বুধবার । ডিসেম্বর ১৭, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক রাজনীতি ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ৯:৪৮ অপরাহ্ন
শেয়ার

বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক এগিয়ে নিতে একাত্তরের ইস্যু সমাধান করা উচিত: এনসিপি


NCP-Pakistan-delegate
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের অতীতের বৈরী সম্পর্ক পেছনে ফেলে দুই দেশের মধ্যে নতুন আস্থা ও সহযোগিতার ভিত্তি গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির দাবি, সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য পাকিস্তানকে অবশ্যই একাত্তরের অমীমাংসিত ইস্যুগুলোতে সমাধান করার ব্যাপারে সৎভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে।

শনিবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশনে সফররত পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে বৈঠক করে এনসিপির সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। বৈঠক শেষে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

আখতার হোসেন বলেন, “পাকিস্তান নিয়ে বাংলাদেশের জনগণের যে ধারণা, তা আমরা তাদের সামনে তুলে ধরেছি। এনসিপি মনে করে অতীতের শত্রুভাবাপন্ন সম্পর্ক থেকে উন্নতির সুযোগ রয়েছে। তবে জনগণের সংবেদনশীল পারসেপশনকে গুরুত্ব দিতে হবে। সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হলে অবশ্যই ৭১-ইস্যু ডিল করতে হবে, আমরা সেটাই তাদের কাছে উত্থাপন করেছি।”

৭১-এর অমীমাংসিত তিন ইস্যু—গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়া, আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন ও অবিভাজিত সম্পদের ন্যায্য হিস্যা—সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায়। এ বিষয়ে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে কোনো সুনির্দিষ্ট বক্তব্য এসেছে কি না জানতে চাইলে আখতার হোসেন বলেন, বিষয়টি পাকিস্তান জানাবে।

দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, ৭১-এর বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা উচিত। তারা বলেছে, তারা এটাতে প্রস্তুত।”

প্রসঙ্গত, গত এপ্রিলে ঢাকা–ইসলামাবাদ পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকেও বাংলাদেশ সরকার এই ইস্যু উত্থাপন করেছিল। আগামীকাল (রোববার) দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকেও বিষয়টি এজেন্ডায় থাকবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

আখতার হোসেন জানান, আলোচনায় দুই দেশের শিক্ষা, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, প্রতিরক্ষা খাতে সম্পর্ক উন্নয়নের সুযোগ নিয়ে কথা হয়েছে। তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক হবে ভ্রাতৃত্বের। সেখানে কোনো বড় ভাইসুলভ আচরণ, আধিপত্যবাদী মানসিকতা বা আগ্রাসন থাকবে না, এই বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, এখানে পাকিস্তানের একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র খোলা যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম, প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা, নদী ও ওষুধশিল্প নিয়েও আলাপ হয়েছে। পাশাপাশি ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ এবং ’২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পরিবর্তিত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিও আলোচনায় এসেছে।

সার্ক নিয়ে আলোচনার প্রসঙ্গ টেনে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ভারতের কারণে সার্ক নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে। দক্ষিণ এশিয়ায় কীভাবে সার্ককে আরও সক্রিয় করা যায়, সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। পাকিস্তানও পরমাণু শক্তিধর দেশ, দক্ষিণ এশিয়ায় তাদেরও যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে।