বৃহস্পতিবার । ডিসেম্বর ১৮, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক রাজনীতি ১০ অক্টোবর ২০২৫, ৪:২৮ অপরাহ্ন
শেয়ার

‘ধানের শীষ নিয়ে টানাটানি কেন’- মির্জা ফখরুলের প্রশ্ন


Mirza Fokhrul

বিএনপির নির্বাচনী প্রতীক ধানের শীষকে ঘিরে বিতর্কের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‌‘আমরা তো কারও প্রতীকে বাধা দিইনি, তাহলে বিএনপির ধানের শীষ নিয়ে এত টানাটানি কেন?’

শুক্রবার (১০ অক্টোবর) রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ১৯৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী গণঅভ্যুত্থানের শহীদ নাজির উদ্দিন জেহাদের ৩৫তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে শহীদ জেহাদ স্মৃতি সংসদ।

সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নির্বাচনে শাপলা প্রতীক দাবি করলেও নির্বাচন কমিশন (ইসি) তাতে সম্মতি দেয়নি। বৃহস্পতিবার দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী ইসিতে গিয়ে বলেন, ‘আমাদের হয় শাপলা প্রতীক দিতে হবে, নয়তো ধান ও সোনালি আঁশ প্রতীক বাদ দিতে হবে।’ এই অবস্থানকে ঘিরেই রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হয়।

এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কিছু দল ও ব্যক্তি এখন হুমকি দিচ্ছে, বলছে নির্দিষ্ট প্রতীক না দিলে তারা নির্বাচনে যাবে না। অথচ আমরা কখনও বলিনি, কাউকে প্রতীক দেওয়া যাবে না। তাহলে বিএনপির প্রতীক নিয়েই এত সমস্যা কেন?’

ধানের শীষকে ‘অপ্রতিরোধ্য’ প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গ্রামেগঞ্জে যেখানে যাবেন, মানুষ ধানের শীষের পক্ষে স্লোগান দেয়। এ কারণেই ওরা ধানের শীষকে ভয় পায়—কারণ, এই প্রতীকের বিজয় মানেই ষড়যন্ত্রকারীদের পরাজয়।’

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘দানবের মতো ক্ষমতা কুক্ষিগত করা শেখ হাসিনা শেষ পর্যন্ত দিল্লিতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। আমরা ১৫ বছরের লড়াই, সংগ্রাম আর ত্যাগের মধ্য দিয়ে সেই ভিত্তি তৈরি করেছি।’

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ধারাবাহিক আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দুই–একদিনের আন্দোলনে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয় না। এজন্য ত্যাগ, পরিশ্রম এবং জনগণের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততা দরকার। বিএনপি সেই পথেই হাঁটছে।’

প্রশাসনকে একদলীয় নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার অপচেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। “আমলাতন্ত্রকে একটি দলের পকেটে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে—এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। নির্বাচনের সময় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থাকতে হবে,” বলেন মির্জা ফখরুল।

স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান। তিনি বলেন, “জেহাদের রক্তই স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নতুন প্রেরণা জুগিয়েছিল। তাঁর আত্মত্যাগের মাধ্যমেই স্বৈরাচারের পতন ঘটে।”

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন। সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান রিপনসহ অন্যরা।