আদালত তখন আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তবে আমরা সব আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে রায় পেয়েছি। এখন যারা এই রায় নিয়ে কথা বলছেন, তারা আদালত অবমাননা করছেন।
তিনি আরও বলেন, গেজেট প্রকাশের পর ২০ দিন কেটে গেলেও তাকে শপথ করানো হয়নি। অথচ বিএনপির পক্ষ থেকে শপথ গ্রহণের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকার দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস বিএনপির ইশরাক হোসেনকে প্রায় পৌনে দুই লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। তবে চলতি বছরের ২৭ মার্চ একটি ট্রাইব্যুনালের রায়ে ওই ফলাফল বাতিল করে ইশরাককে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ২২ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন রায়ের কপি পেয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে গেজেট প্রকাশের পরামর্শ চায়। এরপর থেকেই শপথ গ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।